সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদের সই করা এক বিবৃতিতে রোববার এ কথা বলা হয়।

সারাদেশে খুন, ধর্ষণ, সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক তৎপরতা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, নারীর চলাফেরা, খেলা ইত্যাদির ওপর আক্রমণ হচ্ছে। অস্বীকারের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে দায়িত্বশীল ও সক্রিয় ভূমিকা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি।

কয়েকজন লেখক–শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে তা প্রচার করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আবরার হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধীদের জেল থেকে পালানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। কক্সবাজারের সমিতি পাড়ায় নিরস্ত্র জনগণের ওপর বিমানবাহিনীর গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এ সব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার জবাবদিহি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আনু মুহাম্মদ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার প্রতিবাদ করায় ৯ নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং তাঁদের প্রতি প্রক্টরের ঘৃণ্য আচরণ কার্যত যৌন নিপীড়নের পক্ষে প্রশাসনের অবস্থান নির্দেশ করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে রাখায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। তারা দ্রুত প্রক্টর পরিবর্তন এবং নামকরণ ও ছাত্রী বহিষ্কারের এসব অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে। 

এ ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভবন থেকে গুণিজনদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সত্যেন বসু, জগদীশ চন্দ্র বসু, জীবনানন্দ দাশ, লালন সাঁই, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, জি সি দেব, ডা.

আলীম চৌধুরী, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখ ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানোর জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি কিংবা যৌথ বাহিনীর অভিযান জনগণের নিরাপত্তার বদলে হয়রানি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বৃদ্ধি করেছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: