ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডা: পশ্চিমাদের জেগে ওঠার বার্তা
Published: 3rd, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে বসে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেছেন। এটা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের হতবাক করেছে। এই ঘটনা ওয়াশিংটনের বিশেষজ্ঞদের ‘প্যাক্স আমেরিকানা’ নিয়ে শোকগাথা লেখার দরজা খুলে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পশ্চিম গোলার্ধে বিরাজমান তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ সময় আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিভাষায় ‘প্যাক্স আমেরিকানা’ নামে পরিচিত।
ট্রাম্প-জেলেনস্কির গত শুক্রবারের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা নিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা স্পুতনিক আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং প্রতিরক্ষা নীতির দুজন অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছে। এই ঘটনার পর কী ঘটতে পারে, তা নিয়েও তাঁরা মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবারের কথার লড়াই নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তুরস্কের সাংবাদিক সেয়দা করন বলেন, ‘জেলেনস্কি এমন একটি খোলামেলা, আর্থিক দিক থেকে অবাধ, কিন্তু নিরাপত্তার নিশ্চয়তাহীন চুক্তি করতে নিঃশর্তভাবে ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন, যা তাঁর নিজের দেশে ভিন্ন কথা বলে জনপ্রিয় করা হয়েছিল। ট্রাম্প ও (যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি) ভ্যান্স প্রকাশ্যেই বলেছেন, জেলেনস্কি পরাস্ত হয়েছেন, তিনি তাঁর দেশের মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলছেন। তাঁরা স্পষ্ট করে বলেছেন, ইউক্রেনের প্রয়োজনীয় সেনাসদস্য নেই, তাঁদের শান্তিচুক্তিতে সম্মত হওয়া উচিত।’
ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উল্লেখ করে করন বলেন, ‘তাঁরা সোজাসাপটা বলেছেন, জেলেনস্কি পুরো বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে লক্ষণীয় বিষয় ছিল, ট্রাম্প পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে এমন এক সত্য উপস্থাপন করছেন, যা রাজনৈতিক পরিশুদ্ধতার আলোচনায় এখন সর্বজনস্বীকৃত।’
তুরস্কের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, জেলেনস্কি ‘এমন এক নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করতে চেয়েছিলেন, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট খারাপ ব্যবহার করেছেন। ট্রাম্প যে ইউক্রেনের (খনিজ) সম্পদের মালিকানা দাবি করেছেন, তা বিশ্বের কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন জেলেনস্কি একজন ভুক্তভোগী। অথচ গত এক বছর ধরে জেলেনস্কি নিজেই এই বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন। কিয়েভের জন্য নতুন সামরিক সহায়তা অনুমোদন নিয়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে সমস্যা হচ্ছিল, তখন জেলেনস্কিই সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের পাশে বসে ওয়াশিংটনের কাছে সম্পদ নিয়ে চুক্তির প্রস্তাব করেছিলেন। ওই সময় গ্রাহাম আপ্তবাক্য আওড়ে বলেছিলেন, “ইউক্রেনে যদি একজন ব্যক্তিও বেঁচে থাকে, আমরা তাঁর রক্ষায় লড়াই” চালিয়ে যাবে। পাশে বসে গ্রাহামের বক্তৃতা শুনছিলেন জেলেনস্কি।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির (বাঁয়ে) সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইউক্রেন নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আগে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে, ১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘খুকুমণির’ বিয়ে
রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!
এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।”
কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।”
তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা।
ঢাকা/শান্ত