করপোরেট করহার বাস্তবসম্মতভাবে কমানোর সুপারিশ করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। সংগঠনটি বলছে, এ দেশে কার্যকরী করহার অতি উচ্চ, যা ক্ষেত্রবিশেষে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয়ে যায়। গত কয়েক বছরে করপোরেট কর কমানো হলেও লেনদেনের শর্তের কারণে বড় ও মাঝারি কোম্পানির পক্ষে এই শর্ত পালন করাও কঠিন।

এদিকে একক ভ্যাট হারের প্রস্তাব করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানও তাদের দাবির সঙ্গে একমত।

আজ মঙ্গলবার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক্‌–বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের বড় দুই চেম্বারের নেতারা এসব দাবি জানান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর কার্যালয়ে আজ দুপুরের পর এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

মেট্রো চেম্বারের যত দাবি

এমসিসিআইয়ের পক্ষে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি কামরান টি রহমান। এমসিসিআই মোটাদাগে সাতটি প্রস্তাব করেছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কোম্পানির করহার যৌক্তিক করা; ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য পৃথক করহার; কর প্রশাসন ও নীতি আলাদা করা; কর ব্যবস্থাপনা অনলাইনভিত্তিক করা; রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র (পিএসআর) প্রদর্শনের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করা; সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে অনুমোদিত তহবিলের ওপর করহার যৌক্তিক করা।

প্রাক্‌-বাজেট আলোচনায় এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে রপ্তানি খাত। বাড়তি শুল্ক আরোপ হবে রপ্তানি খাতের ওপর। তাই দেশীয় শিল্প বিকাশে এনবিআরকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

এমসিসিআইয়ের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম এনবিআরের নিজস্ব উদ্যোগে উদ্ভাবনী উপায়ে অটোমেশন করার পরামর্শ দেন। প্রাক্‌–বাজেট আলোচনায় মেট্রো চেম্বারের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি সিমিন রহমান, আনিস এ খান, পরিচালক আদিব এইচ খান, উজমা চৌধুরী প্রমুখ।

ভ্যাটের একক হার

একক ভ্যাট হারের প্রস্তাব করেছে এফআইসিসিআই। এই সংগঠনটি ২০২৭ সালের মধ্যে একক ভ্যাট হার ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে। একই অনুষ্ঠানে এফআইসিসিআইয়ের পক্ষে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ স্নেহাশিস বড়ুয়া।

স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, যেসব খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, তা ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা যেতে পারে। আবার যেসব খাতের ভ্যাট ১০ শতাংশের নিচে, সেসব খাতের হার ১০ শতাংশ করা যেতে পারে। এতে কার্যকর ভ্যাটের ভার কমে যাবে। প্রতিষ্ঠানের হিসাবব্যবস্থারও উন্নতি হবে।

এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘সব ব্যবসায়ী একমত হলে আমরা একক ভ্যাট হার করে দিতে পারি। প্রয়োজনে একক ভ্যাট হার কমাব। একক ভ্যাট হার হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান হিসাব সংরক্ষণে জবাবদিহির মধ্যে আসবে।’

কর ব্যবস্থায় অটোমেশনের ওপর জোর দেন এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার। তিনি বলেন, এনবিআর চাইলে অটোমেশন করতে এফআইসিসিআইয়ের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা দেবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: একক ভ য ট হ র ব যবস থ স আইয় র ত ব কর রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত

ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।

আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।

সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত