শিবির ট্যাগ দিয়ে ছাত্র সংসদে পদ না দেওয়ার অভিযোগ
Published: 5th, March 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে ‘জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী গড়ে উঠা নতুন ছাত্র সংগঠনের বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কর্তৃক শিবির ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত না করার প্রতিবাদ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী মোস্তফা আহমদ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী।
লিখিত বক্তবে তিনি বলেন, “নতুন ছাত্র সংগঠনের সব প্রক্রিয়ায় আমি ছিলাম। কিন্তু দল গঠনের পূর্ব মুহূর্তে আমার নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ফ্যাসিবাদী আমলে ছাত্রলীগ যেমন শিবির ট্যাগ দিয়ে সবকিছু করত, তেমনি ছাত্র সংসদও আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে সব মিছিল-মিটিংয়ে আমি স্বপ্রণোদিতভাবে অংশগ্রহণ করেছি। দল গঠনের সব প্রক্রিয়াতেও আমি অংশগ্রহণ করেছি।”
তিনি আরো বলেন, “কমিটি গঠনের পর সেখানে আমার নাম দেখতে না পেয়ে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরকে ফোন করে আমাকে বাদ দেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলাম। উত্তরে তিনি বলেন, ‘যাদের ক্ষেত্রে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ এছাড়াও ঢাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক লিমন মাহমুদ হাসানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, দল গঠনের জন্য সার্চ কমিটির প্রধান ছিলেন সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের হামজা মাহবুব। শিবির ট্যাগিংয়ের বিষয়টি সেই ভালো বলতে পারবে।”
মোস্তফা আহমদ বলেন, “কাকে কীভাবে এ সংগঠনে নেওয়া হলো বা ভবিষ্যতে কীভাবে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তাদের নীতিমালাগুলো আমরা জানতে চাই। যাতে ভবিষ্যতে সবাই এসব ব্যাপারে পরিষ্কার থাকতে পারে।”
মোস্তফা আহমদ আরো বলেন, “আমাকে অন্যকোন ব্যাখ্যা দিলে সেটা স্বাভাবিকভাবে মানা যেত। কিন্তু সেখানে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি আমাকে জানায়, শিবির সংশ্লিষ্টতার জন্য আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা তো এক ধরনের ট্যাগিং। আমি ক্যাম্পাস জীবনে কখনো শিবিরের কোন কার্যক্রমে ছিলাম না। আমি জুলাই আন্দোলন করেছি ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। তাই নতুন ছাত্র সংগঠন এর কাছে আমার প্রশ্ন, আমাকে কেন শিবির অভিযুক্ত করে বাদ দেওয়া হলো? আমাকে এর প্রমাণ দেওয়া হোক।”
এ সময় তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন রাখেন। এগুলো হচ্ছে-
১.
২. নতুন ছাত্র সংগঠন কোন স্পিরিট কে ধারণ করে গঠিত হয়েছে?
৩. যাকে-তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে ডিহিউমিনাইজ করা, মেরে ফেলা কিংবা জেলে দেওয়ার যে ভয়ংকর নিপীড়ন এতদিন কুখ্যাত আওয়ামী-ছাত্রলীগ করে এসেছে, নতুন করে গড়ে উঠা ছাত্র সংগঠনও কি এমন পলিসিই গ্রহণ করেছে?
৪. আমাকে যেহেতু শিবির ট্যাগিং করে বাদ দেওয়া হয়েছে, আমি কখন, কোন কালে শিবির করেছি সেটার প্রমাণ চাই। না হলে তাদের এ চরম মিথ্যাচার ও সম্মানহানির বিচার চাই।
৫. কেউ যদি শিবির হয়েও থাকে এবং তারা জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা পালন করে থাকে, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটেকে ধারণ করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে যুক্ত হতে চায়, তাকে নেওয়া হবে কিনা? নাকি কুখ্যাত ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী এবং তাদের আস্থাভাজন, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নেওয়া গেলেও শিবির সংশ্লিষ্টতার আলাপ আসলে কোনোরূপ বাচবিচার না করেই কোন শিক্ষার্থীকে বাদ দেবে, সে রকম কোনো পলিসি তারা গ্রহণ করেছে কিনা?
অভিযোগের বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “আমরা কমিটি দেওয়ার আগে সার্চ কমিটি গঠন করেছিলাম। সার্চ কমিটি তার অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে তাকে শিবির সন্দেহ করে। যার কারণে তাকে কমিটিতে রাখা হয়নি।”
জুলাই আন্দোলনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকার পরও কেন শিবির ট্যাগ দেয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। এখানে আমরা কাকে রাখবো না রাখবো, সেটা আমাদের বিষয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে সব ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিত্ব ছিল। ফলে সেখানে সব দলের লোককে রাখা হয়েছে। কিন্তু এ সংগঠন স্বতন্ত্র হওয়ায় আমারা আমাদের মতো দেখে দেখে কমিটি দিয়েছি।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস দেওয়ার সম্ভাবনা নেই: জ্বালানি উপদেষ্টা
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হবে না। কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম।
শুক্রবার সকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দুটি গ্যাসকূপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সিলেটের যেসব এলাকা থেকে গ্যাস উত্তোলন হয় সেসব এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হবে কি? -এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, শিল্প কারখানা যেখানে গ্যাস পাচ্ছে না সেখানে বাসা বাড়িতে গ্যাস দেওয়া অপচয়। নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হবে না। কেয়ামত পর্যন্ত এই সুযোগ বন্ধ রাখা উচিত। তবে যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন করা হয়, সেসব এলাকায় স্বল্পমূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহ করবে সরকার।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন কমছে। পাশাপাশি এলএনজি আমদানি বেড়েছে। এক্ষেত্রে গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর চেষ্টা চলছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, কৈলাশটিলা-৭ ও সিলেট-১০ গ্যাস কূপ থেকে থেকে প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে গোলাপগঞ্জে কৈলাসটিলা গ্যাসফিল্ড পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি উপজেলার পৌর এলাকার কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপ এলাকা, বাপেক্সের রিগ বিজয়-১২ ও কৈলাশটিলা ১ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভারের নিমিত্ত প্রস্তুতকৃত রিগপ্যাড পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি একই উপজেলাধীন কৈলাশটিলা এমএসটি প্লান্ট পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের (অপারেশন বিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মো. খালিদ আহমেদ, বাপেক্স/এসজিএফএলের প্রকৌশলী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহেব আহমদ, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেহসানুল ইসলাম, সেক্রেটারি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনির হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ডের ডিজিএম ফারুক আহমদ, কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ড এমএসটি প্লান্টের ডিজিএম জাফর রায়হানসহ সংশ্লিষ্ট কূপের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।