জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৫ মার্চ) বিকেলে ‘জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী গড়ে উঠা নতুন ছাত্র সংগঠনের বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কর্তৃক শিবির ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত না করার প্রতিবাদ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। 

ভুক্তভোগী মোস্তফা আহমদ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী।

লিখিত বক্তবে তিনি বলেন, “নতুন ছাত্র সংগঠনের সব প্রক্রিয়ায় আমি ছিলাম। কিন্তু দল গঠনের পূর্ব মুহূর্তে আমার নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ফ্যাসিবাদী আমলে ছাত্রলীগ যেমন শিবির ট্যাগ দিয়ে সবকিছু করত, তেমনি ছাত্র সংসদও আমাকে শিবির ট্যাগ দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে সব মিছিল-মিটিংয়ে আমি স্বপ্রণোদিতভাবে অংশগ্রহণ করেছি। দল গঠনের সব প্রক্রিয়াতেও আমি অংশগ্রহণ করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “কমিটি গঠনের পর সেখানে আমার নাম দেখতে না পেয়ে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরকে ফোন করে আমাকে বাদ দেওয়ার কারণ জানতে চেয়েছিলাম। উত্তরে তিনি বলেন, ‘যাদের ক্ষেত্রে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ এছাড়াও ঢাবি শাখার সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক লিমন মাহমুদ হাসানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, দল গঠনের জন্য সার্চ কমিটির প্রধান ছিলেন সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের হামজা মাহবুব। শিবির ট্যাগিংয়ের বিষয়টি সেই ভালো বলতে পারবে।”

মোস্তফা আহমদ বলেন, “কাকে কীভাবে এ সংগঠনে নেওয়া হলো বা ভবিষ্যতে কীভাবে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তাদের নীতিমালাগুলো আমরা জানতে চাই। যাতে ভবিষ্যতে সবাই এসব ব্যাপারে পরিষ্কার থাকতে পারে।”

মোস্তফা আহমদ আরো বলেন, “আমাকে অন্যকোন ব্যাখ্যা দিলে সেটা স্বাভাবিকভাবে মানা যেত। কিন্তু সেখানে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি আমাকে জানায়, শিবির সংশ্লিষ্টতার জন্য আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা তো এক ধরনের ট্যাগিং। আমি ক্যাম্পাস জীবনে কখনো শিবিরের কোন কার্যক্রমে ছিলাম না। আমি জুলাই আন্দোলন করেছি ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। তাই নতুন ছাত্র সংগঠন এর কাছে আমার প্রশ্ন, আমাকে কেন শিবির অভিযুক্ত করে বাদ দেওয়া হলো? আমাকে এর প্রমাণ দেওয়া হোক।”

এ সময় তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন রাখেন। এগুলো হচ্ছে- 

১.

তাহলে আমরা কি আবার সেই কালচারে ফিরে যাচ্ছি, যেখানে কোন শিক্ষার্থীকে তার পরিচয়ের আগে রাজনৈতিক ট্যাগিংয়ের মধ্য দিয়ে বা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে রাজনীতিতে আসতে বাধা প্রদান এবং কোনঠাসা করা হচ্ছে? 

২. নতুন ছাত্র সংগঠন কোন স্পিরিট কে ধারণ করে গঠিত হয়েছে?

৩. যাকে-তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে ডিহিউমিনাইজ করা, মেরে ফেলা কিংবা জেলে দেওয়ার যে ভয়ংকর নিপীড়ন এতদিন কুখ্যাত আওয়ামী-ছাত্রলীগ করে এসেছে, নতুন করে গড়ে উঠা ছাত্র সংগঠনও কি এমন পলিসিই গ্রহণ করেছে?

৪. আমাকে যেহেতু শিবির ট্যাগিং করে বাদ দেওয়া হয়েছে, আমি কখন, কোন কালে শিবির করেছি সেটার প্রমাণ চাই। না হলে তাদের এ চরম মিথ্যাচার ও সম্মানহানির বিচার চাই।

৫. কেউ যদি শিবির হয়েও থাকে এবং তারা জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা পালন করে থাকে, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটেকে ধারণ করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে যুক্ত হতে চায়, তাকে নেওয়া হবে কিনা? নাকি কুখ্যাত ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী এবং তাদের আস্থাভাজন, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নেওয়া গেলেও শিবির সংশ্লিষ্টতার আলাপ আসলে কোনোরূপ বাচবিচার না করেই কোন শিক্ষার্থীকে বাদ দেবে, সে রকম কোনো পলিসি তারা গ্রহণ করেছে কিনা?

অভিযোগের বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “আমরা কমিটি দেওয়ার আগে সার্চ কমিটি গঠন করেছিলাম। সার্চ কমিটি তার অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে তাকে শিবির সন্দেহ করে। যার কারণে তাকে কমিটিতে রাখা হয়নি।”

জুলাই আন্দোলনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকার পরও কেন শিবির ট্যাগ দেয়া হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। এখানে আমরা কাকে রাখবো না রাখবো, সেটা আমাদের বিষয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে সব ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিত্ব ছিল। ফলে সেখানে সব দলের লোককে রাখা হয়েছে। কিন্তু এ সংগঠন স্বতন্ত্র হওয়ায় আমারা আমাদের মতো দেখে দেখে কমিটি দিয়েছি।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে আসতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট, কী ব্যবসা করে তারা

চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান।

ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। আজ (সোমবার) তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশে বিগ টেক জায়ান্ট আসার যাত্রাটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরেই শুরু হলো। এভাবে আসবে আরও অনেকেই।

চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একই পোস্টে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ প্রসঙ্গে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, ‘আজ আমরা চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসেছি। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।’

অসাইরিস গ্রুপও বাংলাদেশে আসছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার হবে বাংলাদেশি ডাটা ও ক্লাউড কোম্পানি যাত্রার হাত ধরে। এখানে হচ্ছে বিগ জায়ান্টদের জন্য বিশ্বমানের সিকিউরড ক্লাউড সে-আপ, যেখানে আসতে পারে মেটা, গুগলের পেলোড। এমন অভাবনীয় সব উপহার বাংলাদেশকে দিতে চলছেন অধ্যাপক ইউনূস।

টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় চীনের শেনজেনে অবস্থিত।

আরও পড়ুনবাংলাদেশের গেমশিল্পের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী চীনের টেনসেন্ট২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪,৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
  • ।।  বাংলাদেশি কবিতা বিরল সম্মাননা ।।
  • সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক
  • সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক 
  • জবির বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে ৮ বছর ধরে একই চেয়ারম্যান
  • ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের সাক্ষাৎ
  • বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক
  • বাংলাদেশে আসতে চায় চীনা ইন্টারনেট জায়ান্ট টেনসেন্ট
  • বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট
  • বাংলাদেশে আসতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট, কী ব্যবসা করে তারা