ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভূপতিপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার বিটুমিন-পাথর মেশানো কারখানা বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। 
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ঝিনাইদহ-মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তারা ড্রাম ফেলে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। 
এ সময় মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার দু-ধারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন যানবাহনের যাত্রীরা। তবে দুপুরে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কারখানাটি বন্ধ করা হলে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেন।
জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের ভূপতিপুর এলাকায় ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাশে সদর পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাসুমের ঠিকাদারি কাজের জন্য স্পল্ট প্লান্ট নামের বিটুমিন-পাথর মেশানোর কারখানা রয়েছে। ১০ বছরের বেশি সময় কারখানাটিতে বিটুমিন-পাথর মেশানোর সময় প্রচুর ধুলা নির্গত হয়। এতে আশপাশের মানুষের ধুলায় বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। 
মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়, বাড়িতে খাবার রাখা যায় না, ধুলায় শ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। বারবার এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানানো হলেও কাজে আসেনি। ফলে এলাকার নারী-পুরুষ মিলে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা স্থায়ীভাবে কারখানাটি বন্ধের দাবি জানান। 
ঘটনাস্থলে এসে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসসহ পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কারখানাটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা খোলা হবে না বলে জানান। এতে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভূপতিপুর এলাকার গৃহবধূ জাহানারা বেগম বলেন, পাথরের ধুলায় বাড়িতে থাকতে পারেন না। খাবার, কাপড় সব ধুলায় ভরে যায়। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। বহুবার কারখানা মালিককে জানালেও কাজ হয়নি। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কারখানার কাজ চালিয়ে গেছেন।
অপর এলাকাবাসী মনিরুল ইসলাম বলেন, এ কারখানার ধুলার যন্ত্রণায় রাস্তা বা বাড়ি কোথাও টেকা যায় না। মানুষের ক্ষতি করার জন্য দায়ী এই কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন। কারণ প্রশাসনকে বহুবার জানানো হলেও তারা কোনো কাজ করেনি। 
এলাকাবাসীর দাবির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হলো জানতে চাওয়া হলে ঘটনাস্থলে থাকা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 
তবে সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও হাইওয়ে থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, কারখানাটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে 
দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে। 
এলাকাবাসীর দাবির বিষয়ে জানতে কারখানা মালিক সদর পৌর আওয়ামী লীগের 
সহসভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মাসুমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে কারখানার ম্যানেজার রিজভী শেখ বলেন, প্রশাসনের কথামতো তারা কারখানাটি আপাতত বন্ধ রেখেছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদর উপজ ল এল ক ব স ঝ ন ইদহ র এল ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, আর কোনো শাসক যাতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পথ অনুসরণ করে নাগরিকদের নিপীড়নসহ দেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে না পারে, সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংস্কার প্রশ্নে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের চেয়ে দেশকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংস্কার প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে আজ গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বৈঠকের শুরুতে নুরুল হক বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বান থাকবে, যে সংস্কারগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে, সেগুলো যেকোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনেই বাস্তবায়ন করতে হবে।

নুরুল হক বলেন, বিগত ১৬ বছরে দেশের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত হয়ছিল। গণ অধিকার পরিষদ নবীন রাজনৈতিক দল হলেও ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার।

বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন অধ্যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে।

সম্মিলিতভাবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, তাঁদের লক্ষ্য দ্রুততম সময়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা।

সংস্কার প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, শুধু আলোচনার মধ্য দিয়েই সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না। সবার একত্রিত থাকার তাগিদ সব সময় জারি রাখতে হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।

আলোচনায় গণ অধিকার পরিষদের ১০ সদস্যদের প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে। নুরুল হক ছাড়া প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র ফারুক হাসান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য খালিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান রিজু, সাকিব হোসেন, দপ্তর সম্পাদক শাকিলুজ্জামান, সহমানবাধিকার–বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা দিশা, যুব উইংয়ের সদস্য মুমতাজুল ইসলাম, গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বেচ্ছাশ্রমে চট্টগ্রামে খাল খনন করছে বিএনপি
  • গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের ওপর নির্ভর করবে সংলাপের সাফল্য: আলী রীয়াজ 
  • জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
  • সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক