সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু
Published: 8th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. হান্নান (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এদিকে চিকিৎসাধীন শিশু-নারীসহ সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
হান্নান শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার গজনাপুর গ্রামের মো.
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হান্নানের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। গতকাল রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজন হলেন সোহাগ ও তাঁর স্ত্রী রূপালী আক্তার, তাঁদের দেড় বছরের মেয়ে সুমাইয়া, নিহত হান্নানের স্ত্রী লাকী বেগম (৩০) ও ছেলে সাব্বির (১২)। সোহাগ ও রূপালী পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পানিয়ালপুকুল গ্রামে তাঁদের বাড়ি।
সোহাগ আলীর বড় ভাই রুবেল আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দগ্ধ আটজনের মধ্যে হান্নান মারা গেছেন। তাঁর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে আছে। সোহাগের মেয়ে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) আছে। তাঁর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর অবস্থা ভালো না।
রুবেল আলী বলেন, বাড়িওয়ালা তাঁদের চিকিৎসার খরচ বহন করেছিলেন। কিন্তু গতকাল থেকে তিনি ফোন ধরছেন না। যে মারা গেছে, সে তো চলে গেছে; যারা জীবিত আছে, তাদের তো বাঁচাতে হবে।
গত সোমবার গভীর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকেশ্বরী শান্তিবাগ এলাকায় ইব্রাহিম খলিলের মালিকানাধীন বাড়িতে গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ওই বাড়ির দুটি রুমে আগুন ধরে যায়। ভাড়াটিয়া দুটি পরিবারের শিশু-নারীসহ আটজন দগ্ধ হন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।
কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।
পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।
মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।
উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি