মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। পাশাপাশি অবিলম্বে ধর্ষণবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানায় তারা।

‘দেশব্যাপী সংঘটিত ধর্ষণ, নারীবিদ্বেষী মবের আগ্রাসন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে’ আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রা বের করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। পদযাত্রার পর সমাবেশ হয়। সমাবেশে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই দুই দফা দাবি তুলে ধরেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের এ পদযাত্রায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। এতে ‘সারা বংলায় খবর দে, ধর্ষকের কবর দে’, ‘ধর্ষকের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ এমন বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পদযাত্রাটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ হয়।

আইন উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আহ্বান

সমাবেশে সমাপনী বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। জুলাই অভ্যুত্থানে নারী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গঠিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই সরকারের কাছে প্রত্যাশিত সবকিছু পাওয়া যাচ্ছে না। দেশকে স্থিতিশীল করতে অতি দ্রুত ১৫ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের সন্ত্রাসী-খুনিদের পাশাপাশি ধর্ষকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানান তিনি। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে থাকা সেনাবাহিনী কী কাজ করছে, সেই প্রশ্নও রাখেন বাকের।

এ সময় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘যদি আপনি জুলাইয়ের খুনি ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জাতির সামনে না দেখাতে পারেন, আপনি স্যার দয়া করে পদত্যাগ করেন।’

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, জুলাইয়ে যেসব নারী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অসীম সাহসী ভূমিকা রেখেছেন, আজ নারী দিবসে তাঁদের সেলিব্রেট (উদ্‌যাপন) করা ও বাহবা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ আট বছরের ছোট্ট শিশুর ধর্ষকদের বিচার চাইতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ আমলে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, তাতে অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। এই মানসিকতা আরও ধর্ষক তৈরি করছে।

জাহিদ আহসান আরও বলেন, এই সরকার যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করতে না পারে, ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে মানুষ আরও একবার রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। তিনি ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী ও রাফিয়া রেহনুমা হৃদি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন পণ্যের শুল্কে ছাড় দিচ্ছে চীন, গোপনে তালিকা করছে

বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করছে চীন। মার্কিন পণ্যে যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে তারা, সেই শুল্ক থেকে কিছু কিছু মার্কিন পণ্যে ছাড় দিচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে তার একটি তালিকাও করা হয়েছে। এমনকি কোম্পানিগুলোকে সে বিষয়ে তারা অবগতও করেছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত দুটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

ইতিমধ্যে চীন কিছু পণ্যে শুল্কছাড় দিয়েছে, যেমন নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ, মাইক্রোচিপস, বিমানের ইঞ্জিন। সেই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর কাছে তারা জানতে চেয়েছে, কোন কোন পণ্যে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। যদিও বিষয়টি নিয়ে আগে সংবাদ প্রতিবেদন করা হয়নি।

অনেকটা সন্তর্পণে এ কাজ করছে চীন। এতে সুবিধা হলো, তারা একদিকে জনসমক্ষে যুদ্ধংদেহী অবস্থান বজায় রাখছে, অন্যদিকে সবার অজান্তে ছাড় দিচ্ছে।

তবে এ তালিকায় ঠিক কী পরিমাণ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বা এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি। সেই সূত্র দুটিও নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। কারণ, এ তথ্য এখনো সরকারিভাবে জানানো হয়নি।

চীন সরকার গোপনে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়ে দিচ্ছে, কোন কোন পণ্যে এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। মার্কিন এক ওষুধ কোম্পানির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই কোম্পানি চীনের বাজারে ওষুধ বিক্রি করে।

চীনের সাংহাই প্রদেশের সরকার সেই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে গত সোমবার। সূত্র জানিয়েছে, সেদিনই তারা ছাড়ের তালিকা সম্পর্কে তাদের অবগত করে। ওষুধ তৈরিতে তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। সে জন্য তারা আগে থেকেই ছাড়ের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল।

সেই সূত্র আরও জানায়, ওষুধ তৈরিতে এখনো তাদের মার্কিন প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, আরও বিভিন্ন কোম্পানিকে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আমদানি করা পণ্যে শুল্কছাড়ের প্রয়োজন আছে কি না।

তবে এই ছাড়ের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইথেনে ছাড় দিয়েছে। ইথেনের একমাত্র সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে ইথেন প্রক্রিয়াজতাকারী কোম্পানিগুলো ছাড় চেয়েছে।

মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হবে। তবে এই চুক্তিতে ন্যায্যতা থাকবে।

আরও দুটি সূত্র জানিয়েছে, এই বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব পরিমাপ করতে চীন বিভিন্ন কোম্পানির ওপর জরিপ করছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষ এক বিদেশি ব্যবসায়িক লবিকে বলেছে, শুল্কের কারণে বড় ধরনের কী সমস্যা হতে পারে, তা যেন সরকারকে জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্কিন পণ্যের শুল্কে ছাড় দিচ্ছে চীন, গোপনে তালিকা করছে