Samakal:
2025-09-17@22:53:35 GMT

গোদের উপর বিষফোড়া

Published: 8th, March 2025 GMT

গোদের উপর বিষফোড়া

কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয়গ্রহণকারী কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা খাদ্য সংকটের তীব্র ঝুঁকিতে পড়িতে যাইতেছে বলিয়া শুক্রবার সমকালের এক প্রতিবেদনে যেই আশঙ্কা প্রকাশিত হইয়াছে উহা সংগত। কেবল আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য নহে, খোদ বাংলাদেশের জন্যও উহা উদ্বেগজনক হইতে বাধ্য। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়কে এক পত্রের মাধ্যমে জানাইয়াছে, রোহিঙ্গাদের জন্য সংস্থাটির খাদ্যসহায়তা এপ্রিল হইতে অর্ধেকেরও নিম্নে নামিয়া আসিবে। ইহার ফল হিসাবে রোহিঙ্গাপিছু ডব্লিউএফপির মাসিক বরাদ্দ এপ্রিল হইতে সাড়ে ১২ ডলারের পরিবর্তে ৬ ডলার হইবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার যথার্থই বলিয়াছেন, ডব্লিউএফপির বাজেট কাটছাঁটের ফলস্বরূপ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হইতে পারে। কারণ দিনে ২৪ টাকায় একজন মানুষের পক্ষে সুষম খাদ্য গ্রহণ দূরের কথা, ক্ষুধা নিবৃত্তিও সম্ভবপর নহে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংকটের পাশাপাশি শিবিরসমূহে এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলার অবনতির শঙ্কা রহিয়াছে।

আমরা জানি, বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লক্ষের অধিক নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রহিয়াছেন। অনিবন্ধিত রহিয়াছেন আরও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক। এখনও নানা কৌশলে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করিতেছেন। রোহিঙ্গাশিবিরে নতুন জন্মগ্রহণকারী শিশুদের যোগ করিলে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লক্ষ ছাড়াইয়া যাইবে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার হইতে অনেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়াইয়া পড়িয়াছেন বলিয়া জানা যায়। তাহাদের অনেকে পরিচয় গোপন করিয়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট অবধি জোগাড় করিতেছেন। অন্যদিকে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরসমূহ ঘিরিয়া প্রায়ই রক্তপাত ও প্রাণহানি ঘটিতেছে। মাদক কারবার, অস্ত্র চোরাচালান, অপহরণ ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ লইয়া বিরোধে জড়াইতেছে নানা গোষ্ঠী। দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরসমূহে ১১টি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়। ইহারা ডাকাতি, অপহরণ বাণিজ্যসহ নানাবিধ অপতৎপরতায় লিপ্ত, যাহার শিকার বাংলাদেশি নাগরিকও হইতেছেন। বৃহৎ শক্তিসমূহের ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করিবার ঝুঁকি সম্পর্কেও সকলেই অবহিত। এই সকল কিছু মিলাইয়া দিন যতই যাইতেছে, ততই ভারী হইতেছে রোহিঙ্গা বোঝা। ‘গোদের উপর বিষফোড়া’ হইয়া উঠিতেছে বাজেট সংকট। 

ইহা সত্য, রোহিঙ্গা বাবদ ব্যয়ের সংকুলান লইয়া বাংলাদেশ সেই ২০১৭ সাল হইতেই হিমশিম খাইতেছে, যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন হইতে বাঁচিতে বাংলাদেশে এক ধাক্কায় কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা প্রবেশ করেন। অদ্যাবধি কোনো বৎসরই আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুসারে সাহায্য মিলে নাই। এতদসত্ত্বেও ডব্লিউএফপির সহায়তা দিয়া কায়ক্লেশে হইলেও অন্তত রোহিঙ্গাদের খাদ্যচাহিদা পূরণ করা হইত, এপ্রিল হইতে যাহা সম্ভব হইবে না। আমরা জানি, ডব্লিউএফপির যেই বরাদ্দ, তাহার প্রায় ৮০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র দিয়া থাকে। সম্প্রতি দেশটিতে সরকার পরিবর্তনের সহিত আন্তর্জাতিক সহায়তা নীতিও পরিবর্তন হইবার কারণে ডব্লিউএফপিকে উহার বরাদ্দ কাটছাঁট করিতে হইতেছে। কিন্তু ক্ষুধা তো আর এই সকল হিসাবনিকাশ শুনিবে না। তাই বিকল্প ব্যবস্থার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে হইবে।
আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথমত রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করিবার কার্যক্রম জোরদার করিতে হইবে। পাশাপাশি যৌথ সাড়াদান কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যেই সকল সদস্য কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সহায়তা দিতেছে, তাহাদের প্রতি সাহায্য বৃদ্ধির জন্য নূতন করিয়া আহ্বান রাখিতে হইবে। আগামী ১৩ মার্চ চার দিবসের সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ আসিতেছেন। তিনি উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাইবেন এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনিবেন বলিয়া আমরা জানি। রোহিঙ্গাদের খাদ্যের সংস্থানসহ অন্যান্য বিষয়ে বিরাজমান সমস্যা সম্পর্কে তাহাকে বুঝাইতে পারিলেও কিছু সমাধান মিলিতে পারে বৈকি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য ল হইত

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ

ঘরে বসেই দক্ষতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। এই অনলাইন কোর্সগুলো edX প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীরা কোর্সগুলোতে অংশ নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের এই প্রোগ্রামে ৬০টির বেশি অনলাইন কোর্স রয়েছে, যা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারে নিজেকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে এসব কোর্স। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা Microsoft AI Skills Fest-এ অংশ নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সম্পর্কিত বিশেষায়িত কোর্সও করতে পারবেন।

মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হলো আজকের চাকরির বাজারে চাহিদাসম্পন্ন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তুলতে সহায়তা করা। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধামতো সময়ে শিখতে পারবেন। এখানে থাকছে ক্লাউড কম্পিউটিং, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং সাইবার সিকিউরিটিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ।

বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ

মাইক্রোসফটের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা এই কোর্সগুলো তৈরি ও পরিচালনা করেন। ফলে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব জীবনের জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। যাঁরা প্রযুক্তির জগতে নতুন, তাঁরা বিগিনার লেভেলের কোর্স দিয়ে শুরু করতে পারবেন। আর যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁদের জন্য রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের কোর্স। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের নতুন অ্যাপ্লিকেশন, ডিজিটাল সেবা এবং উদ্ভাবনী সমাধান ডিজাইন করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

কোর্স কাঠামো ও সার্টিফিকেট

মাইক্রোসফটের এই অনলাইন কোর্সগুলো ফ্রি অডিট ট্র্যাকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা যাবে। তবে যাঁরা শিখে একটি অফিশিয়াল ভেরিফায়েড সার্টিফিকেট পেতে চান, তাঁরা নামমাত্র ফি দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন, যা চাকরি বা ক্যারিয়ারে বাড়তি গুরুত্ব দেবে।

এটি একটি MOOC (Massive Open Online Course) উদ্যোগ, যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রি অনলাইন কোর্স ২০২৫-এর মতো বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

মাইক্রোসফটের কোর্স এখন করা যায় ঘরে বসেই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে চোখের নতুন ড্রপ
  • মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ