বাংলাদেশে নারী শ্রমিকেরা যুগ যুগ ধরে শোষণ, বঞ্চনা, অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর দোয়েল চত্বরে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে একট মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সমাবেশে যোগ দেয়।

নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের নারী শ্রমিকদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অবদান অপরিসীম। তবে দেশের নারীরা বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা যুগ যুগ ধরে নানা ধরনের শোষণ, বঞ্চনা, অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন।

বাংলাদেশের শ্রম আইন ও আইএলও সনদে সমঅধিকারের কথা উল্লেখ থাকলেও নারী শ্রমিকেরা প্রায়ই মজুরিবৈষম্যের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, পরিবার, কর্মক্ষেত্র কোনোটাই নারীর জন্য নিরাপদ নয়। বেশির ভাগ নারী শ্রমিক প্রসূতিকালীন সুবিধা ও সুরক্ষা পাচ্ছেন না। এ সময় অনেক নারী শ্রমিককে কর্মক্ষেত্র থেকে বিদায় নিতে হয়। পরে আর তাঁদের কাজে নেওয়া হয় না।

নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও তার বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা। তাঁরা বলেন, সমান মজুরি, নারীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত, নারী শ্রমিকদের ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুরক্ষা প্রদান এবং কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।

সমাবেশে জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা পারভীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন নারী শ্রমিক নেত্রী সায়েরা খাতুন, হুমায়রা বেগম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের  প্রচার সম্পাদক মোবারক হোসেন ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক কাজী মো.

রুহুল আমিন, শ্রমিকনেতা মুর্শিকুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, সেকান্দর হায়াত প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ