সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৭৪৫ জন নিহত
Published: 9th, March 2025 GMT
সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।
দেশটিতে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলে শুক্রবার এবং শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী এবং মিত্র গোষ্ঠীগুলো আলাউইতদের লক্ষ্য করে প্রায় ৩০টি অভিযানে ৭৪৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ফের উত্তাল সিরিয়া, নিহত ৩১১
আহমেদ আল শারাকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় এমন এলাকাগুলোতে আসাদের প্রতি অনুগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষে চলছে। আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
এসওএইচআর জানিয়েছে, এই সংঘর্ষে গত তিন দিনে সিরিয়ায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশটিতে গত ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদের পতনের পর এটিই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা।
নিহতদের এই সংখ্যায় কয়েক ডজন সরকারি সেনা এবং আসাদের অনুগত যোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত, যারা বৃহস্পতিবার থেকে উপকূলীয় লাতাকিয়া এবং তারতুস প্রদেশে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে।
এসওএইচআর-এর প্রতিবেদন অনুসারে, সহিংসতায় সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১২৫ জন সদস্য এবং আসাদপন্থি ১৪৮ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
এর আগে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেন।
তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আবার কেউ কেউ খুনি এবং অপরাধীদের রক্ষায় পালিয়ে যাওয়ার ও মৃত্যুর জন্য জোর দিচ্ছে। পছন্দটি স্পষ্ট; আপনার অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।
এ অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য এই অঞ্চলটি একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে আলাউইত সম্প্রদায়ের কর্মীরা বলছেন, আসাদের পতনের পর থেকে তাদের সম্প্রদায় সহিংসতা ও আক্রমণের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে, হোমস ও লাতাকিয়ার গ্রামীণ এলাকাগুলো এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
অপরদিকে আলাউইতের বিদ্রোহীদের অস্ত্র জমা ও আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রচারিত এক বক্তব্যে শারা বলেন, আপনারা সিরীয় নাগরিকদের ওপর আক্রমণ এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। আপনাদের অস্ত্রগুলো জমা দিন এবং দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই আত্মসমর্পণ করুন।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র দেশটির সানা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর ‘বিশ্বাসঘাতক হামলার’ ঘটনার পর, সরকার পুনরায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
আলাউইত সম্প্রদায়ের একজন কর্মী জানিয়েছেন, এই সহিংসতার ফলে আলাউইট সম্প্রদায় ‘ভয়ঙ্কর অবস্থায়’ পড়েছে, শত শত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
রয়টার্স সংবাদ সংস্থা অনুসারে, লাতাকিয়ার হামেইমিমে অবস্থিত একটি রাশিয়ান সামরিক ঘাঁটিতে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, কয়েক ডজন পরিবার প্রতিবেশী লেবাননে পালিয়ে গেছে।
সিরিয়ার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন বলেছেন, সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে ‘বেসামরিক হতাহতের অত্যন্ত উদ্বেগজনক প্রতিবেদন’ দেখে তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।
তিনি সকল পক্ষকে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন যা দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করতে পারে এবং ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক উত্তরণ’কে বিপন্ন করতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
কুমিল্লায় চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ বলেন, “গত দুইদিনে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার আরো একজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।”
তিনি বলেন, “আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কুমিল্লা নগরের, কেউ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সবার নমুনা কুমিল্লা নগরের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করা হয়েছিল।”
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে আরো ১ জনের করোনা শনাক্ত
কিট সংকটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
ডা. বশির আহমেদ বলেন, “আক্রান্তদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। দুইজন ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন কুমিল্লায় নতুন করে সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। ফলে অনেকটাই স্বস্তিতে ছিলেন নগরবাসী। হঠাৎ একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জনমনে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই মাস্ক পরছেন এবং সাবধানতা অবলম্বনের চেষ্টা করছেন। তবে, গণপরিবহন, বাজার কিংবা ওষুধের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন প্রবণতা দেখা যায়নি।
কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা আমেনা আক্তার বলেন, “আবার যেন সেই দিনগুলো ফিরে আসছে। দোকান-বাজারে মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছে। আমরা তো আরেক দফা লকডাউনের ভয়ে আছি।”
সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রচার অভিযান চালানো হবে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডাক্তার সানজিদুর রহমান বলেন , “করোনা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির ঘটনা অবহেলার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অবস্থা জটিল হতে পারে।”
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কুশ বড়ুয়া বলেন, “করোনার বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ