চাঁদপুরে গ্যাস লিকেজের আগুনে একই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ
Published: 9th, March 2025 GMT
চাঁদপুরে গ্যাস লিকেজের আগুনে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। আজ রোববার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে শহরের কোড়ালিয়া রোড এলাকায় রুস্তম ব্যাপারী বাড়ির ছয়তলা ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে।
অগ্নিদগ্ধ হন ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া চাঁদপুর লঞ্চঘাটের ফল ব্যবসায়ী আবদুর রহমান (৬৫), তাঁর স্ত্রী শানু বেগম (৫৫), তাঁদের বড় ছেলে ইমাম হোসেন (৪০), তাঁর স্ত্রী খাদিজা আক্তার (৩০), মেজ ছেলের স্ত্রী নববধূ দিবা আক্তার (২০) ও ছোট ছেলে মঈন হোসেন (২০)। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত আবদুর রহমান, শানু বেগম, খাদিজা আক্তার ও মঈন হোসেনকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজন ২৫০ শয্যা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবদুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই ভবনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। আজ ভোরে তাঁরা সাহ্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খাবার গরম করার জন্য তাঁরা চুলায় আগুন ধরাতে যান। তখন গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিনটি কক্ষে থাকা ছয়জন দগ্ধ হন। অন্য একটি কক্ষে থাকা তিনজনের কোনো ক্ষতি হয়নি। আশপাশের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং দগ্ধ ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন।
আজ ভোরে গিয়ে দেখা যায়, রান্নাঘরের জিনিসপত্র অনেকটা অক্ষত রয়েছে। কিন্তু এর দুই পাশের তিনটি কক্ষের অনেক আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। আবদুর রহমানের নাতনি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহা আক্তার বলেন, ‘আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। আগুন আগুন চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। আমি, আমার ছোট ভাই এবং আমার এক মামা ঘর থেকে বের হয়ে যাই। এ সময় আমার নানা–নানু, মামা–মামিসহ ছয়জন অগ্নিদগ্ধ হন। আশপাশের লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যান।’
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি দগ্ধ ইমাম হোসেন বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী রান্নাঘরের সামনে ডাইনিংরুমে ঘুমিয়ে ছিলাম কিন্তু কীভাবে ঘরে ভেতর আগুন লেগেছে আমরা কিছু বলতে পারব না।’ একই হাসপাতালে ভর্তি অগ্নিদগ্ধ দিবা আক্তারও বলেন, ‘কীভাবে আগুন লেগেছে আমিও কিছুই জানি না।’
পাশের ফ্ল্যাটের প্রত্যক্ষদর্শী খোরশেদ আলম ঢালি বলেন, ‘আমরা ভোর চারটায় সাহ্রি খেতে উঠি। এ সময় বিকট আওয়াজ হয়ে পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। এ সময় পাশের ঘরে আগুন আগুন চিৎকার শুনে দৌড়ে যাই। আমরা তখন পানি ও কাঁথা–কম্বল দিয়ে তাদের ঘরের আগুন নিয়ন্ত্রণ করে সবাইকে উদ্ধার করি।’
ভবনমালিকের ছেলে জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসেনি।’
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ ছয়জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আশঙ্কাজনক চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সবার শরীরের অনেকাংশ পুড়ে যায়। অন্য দুজন আশঙ্কামুক্ত; তাঁদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
সালিশে বেত্রাঘাত করায় সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতাসহ আহত ৬
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রাম্য সালিশে বেত্রাঘাত ও জরিমানা করার জেরে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতাসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। পরে মামলা হলে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে গ্রামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর জেরে বিয়ের দাবিতে যুবকের বাড়িতে অবস্থান নেন গৃহবধূ। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক এস এম জাকিরের নেতৃত্বে শুক্রবার রাতে সালিশ বৈঠক বসে।
বৈঠকে যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ৫০টি বেত্রাঘাত ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে যুবকের বড় ভাই প্রতিবাদ করায় সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রদল নেতা জাকিরসহ ছয়জন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে জাকিরসহ দু’জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত যুবকের বড় ভাই বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা জাকির ও তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে সুবিধা আদায় করছে।’
ছাত্রদল নেতা এস এম জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাকেসহ আমার স্বজনের ওপর হামলা করে আহত করা হয়েছে।’ ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এতে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।