যুক্তরাষ্ট্রে গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন মাইকেল গ্রগনার্ড। ভেবেছিলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তিনিই সেরা প্রার্থী।

কিন্তু তিন মাস যেতে না যেতেই গ্রগনার্ড বুঝে ফেলেছেন, কত বড় ভুলই না করেছেন তিনি। সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে যে হাজার হাজার কর্মীর চাকরি গেছে, গ্রগনার্ডও তাঁদের মধ্যে রয়েছেন। মার্কিন কৃষি বিভাগে একজন আইনি উপদেষ্টা হিসেবে সবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনআট মাসের বেতন দিয়ে সিআইএর সব কর্মীকে সরাতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এই রিপাবলিকান ভোটার বলেন, চাকরি হারিয়ে বিস্মিত হয়েছেন তিনি। কারণ, অফিসের ব্যবস্থাপকেরা তাঁকে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, তাঁর চাকরি নিরাপদ আছে।

সিএনএনকে গ্রগনার্ড বলেন, ‘আমি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।’ তিনি বলেন, তাঁর কাছে এটি ছিল স্বপ্নের চাকরি। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে নিয়ে এই সেদিনই জায়গা পাল্টে আরকানসাসের লিটল রক এলাকায় এসেছেন। বলেন, ‘আশা করছিলাম, চাকরিটা করে বাকি জীবন কাটিয়ে দেব।’

আমি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। আশা করছিলাম, চাকরিটা করে বাকি জীবন কাটিয়ে দেব।-মাইকেল গ্রগনার্ড, রিপাবলিকান ভোটার

মাইকেল গ্রগনার্ড চাকরি হারান গত মাসে। অথচ এর তিন মাস আগেই ট্রাম্পকে জেতাতে ভোট দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মতোই চাকরি হারানো অনেক ফেডারেল কর্মীও ট্রাম্পকেই ভোট দিয়েছিলেন।

সাবেক এই কর্মীদের কয়েকজন সিএনএনকে বলেন, তাঁরা ভেবেছিলেন, ট্রাম্পের নীতি তাঁদের মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং এ নীতি তাঁদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। কিন্তু এখন চাকরিই চলে গেছে। কাজ খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে যুক্ত থাকা আইনজীবীদের বরখাস্ত২৮ জানুয়ারি ২০২৫

ফেডারেল কর্মীদের এমন গণ-চাকরিচ্যুতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্কের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও জনশক্তির আকার কমানোর পরিকল্পনারই অংশ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে শুধু হাজারো শিক্ষানবিশ কর্মীকেই বরখাস্ত করেনি; চাকরিচ্যুত করেছে শীর্ষস্থানীয় অনেক কর্মকর্তা ও পরিদর্শককেও। এ ছাড়া আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে ৭৭ হাজার কর্মীকে।

ফেডারেল কর্মীদের এমন গণ-চাকরিচ্যুতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্কের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও জনশক্তির আকার কমানোর পরিকল্পনারই অংশ। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে শুধু হাজারো শিক্ষানবিশ কর্মীকেই বরখাস্ত করেনি; চাকরিচ্যুত করেছে শীর্ষস্থানীয় অনেক কর্মকর্তা ও পরিদর্শককেও। এ ছাড়া আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে ৭৭ হাজার কর্মীকে।

মাইকেল গ্রগনার্ড বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোতে কর্মদক্ষতা আনার চেষ্টাকে তিনি সমর্থন করেন। কিন্তু এখন যেভাবে তা করা হচ্ছে, তার জন্য তিনি ভোট দেননি।

ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া এই মার্কিন বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোট দিয়েছিলাম এ আশায় যে এটি দক্ষতার সঙ্গে ও খানিকটা বেশি যুক্তিসংগত উপায়ে করা হবে। অথচ তা ঘটেনি।’

জেমস ডায়াজ সম্প্রতি চাকরি হারানো প্রবীণ কর্মীদের একজন। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগে (আইআরএস) কাজ করতেন তিনি। ডায়াজ সিএনএনকে বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছি ঠিক, কিন্তু তাঁর প্রশাসন যেভাবে গণহারে কর্মীদের চাকরি খাচ্ছে, তার সঙ্গে একমত নই।’

আমি ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছি ঠিক, কিন্তু তাঁর প্রশাসন যেভাবে গণহারে কর্মীদের চাকরি খাচ্ছে, তার সঙ্গে একমত নই।জেমস ডায়াজ, মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের চাকরিচ্যুত কর্মী

ডায়াজ আরও বলেন, ‘ঠিক যেসব কর্মীকে সরিয়ে দেওয়া দরকার, তাঁদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে তারা (ট্রাম্প প্রশাসন) খুব একটা ভালো কাজ করছে বলে আমি মনে করি না। আমার ধারণা, তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাভাবনা না করে এবং কোনটি ভালো ও কোনটি খারাপ, তা দেখার জন্য কিছু তদন্ত করার পরিবর্তে শুধু ঢালাও পন্থা অবলম্বন করছে।’

ইলন মাস্ক.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ কর চ য ত কর ম দ র র চ কর কর ম ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।

মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।

সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।

জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।

তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।

এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ  রিকোভারীবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ