বোনের মরদেহ রিকশায় করে বাড়ি নিয়ে আসি: চিরঞ্জীবী
Published: 11th, March 2025 GMT
ভারতের বরেণ্য অভিনয়শিল্পী, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী চিরঞ্জীবী। চার দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে তেলেগু, তামিল, হিন্দি, কন্নড় ভাষার অনেক সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। বিশেষ করে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবদান অনেক।
চিরঞ্জীবী তার একজীবনে যশ-খ্যাতি যেমন কুড়িয়েছেন, তেমনি অঢেল সম্পদেরও মালিক। উত্তরাধিকার হিসেবে পুত্র রাম চরণ নিজেকে উচ্চ অবস্থানে নিয়ে গেছেন। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, তার জীবনে অপূর্ণতা বলতে কিছু নেই! কিন্তু আদতে জীবন এমন নয়। কারণ মানুষের জীবনের ভাঁজে ভাঁজে গল্প লুকিয়ে থাকে। চিরঞ্জীবী তার পারিবারিক অজানা অধ্যায় শেয়ার করেছেন একটি পডকাস্টে।
চিরঞ্জীবীর আসল নাম শিব শংকর ভারা প্রসাদ কোন্দিলা। তবে চিরঞ্জীবী নামেই অধিক পরিচিত। তার বাবার নাম কোন্দিলা ভেঙ্কট রাও আর মায়ের নাম অঞ্জনা। তার বাবা-মা সংগ্রামী জীবনযাপন করেছেন। বিশেষ করে তার মা বড় ধরনের ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে জীবন কাটিয়েছেন।
চিরঞ্জীবী বলেন, “এমন একটি ঘটনা আছে, যা নিয়ে ভাবলেই চোখে জল চলে আসে। গর্ভপাতের কারণে আম্মা তিন সন্তানকে হারান। অথবা এক বছর, দুই বছর এবং আড়াই বছরের সন্তানকে হারান আমার আম্মা।”
ভাই-বোনদের একা সামলাতেন চিরঞ্জীবীর মা। তা জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, “আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন আমার একটি বোনের জন্ম হয়, তার নাম ছিল রমনা। সেই সময়ে বাবা প্রতিদিন বাইরে চলে যেতেন আর আম্মা একাই আমাদের সামলাতেন।”
চিরঞ্জীবীর এক বোন মারা যায়। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই মেগাস্টার বলেন, “আমার বোন রমনার ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি আর আম্মা বোনের মরদেহ রিকশায় করে বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। আমরা জানতাম না কীভাবে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হয়। সেই সময়ে আমাদের প্রতিবেশী ছিল একটি মুসলিম পরিবার। তারা আমাদের সহযোগিতা করে। খবর পেয়ে বাবা বাড়ি আসেন। এরপর আমরা বোনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করি।”
সর্বশেষ কোন্দিলা ভেঙ্কট রাও এবং অঞ্জনা দম্পতির চার সন্তান জীবিত রয়েছেন। তারা হলেন— চিরঞ্জীবী, নাগেন্দ্র বাবু, পবন কল্যাণ ও বিজয়া দুর্গা।
১৯৭৮ সালে তেলেগু ভাষার ‘পুনাধিরুলু’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় পা রাখেন চিরঞ্জীবী। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে বিভিন্ন ভাষার ১৫০টির বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে— ‘খাইদি’, ‘পাসিবাড়ি প্রণাম’, ‘ইয়ামুডিকি মুগুডু’, ‘গ্যাং লিডার’, ‘ঘরনা মুগুডু’ প্রভৃতি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গত বছর ভারত সরকার চিরঞ্জীবীকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার দিয়েছে। ২০০৬ সালে এই দক্ষিণী মেগাস্টারকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
আগামী মঙ্গলবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা আবার শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে এই আলোচনা শুরু হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচি হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো আগের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্ত করা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব), দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার আলোচনা শেষ হওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথমে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন। পরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ব্রিফ করবেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ (বিটিভি-নিউজ) সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।
প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই মঙ্গলবার আবার শুরু হচ্ছে।
আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবারও আলোচনা হবে বলে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের আলোচ্য সূচি (আলোচনার বিষয়বস্তু) পরে জানাবে কমিশন।