ইবি ভর্তি কমিটির সভায় আ. লীগপন্থিরা, শিক্ষার্থীদের বাধা
Published: 11th, March 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাধায় তারা সভা ছাড়তে বাধ্য হন। শিক্ষকরা নিজ বিভাগে যাওয়ার সময় তাদের উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান, এমনকি ক্যাম্পাসে না আসার হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রশাসন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রক্টর অধ্যাপক শাহিনুজ্জামান জানান, সভায় আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানান। পরে শান্তিপূর্ণভাবে সভা থেকে বের করে তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষক আওয়ামীপন্থি। একাডেমিক শৃঙ্খলা রক্ষায় চাইলেও তাদের মাইনাসের সুযোগ নেই। তবে যারা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন, সিন্ডিকেটে তাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল বলেন, ‘আমরা চাই জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা তাদের ভুল স্বীকার করে ফিরে আসুক। রুটিন কাজগুলো করুক। কিন্তু তারা এখনও আগের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা লালন করলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো।’
জানা যায়, প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলার সভাকক্ষে ভর্তি কমিটির সভা শুরু হয়। এতে আওয়ামীপন্থিদের মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক শেলীনা নাসরীন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আসাদুজ্জামান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক খন্দকার তৌহিদুল আনাম, ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মিয়া মো.
বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা সভাস্থলের বাইরে আওয়ামীবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা সভাস্থল ত্যাগ করেন। তারা বেরিয়ে নিজ নিজ বিভাগে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা পেছন থেকে ‘দালাল ধর, স্বৈরাচারের দোসর ধর’ বলে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে গিয়ে বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলামকে ক্যাম্পাসে না আসতে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা জুলাই আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেছিলেন। গত বছরের ৪ আগস্ট শাপলা ফোরামের ব্যানারে তারা আন্দোলনকে ‘নৈরাজ্য’ আখ্যা দিয়ে মিছিলও করেন। শিক্ষকদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুলাই আন্দোলনকে উপহাস করে বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ল ইসল ম ল গপন থ শ ক ষকর সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।