ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কমিটির সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাধায় তারা সভা ছাড়তে বাধ্য হন। শিক্ষকরা নিজ বিভাগে যাওয়ার সময় তাদের উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান, এমনকি ক্যাম্পাসে না আসার হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রশাসন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রক্টর অধ্যাপক শাহিনুজ্জামান জানান, সভায় আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আপত্তি জানান। পরে শান্তিপূর্ণভাবে সভা থেকে বের করে তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষক আওয়ামীপন্থি। একাডেমিক শৃঙ্খলা রক্ষায় চাইলেও তাদের মাইনাসের সুযোগ নেই। তবে যারা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন, সিন্ডিকেটে তাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল বলেন, ‘আমরা চাই জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা তাদের ভুল স্বীকার করে ফিরে আসুক। রুটিন কাজগুলো করুক। কিন্তু তারা এখনও আগের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা লালন করলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো।’

জানা যায়, প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলার সভাকক্ষে ভর্তি কমিটির সভা শুরু হয়। এতে আওয়ামীপন্থিদের মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক শেলীনা নাসরীন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আসাদুজ্জামান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক খন্দকার তৌহিদুল আনাম, ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মিয়া মো.

রাসিদুজ্জামান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রবিউল হক, অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক পার্থ সারথি লস্কর, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায়, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শিরিনা খাতুন প্রমুখ অংশ নেন।

বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা সভাস্থলের বাইরে আওয়ামীবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা সভাস্থল ত্যাগ করেন। তারা বেরিয়ে নিজ নিজ বিভাগে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা পেছন থেকে ‘দালাল ধর, স্বৈরাচারের দোসর ধর’ বলে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগে গিয়ে বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলামকে ক্যাম্পাসে না আসতে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা জুলাই আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেছিলেন। গত বছরের ৪ আগস্ট শাপলা ফোরামের ব্যানারে তারা আন্দোলনকে ‘নৈরাজ্য’ আখ্যা দিয়ে মিছিলও করেন। শিক্ষকদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুলাই আন্দোলনকে উপহাস করে বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ল ইসল ম ল গপন থ শ ক ষকর সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই মাস ফ্রিজে রাখার পর মামুনের মাথায় খুলি পুনঃস্থাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায় খুলি প্রায় দুই মাস ফ্রিজে সংরক্ষণ করার পর সফলভাবে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। 

শনিবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে খুলি পুনঃস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মামুন মিয়ার মাথায় সফলভাবে অপারেশন করা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।

গত ৩০ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মামুন মিয়া।

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, চবিতে সংঘর্ষের দিন গুরুতর আহত অবস্থায় মামুন মিয়াকে পার্কভিউ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। সেই থেকে তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। অপারেশনের সময় তার মাখার খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস পর সফল অপারেশনের মাধ্যমে শনিবার মামুনের মাথার খুলি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

গত ৩০ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এতে মামুনসহ চবির অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী আহত হন। মাথায় মারাত্মক আঘাতের কারণে মামুনের মাথার খুলি খুলে রেখে দেওয়া হয়েছিল।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ