৯ বছর পর মুক্তি, জেল গেট থেকে তুলে নিয়ে যুবককে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ
Published: 12th, March 2025 GMT
দীর্ঘ ৯ বছর পর জামিনে সোমবার কারাগার থেকে ছাড়া পান মাদারীপুরের হাফেজ কাজী খালেদ সাইফুল্লাহ জামিল। কিন্তু জেল গেট থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এ আসামিকে পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে পরিবার।
মঙ্গলবার সকালে মাদারীপুর নতুন শহর এলাকায় ইমাম মুয়াজ্জিন সমাজকল্যাণ পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে জামিলের সন্ধান দাবি করা হয়।
তবে গতকাল বিকেলে জামিলকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে আইনজীবীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন তাঁর মা নাজমা বেগম। তিনি জানান, সোমবার জামিলকে কাশিমপুর জেল গেটে আনতে যান তাঁর ছোট ভাই ও মামা। জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, জামিন স্থগিত হওয়ায় জামিলকে ছাড়া হবে না। পরে আইনজীবী নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জামিলকে একটি কালো গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশের বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের লোক।
নাজমা বেগম বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলন করার পরে বিকেলে খবর পেয়েছি জামিলকে নতুন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে আবারও কারাগারে নেওয়া হয়েছে। এত বছর জেল খাটার পরেও ছেলে আমার নতুন কোন অপরাধে জড়ালো? আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জামিলের মামা অধ্যাপক কাজী মো.
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আলী আহমেদ চৌধুরী, ইমাম মুয়াজ্জিন সমাজকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম খানসহ পরিবারের সদস্যরা।
২০১৬ সালের জুনে মাদারীপুর সদরের দুধখালী ইউনিয়নের বলসা গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন কিশোর জামিল। তিন দিন পর ঢাকার মাতুয়াইলের বাদশা মিয়া রোড থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। জামিল শিবচরের জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর প্রয়াত বাবা মাদারীপুর সরকারি কলেজের (নাজিমউদ্দিন কলেজ) গণিত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে মাগুরায়। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিনও মামলার প্রধান আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ আদালত কক্ষে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। কিন্তু আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষীরা প্রত্যেকে হিটু শেখের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার ছিল এই মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ। সেদিনও শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হিটু শেখ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন।
গতকাল কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হিটু শেখসহ ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, গত তিন কার্যদিবস টানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। গতকাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, আছিয়ার বোন হামিদা ছিলেন। এ নিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আজ বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাক্ষ্য দেবেন। গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
গতকালও আদালত কক্ষে ঢোকার আগে হিটু শেখ ঘটনার জন্য তাঁর পুত্রবধূ আছিয়ার বোনকে দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। হিটু শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমিসহ আমার দুই ছেলে বাড়িতে ছিলাম না। সকালে বাইরে যাওয়ার সময়ও আছিয়াকে সুস্থ দেখে গেছি। আছিয়ার বোন এ সময় একাই বাড়িতে ছিল। সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন। দোষী হলে যে শাস্তি হয়, মাথা পেতে নেব।
বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশু আছিয়া। ঢাকা সিমএমএইচে ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।