বেক্সিমকো চলবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়, থাকছে না রিসিভার
Published: 12th, March 2025 GMT
বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠান (গ্রুপ অব কোম্পানিজ) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন। রায়ে ৯টি পর্যবেক্ষণসহ রুলটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বেক্সিমকোর সব প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রেগুলেটরি বডির সুপারভিশন ও মনিটরিং আইন অনুযায়ী থাকবে। এ রায়ের ফলে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে আর কোনো রিসিভার থাকছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও আইনজীবী আনিসুল হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মাসুদ আর সোবহান।
রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেক্সিমকো গ্রুপের সব প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আপিল করে। তখন আপিল বিভাগ আদেশটি মডিফাই করে শুধু বেক্সিমকো ফার্মাকে নিজস্ব ব্যবস্থায় পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক বেক্সিমকোর বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে রিসিভার নিয়োগ করেছিল। এবার হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করে বেক্সিমকোর সব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে বলে রায় দিয়েছেন।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান বলেন, রায়ে বলা হয়েছে, রিসিভার দায়িত্ব পালনকালে যা করেছে সব কাজ আইনগতভাবে বৈধ।
সরকার পরিবর্তনের পর গত বছরের আগস্টে বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান হাইকোর্টে রিটটি করেন। পরে ৫ সেপ্টেম্বর ওই রিটের শুনানি নিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের সব সম্পত্তি পরিচালনার জন্য রিসিভার নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ছয় মাসের জন্য গ্রুপটির সব সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচ) করতে বলা হয়।  বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি দেওয়া ওই আদেশে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থ উদ্ধার এবং বিদেশ থেকে টাকা ফেরাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
  
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ আইনজ ব র জন য পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও টেলিকম কর্মকর্তা বঙ্কিম ব্রহ্মভট্টের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। ওই জালিয়াতির তিনিই মূল পরিকল্পনাকারী বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই কেলেঙ্কারির কারণে ব্ল্যাকরকের ঋণ শাখা এবং আরও কয়েকটি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারী সংস্থার ৫০ কোটি কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এটিকে ‘বিস্ময়কর’ আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
কে এই বঙ্কিম ব্রহ্মভট্ট
ব্রহ্মভট্ট বৈশ্বিক টেলিকম-পরিষেবা শিল্পে অপেক্ষাকৃত অপরিচিত দুটি সংস্থা—ব্রডব্যান্ড টেলিকম ও ব্রিজভয়েসের সঙ্গে যুক্ত। দুটি সংস্থাই ব্যাঙ্কাই গ্রুপের অধীনে কাজ করে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে ব্যাঙ্কাই গ্রুপ এক্স (পূর্বের টুইটার)-এর একটি পোস্টে ব্রহ্মভট্টকে প্রেসিডেন্ট এবং সিইও হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
এক্সে দেওয়া ব্যাঙ্কাই গ্রুপের পরিচয় দেওয়া হয়েছে এভাবে—‘টেলিকমিউনিকেশন শিল্পে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত নেতা, যারা টেলকো, অপারেটর এবং আরও অনেকের সঙ্গে টেলিকম প্রযুক্তি ও ক্যারিয়ার ব্যবসায়িক সৌহার্দ্যকে লালন করে।’
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুসারে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বের টেলিকম অপারেটরদের অবকাঠামো ও সংযোগের সরঞ্জাম সরবরাহ করে।
মনে হচ্ছে, ব্রহ্মভট্টের লিঙ্কডইন প্রোফাইলটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েক মাস আগেও ব্রহ্মভট্ট নিউইয়র্কের গার্ডেন সিটিতে অফিস চালাতেন।
জালিয়াতির ধরন
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ বকেয়া রয়েছে। ব্ল্যাকরকের এইচপিএস ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার্সের নেতৃত্বে ঋণদাতারা তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়া চালান ও ভুয়া পাওনা অ্যাকাউন্ট তৈরি করার অভিযোগ এনেছেন। বড় অঙ্কের ঋণের জন্য জামানত হিসেবে ওইসব অ্যাকাউন্ট বানানো হয়েছিল।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্রহ্মভট্টের প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল যখন ভারত ও মরিশাসে স্থানান্তর করা হয়েছিল, তখন তাদের নেটওয়ার্ক কাগজে-কলমে আর্থিক শক্তির একটি মায়াজাল তৈরি করা হয়েছিল।
তবে ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী এই জালিয়াতির সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ঋণদাতারা দাবি করেছেন, ব্রহ্মভট্ট কারিওক্স ক্যাপিটাল ও বিবি ক্যাপিটাল এসপিভির মতো আর্থিক সংস্থার এক জটিল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, যা ব্ল্যাকরকের মতো কয়েকটি বেসরকারি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ব্রহ্মভট্ট ভুয়া গ্রাহক চালান তৈরি করেন এবং সেই জাল কাগজপত্র দিয়ে জামানত তৈরি করে তার বিপরীতে ৫০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ নিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পরে তিনি ভারত ও মরিশাসে সম্পদ স্থানান্তর করেন। এখন তাঁর দুটি কোম্পানি এবং ব্রহ্মভট্ট নিজে দেউলিয়া হওয়ার আবেদন করেছেন।
গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্রহ্মভট্টের আইনজীবী কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, জালিয়াতির সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।