প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ছয়টি সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সংলাপের দরকার নেই। এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই বাস্তবায়ন করতে পারে। এ বিষয়ে ৩০ পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়গুলো তাদের মতো করে এগুলো বাস্তবায়ন করবে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রেস সচিব। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই ব্রিফ করা হয়।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশন (সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন) অনেকগুলো সুপারিশ জমা দিয়েছে। এর মধ্যে কিছু সুপারিশ আছে, যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সংলাপের দরকার নেই। এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই বাস্তবায়ন করতে পারে। এসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জন্য টাকার তেমন সংশ্লেষ নেই। তাই সেই সিদ্ধান্ত যাতে দ্রুত নেওয়া যায়, সে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রেস সচিব বলেন, এ বিষয়ে ৩০ পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্তের কথা প্রতিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে এবং তারা তাদের মতো করে এগুলো বাস্তবায়ন করবে।

প্রেস সচিব বলেন, স্বৈরাচারের সময় ৫৬০টি মডেল মসজিদ করা হয়েছিল। এতে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল। এতে অনেক অনিয়মের কথা উঠেছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে।

শূন্য পদে নিয়োগে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আগামী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জানাবেন কী পরিমাণ নিয়োগ করা যেতে পারে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ মার্চ চার দিনের সফরে চীন যাচ্ছেন। তাঁরা আশা করছেন, সেখানে সম্মেলনে যোগদান এবং অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ