কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, কানাডা কখনই যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবে না। শুক্রবার দেশটির ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত করার যে হুমকি দিয়েছিলেন তা প্রত্যাখ্যান করে মার্ক কার্নি অটোয়ার রিডো হলের বাইরে সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা কখনই, কোনো আকার বা আকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হব না। আমরা মৌলিকভাবে একটি আলাদা দেশ।’

ব্যাংক অব কানাডা ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক এই গভর্নর বলেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ‘সম্মান প্রত্যাশা করে’। তাঁর সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ‘একত্রে কাজ করার’ উপায় খুঁজে বের করবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

কানাডায় এক সপ্তাহেরও কম সময় আগে সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্ক কার্নির নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। এর আগে কোনো নির্বাচনে জেতার অভিজ্ঞতা নেই তাঁর। হাউস অব কমন্সেও তার কোনো আসন নেই। এ বিষয়টি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কানাডার ইতিহাসে তাঁকে বিরল করে তুলেছে। আগামী দিনে কার্নি একটি নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

কানাডার ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক আক্রমণের প্রভাব এতটাই বিস্তৃত এবং এতটাই ক্ষতিকর যে, আগামী মাসগুলোতে এটি অন্যান্য সব বিষয়কে ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন বাণিজ্য শুল্ক যদি দীর্ঘ সময় ধরে বহাল থাকে, তবে এটি কানাডার ভঙ্গুর অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, অর্থনৈতিকভাবে বলতে গেলে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হলে দেশটির জন্য ভালো হবে। তাঁর এই মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্ক কার্নি বলেন, এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়।

গত শুক্রবার সকালে জাস্টিন ট্রুডো আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন। প্রায় এক দশক তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুনট্রুডোর বিদায়, কার্নির শপথ১৩ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা কমপ্লায়েন্স অনুসরণে

অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়মত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদের আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিল ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘পরিচালনা পর্ষদ সভা ও বার্ষিক সাধারণ সভার গুরুত্ব এবং লিমিটেড কোম্পানির কমপ্লায়েন্স’ শীষর্ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্ম পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) রেজিস্টার এ. কে. এম নুরুন্নবী কবির এ কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় ঢাকা চেম্বারের শতাধিক সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

নুরুন্নবী কবির বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় পৌনে ৩ লাখ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আরজেএসসিতে নিবন্ধিত রয়েছে। কোম্পানি নিবন্ধনের প্রায় সব প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হয়ে থাকে।’’

তিনি জানান, শুধু কোম্পানির শেয়ার ট্রান্সফারের বিষয়টি আনলাইন সেবার বাইরে আছে। যেটি ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ‘‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়সমত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদেরকে আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।’’ 

বিশেষ করে সরকারের সকল সেবা প্রাপ্তির পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কমপ্লায়েন্স মেনে চলার উপর তিনি জোরারোপ করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও শিল্পখাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে লিমিটেড কোম্পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুশাসনের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অনেক উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি আইন, গঠনতন্ত্র বা কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়ের জটিলতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’’

কর্মশালাটি পরিচালনা পর্ষদ সভা, বার্ষিক সাধারণ সভা, বিশেষ সাধারণ সভা প্রভৃতির গুরুত্ব, সময়মতো এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পদ্ধতি, কোম্পানি আইনের আওতায় প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স বজায় রাখার কৌশল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করবে বলে জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।

ঢাকা/নাজমুল//

সম্পর্কিত নিবন্ধ