যাত্রীর চেয়ে ঠিকাদার কেন বেশি সুবিধাভোগী
Published: 16th, March 2025 GMT
সরকারি গণপরিবহন ট্রেনের সেবা বাড়াতে ও কালোবাজারি বন্ধ করতে টিকিট বিক্রি অনলাইনভিত্তিক করা হয়। সেবা বাড়ানোর চেয়ে বরং নতুন আরেক ভোগান্তিই যুক্ত হয়েছে সেখানে। কালোবাজারিরা দক্ষ হওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে গিয়ে টিকিট পাচ্ছেন না। অথচ নতুন ব্যবস্থায় অনলাইনে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিকই অযৌক্তিকভাবে লাভ করছে।
ট্রেন যাতায়াতের প্রায় ৭১ শতাংশ টিকিটই বিক্রি হয় অনলাইনে। বাকি যে ২৯ শতাংশ টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হয়, এর প্রায় সবই হয় কম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনযাত্রার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া কাউন্টারে টিকিট কাটার সময় মোবাইল ফোনে ওটিপি নম্বর আসার পর গ্রাহক টিকিট পান। সেখানেও টিকিট কাটতে বেশ সময় লাগছে। তা ছাড়া অনলাইন–সুবিধা না থাকা নিম্ন আয়ের বিপুলসংখ্যক যাত্রী কমে গেছে। বিগত এক দশকে আন্তনগর ট্রেনের প্রতি জোর দেওয়ায় প্রায় ১০০ লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে সাশ্রয়ী গণপরিবহন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে নিম্নবিত্ত, দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের বড় একটা অংশ।
কালোবাজারি বন্ধে অনলাইনে টিকিট বিক্রির সেবা চালুর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপরও কি কালোবাজারি ও অনিয়ম ঠেকাতে পেরেছে রেলওয়ে? কেন অনলাইনে ‘এক মিনিটেই টিকিট শেষ’—এমন অভিযোগ সর্বত্র শুনতে হয়? দিন শেষে এটি এখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক ‘ব্যবসায়’ পরিণত হয়েছে। রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে পাঁচ বছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহজ টিকিট বিক্রি ও বিজ্ঞাপন সব মিলিয়ে ৩০ কোটি টাকা পেত। অনলাইনে বেশি টিকিট বিক্রি হওয়ার কারণে বিজ্ঞাপনের আয় ছাড়াই তারা ৯২ কোটি টাকা বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছে। যদিও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বলছে, পুরো ব্যবস্থা তাদের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে অনেক খরচ হয়।
সহজের সঙ্গে করা চুক্তি অনুসারে রেলের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোয় বড় ৬০টি মনিটর স্থাপন করার কথা। এসব মনিটরে ট্রেন গমনাগমন, কোচের সিরিয়াল নম্বর, ট্রেনের অবস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহের কথা। চুক্তির এ রকম অনেক শর্তই তারা মানেনি বা বাস্তবায়ন করেনি।
বিগত সরকারের আমলে টিকিট বিক্রির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগে বড় ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। সহজের আগের প্রতিষ্ঠান সিএনএসের বিরুদ্ধেও নানা অজুহাতে বিপুল টাকা তুলে নেওয়া অভিযোগ আছে। অনলাইনভিত্তিক টিকিটসেবার কারণে যদি যাত্রী কমে যায় এবং ভোগান্তি তৈরি হয়, তাহলে এটির গুরুত্বই কী থাকল?
অনলাইন সেবা বাড়ানোর পাশাপাশি পিছিয়ে থাকা যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখার প্রতি বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন। আশা করি, রেলপথ বিষয়ক উপদেষ্টা গোটা বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দেবেন। অনলাইনে টিকিট বিক্রিতে ভোগান্তি বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ তিনি নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
হস্তক্ষেপ নয়, পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী টিম ডিরেক্টর রাজ্জা
সংবাদ সম্মেলন তখন শেষ। আব্দুর রাজ্জাককে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘‘বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর কিন্তু টসেও ইনপুট দিতেন। আপনি কি…?’’ রাজ্জাক মুখে হাসি আটকে রাখেন। এই পদে আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে দায়িত্ব পাওয়া রাজ্জাক স্রেফ এতোটুকুই বলতে পারেন, ‘‘আমাদের থেকে এমন কিছু কখনোই দেখতে পারবেন না। আমরা নতুন কিছু নিয়ে ভাববো।’’
জাতীয় দলকে নিয়ে সেই ভাবনা থেকেই আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বোর্ড একজনকে টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় পুরুষ দলের ব্যর্থতার কারণে আলোচনা হচ্ছিল, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ওপরে একটি ছায়া বিভাগ থাকবে যারা সরাসরি জাতীয় দল পর্যবেক্ষণ করবে।
সেই ছায়া বিভাগে সাবেক ক্রিকেটাররাই থাকবেন। প্রথম টিম ডিরেক্টর হিসেবে রাজ্জাক পেলেন দায়িত্ব। কেন টিম ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব হলো সেই প্রশ্ন করা হয় তাকে। নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির দায়িত্বে থাকার সময় টিম ডিরেক্টর পদটি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ এই দায়িত্ব পালন করেছেন বিশ্বকাপসহ বেশ কয়েকটি সিরিজে। দলের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে যেতেন তিনি। টস থেকে শুরু করে টিম মিটিংয়ে দিতেন ইনপুট। যা নিয়ে পরবর্তীতে অভিযোগ করেছিলেন কোচ ও অধিনায়ক।
তবে রাজ্জাক নিজের কাজ, পরিধি এবং দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন বলেই নিশ্চিত করলেন,"অন্যান্য যে কোনো টিম ডিরেক্টরের মতোই হবে আমার কাজ। আমি সব কিছু পর্যবেক্ষণ করব, সব কিছুতে নজর রাখব। আর কখনও যদি টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে আমার কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন, তাহলে সেটিও দেওয়ার চেষ্টা করব। তাদের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমি করব।"
"ক্রিকেট বোর্ডের মনে হয়েছে, দলের সঙ্গে একজন টিম ডিরেক্টর থাকলে ভালো হবে। এই পদটি কিন্তু আগেও ছিল। অনেক দিন ধরেই ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বোর্ড পরিচালকের সংখ্যা কম থাকায় হয়তো দলের সঙ্গে কেউ যায়নি। তবে এর আগে প্রায় সিরিজেই দলের সঙ্গে টিম ডিরেক্টর থাকত।" - যোগ করেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন