Prothomalo:
2025-11-03@14:42:28 GMT

সমুদ্রের শহর এল নিডোতে-১

Published: 17th, March 2025 GMT

ফিলিপাইনের পালাওয়ান দ্বীপের উত্তর প্রান্তে একটি অত্যাশ্চর্য সুন্দর এলাকা এল নিডো। যেখানে উঁচু চুনাপাথরের পাহাড়, স্ফটিক স্বচ্ছ জল, ছোট জঙ্গলে ঢাকা দ্বীপ, সাদাশুভ্র বালুর সৈকত এবং নির্জন লেগুন রয়েছে। প্রাচীন ক্লিফ ঘেরা কঠিন শিলা গঠনের পাহাড়সহ অসংখ্য শুভ্র সাদা বালুর সৈকত রয়েছে এখানে, যার প্রান্ত ছুঁয়ে আছে সমুদ্রের স্বচ্ছ জল। আমরা ঠিক করেছি, ফিলিপাইন বেড়াতে যাওয়ার মূল লক্ষ্য এল নিডো, সেবুসহ বেশ কিছু দ্বীপে ঘুরে বেড়ানো। আমার সফরসঙ্গী রিপন, মনজু, মোশারফ, আমিন আর সুফিয়ান ভাই। আমরা সবাই আইটি ব্যবসায়ী, সুযোগ পেলে দেশ-বিদেশ ঘুরতে পছন্দ করি।

ফিলিপাইন প্রায় সাত হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দেশ। এখানে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়ার জন্য বিমান উৎকৃষ্ট বাহন। যদিও প্রতিটি দ্বীপের মধ্যে ফেরি চলাচল করে। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে ফেরির মাধ্যমে এল নিডো যাওয়া যায়। খরচও কম। কিন্তু ফেরিতে সময় বেশি লাগে এবং প্রায় সময় আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল হয়। তাই উড়োজাহাজকে বাহন হিসেবে পছন্দ করেছিলাম।

এল নিডোতেই একটি বিমানবন্দরে আছে, কিন্তু যার ভাড়া অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় আমরা পালোয়ানের পুরতো প্রিন্সেসা বিমানবন্দরে পৌঁছে সড়কপথে এল নিডো পৌঁছানোর মনস্থির করেছিলাম। দুপুর ১২টায় উড্ডয়ন শুরু করে কোনো প্রকার বিলম্ব ছাড়া উড়োজাহাজ যখন গন্তব্যে পৌঁছাল, তখন সময় বেলা ১টা ৩০। পালোয়ানের বিমানবন্দরটি আকারে ছোট, তেমন ভিড়ভাট্টা নেই। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে এল নিডো যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস ঠিক করে হাল্কা খাওয়াদাওয়া শেষে যাত্রা শুরু করলাম।

পুরতো প্রিন্সেসা বিমানবন্দর থেকে এল নিডো সড়কপথে যাত্রাপথটি ছিল মসৃণ ও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর। পাহাড়ের খাঁজ কেটে বয়ে গেছে প্রশস্ত রাস্তা, কখনো সোজা আবার কখনো আঁকাবাঁকা। যাত্রাপথে মিলল ২০ মিনিটের বিরতি। সুস্বাদু মাছভাজা, সবজি আর সাদা ভাত দিয়ে রাতে খেলাম। পুরতো প্রিন্সেসা থেকে এল নিডো শহরে পৌঁছাতে সময় লাগল প্রায় ছয় ঘণ্টা! রাত বাজে ৯টা। শহরটা প্রায় নিস্তব্ধ আর নিরিবিলি। ভাড়া করা মাইক্রোবাসটি আনলাইনে বুক করা আমাদের হোটেলের সামনে নামিয়ে অন্ধকারে মিশে গেল। হোটেলের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আমরা টের পেলাম ৬টার ডিনার হজম হয়ে গেছে আর বঙ্গভূমি থেকে বয়ে আনা উদর রত্রির জন্য আরেক প্রস্থ খাদ্য গ্রহণে প্রস্তুত, যার নাম ইংরেজ সভ্যরা সাপার দিয়েছেন।

এল নিডোর গণপরিবহন ট্রাই সাইকেল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল প ইন এল ন ড

এছাড়াও পড়ুন:

সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’

মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’

মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।

শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ