ফিলিপাইনের পালাওয়ান দ্বীপের উত্তর প্রান্তে একটি অত্যাশ্চর্য সুন্দর এলাকা এল নিডো। যেখানে উঁচু চুনাপাথরের পাহাড়, স্ফটিক স্বচ্ছ জল, ছোট জঙ্গলে ঢাকা দ্বীপ, সাদাশুভ্র বালুর সৈকত এবং নির্জন লেগুন রয়েছে। প্রাচীন ক্লিফ ঘেরা কঠিন শিলা গঠনের পাহাড়সহ অসংখ্য শুভ্র সাদা বালুর সৈকত রয়েছে এখানে, যার প্রান্ত ছুঁয়ে আছে সমুদ্রের স্বচ্ছ জল। আমরা ঠিক করেছি, ফিলিপাইন বেড়াতে যাওয়ার মূল লক্ষ্য এল নিডো, সেবুসহ বেশ কিছু দ্বীপে ঘুরে বেড়ানো। আমার সফরসঙ্গী রিপন, মনজু, মোশারফ, আমিন আর সুফিয়ান ভাই। আমরা সবাই আইটি ব্যবসায়ী, সুযোগ পেলে দেশ-বিদেশ ঘুরতে পছন্দ করি।
ফিলিপাইন প্রায় সাত হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি দেশ। এখানে এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়ার জন্য বিমান উৎকৃষ্ট বাহন। যদিও প্রতিটি দ্বীপের মধ্যে ফেরি চলাচল করে। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে ফেরির মাধ্যমে এল নিডো যাওয়া যায়। খরচও কম। কিন্তু ফেরিতে সময় বেশি লাগে এবং প্রায় সময় আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল হয়। তাই উড়োজাহাজকে বাহন হিসেবে পছন্দ করেছিলাম।
এল নিডোতেই একটি বিমানবন্দরে আছে, কিন্তু যার ভাড়া অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় আমরা পালোয়ানের পুরতো প্রিন্সেসা বিমানবন্দরে পৌঁছে সড়কপথে এল নিডো পৌঁছানোর মনস্থির করেছিলাম। দুপুর ১২টায় উড্ডয়ন শুরু করে কোনো প্রকার বিলম্ব ছাড়া উড়োজাহাজ যখন গন্তব্যে পৌঁছাল, তখন সময় বেলা ১টা ৩০। পালোয়ানের বিমানবন্দরটি আকারে ছোট, তেমন ভিড়ভাট্টা নেই। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে এল নিডো যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস ঠিক করে হাল্কা খাওয়াদাওয়া শেষে যাত্রা শুরু করলাম।
পুরতো প্রিন্সেসা বিমানবন্দর থেকে এল নিডো সড়কপথে যাত্রাপথটি ছিল মসৃণ ও মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর। পাহাড়ের খাঁজ কেটে বয়ে গেছে প্রশস্ত রাস্তা, কখনো সোজা আবার কখনো আঁকাবাঁকা। যাত্রাপথে মিলল ২০ মিনিটের বিরতি। সুস্বাদু মাছভাজা, সবজি আর সাদা ভাত দিয়ে রাতে খেলাম। পুরতো প্রিন্সেসা থেকে এল নিডো শহরে পৌঁছাতে সময় লাগল প্রায় ছয় ঘণ্টা! রাত বাজে ৯টা। শহরটা প্রায় নিস্তব্ধ আর নিরিবিলি। ভাড়া করা মাইক্রোবাসটি আনলাইনে বুক করা আমাদের হোটেলের সামনে নামিয়ে অন্ধকারে মিশে গেল। হোটেলের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আমরা টের পেলাম ৬টার ডিনার হজম হয়ে গেছে আর বঙ্গভূমি থেকে বয়ে আনা উদর রত্রির জন্য আরেক প্রস্থ খাদ্য গ্রহণে প্রস্তুত, যার নাম ইংরেজ সভ্যরা সাপার দিয়েছেন।
এল নিডোর গণপরিবহন ট্রাই সাইকেল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার তেজগাঁওয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তেজগাঁও সাউদার্ন পাম্পের পাশে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত খন্দকার সাইদুর রহমান (৩৮) পেশায় মার্চেন্ডাইজার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ঢাকার পল্লবীর বাউনিয়ার আলাবদিরটেক এলাকায়। তাঁর বাবার নাম খন্দকার মোফাজ্জল হায়দার।
মৃতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাতে সাইদুর মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে একটি ট্রাকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মোটরসাইকেলে সাইদুরের সঙ্গে তাঁর এক সহকর্মীও ছিলেন। তবে তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল মারুফ জানিয়েছেন।
আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, যে ট্রাকটি সাইদুরের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়েছিল, তা আটক করা হয়েছে, তবে এর চালক পালিয়ে গেছেন।
পরিবারের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সাইদুরের মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আল মারুফ।