পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ছেড়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার করবিন বশ। চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে তাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পিএসএল ড্রাফটে করবিন বশকে দলে নেয় পেশোয়ার জালমি। তবে ৮ মার্চ আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ঘোষণা করে, চোটে পড়া লিজার্ড উইলিয়ামসের পরিবর্তে তারা বশকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এখান থেকেই শুরু হয় জটিলতা।

কারণ, এবার প্রথমবারের মতো পিএসএল ও আইপিএলের সূচি প্রায় একই সময়ে পড়েছে। আইপিএল শুরু হবে ২২ মার্চ এবং শেষ হবে ২৫ মে। অন্যদিকে, পিএসএল মাঠে গড়াবে ১১ এপ্রিল, শেষ হবে ১৮ মে। ফলে কোনো এক টুর্নামেন্টে খেলার বিকল্প নেই ক্রিকেটারদের। আর বশ বেছে নেন আইপিএলকে।

এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পিসিবি। চুক্তি অনুযায়ী খেলোয়াড়ের অন্য কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেই শর্ত ভঙ্গের কারণেই পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিশ।

পিসিবির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওই খেলোয়াড়ের এজেন্টের মাধ্যমে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ওই খেলোয়াড়কে তার পেশাগত দায়বদ্ধতা ও চুক্তির শর্তাবলি ভঙ্গের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার পরিণাম কী হতে পারে, সেটি তাকে জানিয়ে দিয়ে উত্তর দিতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পিসিবি এই বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করবে না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসএল প এসএল

এছাড়াও পড়ুন:

বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক

রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।

চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে। 

বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা,  কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক