স্বাধীনতার গান
শেখ একেএম জাকারিয়া
আশার তো নেই শেষ
স্বাধীন হবে দেশ,
যুদ্ধ লেগে ঝরল কত প্রাণ
ভাসছে হাওয়ায় রক্ত শোকের ঘ্রাণ,
মিলিটারির গুলি
উড়ায় মাথার খুলি,
কত মায়ের বোনের গেল মান
যাচ্ছি লিখে স্বাধীনতার গান।
পাকিস্তানি লোক
কাঁপত দেখে, বুক!
পিঠ ঠেকে যেই ঘরে
অস্ত্র হাতে ধরে,
গর্জে উঠে মুক্তি সেনার দল,
স্লোগান তোলে যুদ্ধে সবাই চল।
দেশে তাই যুদ্ধ চলে ন’মাস
রোদে শুকায় রক্তে ভেজা ঘাস,
খুনিরা সব পালায়,
মুক্তি সেনার জ্বালায়।
জাগায় পুলক প্রীতি
একাত্তরের স্মৃতি,
রংতুলিতে আঁখি
যত্ন করে রাখি,
দুঃখ ভুলি বাজাই সুরের তান,
কণ্ঠে তুলি স্বাধীনতার গান।
দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ
শ্যামল বণিক অঞ্জন
দ্রৌপদীরা আজও অরক্ষিত।
কলিযুগে কলিগুলো ঝরে যায়
হঠাৎ আসা ঝড়ে নিমেষেই,
চলে বস্ত্র হরণ প্রকাশ্য দিবালোকে!
মহাভারতের সেই দুর্যোধন দুঃশাসনের বংশধররা আজ অকুণ্ঠ মগ্ন
ভোগ শোষণে ক্ষুধা নিবারণের ঘৃণ্য প্রয়াসে।
কামনার পান পাত্রে বুঁদ হয়ে
বিকৃত উল্লাসে মেতে তৃপ্ত হয়
লুটে নিয়ে অবলার যত্নে রক্ষিত অমূল্য রতন।
দুরু দুরু বুকে নিভৃতে গুমরে কাঁদে শঙ্কিত মাতৃকুল!
পঞ্চপাণ্ডবের আগমন প্রত্যাশার প্রার্থনায় নিমগ্ন অহর্নিশ।
সম্পর্কের পরিণতি
বজলুর রশীদ
ঘরজুড়ে নিভৃত একা ধোঁয়ার রং,
মুখ গুঁজে পড়ে থাকে কিছু শুকনো পাতা
সম্পর্কের শেষ পরিণতির মতো!
কারও মনে কি সৌন্দর্য জন্ম লয়
ফুল ফুটে ঝরে যায় এই রীতি,
সময়ের লাভা পৌঁছে যাবে একদিন–
একনাগাড়ে দামি সিগারেটের বেসামাল
ঔদ্ধত্যে ছাই হয়ে উবে যায় সমস্ত অধিকার।
আর কিছুই চাই না, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত
সব নিরুদ্দেশে চলে যায়, সম্পর্করা মরে যায়–
চোখের জলে জমা নৈঃশব্দ্যের দোষী আর কেউ নয়,
ভালোবেসে অপরাধী হওয়ার স্পর্ধা সত্যিই
আমার নেই, আচমকা বিঁধে যাই.
তোর কাছে মা শুই
সরওয়ার মুর্শেদ
শয়তানেরা নিছে কেড়ে
তোর মুখেরই আলো
কপ্টারে তুই
চড়লি মেয়ে
তাহলে বেশ
ভাগ্যটা তোর ভালো!
রাষ্ট্র তোকে সব দিয়েছে
দেয়নি নিরাপত্তা
তুই কি মানুষ?
মানুষ না রে
তোর যে নারী-সত্তা!
আর কোনোদিন ফুল কুড়ানো
হবে না রে তোর
আর কোনোদিন রাত্রিগুলো
তোর হবে না ভোর!
বকুল ফুলের গাছটাকে আর
বলবি নাকো– ছুঁই
বলবি নাকো
মাকে ডেকে–
একটুখানি তোর কাছে মা শুই!
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।