Samakal:
2025-05-01@00:13:58 GMT

ধর্ষণ নিপীড়নের প্রতিবাদ

Published: 17th, March 2025 GMT

ধর্ষণ নিপীড়নের প্রতিবাদ

দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক, সাইবার সহিংসতার পাশাপাশি বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায় 
সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। এর ধারাবাহিকতায় বগুড়া, পাবনার ঈশ্বরদীসহ কয়েকটি ইউনিটের সুহৃদরা কর্মসূচি পালন করেন

বগুড়ায় মানববন্ধন
আসলাম হোসাইন
দেশে ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন মাধ্যমে নতুন নতুন নির্যাতনের খবর উঠে আসছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়ায় বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, যা সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বগুড়ায় ১৭ মার্চ সমকাল সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেসায় এই মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী ও সচেতন মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের মতো অপরাধ সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এসব অপরাধের যথাযথ বিচার না হলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
বগুড়া সুহৃদ সহসভাপতি সাজিয়া আফরিন সোমা বলেন, ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনা শুধু একজন ভুক্তভোগীর জীবনে নয়, বরং পুরো পরিবার ও সমাজে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। একজন নারী বা শিশু যখন ধর্ষণের শিকার হয়, তখন সে মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ে। পরিবার সামাজিক অসম্মানের ভয়ে অনেক সময় আইনি ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। ফলে অপরাধীরা আরও বেশি সাহসী হয়ে ওঠে। মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, আইনের দীর্ঘসূত্রতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই দেশে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ার অন্যতম কারণ। 
উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন, শুধু শাস্তি নিশ্চিত করলেই ধর্ষণ বন্ধ হবে না। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও গণমাধ্যমকে একযোগে কাজ করতে হবে। নারীদের যথাযথ সম্মান ও সুরক্ষা দিতে হলে পরিবার থেকেই শিশুদের সঠিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা শেখাতে হবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ব্যানার হাতে নিয়ে ‘ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই’, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করো’, ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। তারা বলেন, এ ধরনের মানববন্ধন শুধু একটি প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার একটি মাধ্যম। 
ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে এবং ন্যায়বিচারের পথ সুগম করতে হবে। সবাইকে নারী ও শিশুর নিরাপত্তায় এগিয়ে আসতে হবে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকলে সুস্থ, সুন্দর ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এমন প্রত্যাশার মধ্য দিয়ে শেষ হয় কর্মসূচি। 
সাধারণ সম্পাদক সুহৃদ সমাবেশ, বগুড়া

ঈশ্বরদীতে প্রতিবাদ সভা 
সেলিম সরদার    
বড় বোন হামিদা আক্তারের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল শিশু আছিয়ার। মায়ের মতো আছিয়াকে খাবার মুখে তুলে দিতেন। বিয়ের পর সেই আদরের বোনটির ওপর নির্মম ও পাষণ্ড আচরণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না হামিদা। স্বামী, শ্বশুরসহ অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি। হামিদার মতো ঈশ্বরদীর সুহৃদরাও সমভাবে ব্যথিত। মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে ধিক্কার ও প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান সুহৃদরা।
নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে সুহৃদরা প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল শহরের রেলগেট জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ঈশ্বরদীর সুহৃদ সভাপতি আর.

কে. বাবু এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল ইসলাম মাসুদ। বক্তব্য দেন সমকালের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি সেলিম সরদার, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদুল হক আমান, স্বর্ণকলি বিদ্যাসদনের পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাবু, সুহৃদ সভাপতি আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠু, সহসভাপতি খন্দকার তৌফিক আলম, তানহা ইসলাম শিমুল, আব্দুস সামাদ, সুহৃদ ফিরোজ , দুর্জয় ইসলাম, হাসান চৌধুরী, পরিতোষ পাল, আলমাস হোসেন প্রমুখ। v
সমন্বয়ক সুহৃদ সমাবেশ, ঈশ্বরদী

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র স হ দর ইসল ম অপর ধ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালী জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসান রিমনকে (১৬) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে আহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সুধারাম মডেল থানায় রিমনের মা বাদী হয়ে দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেনি।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

আহত শাহরিয়ার হাসান রিমন জেলা শহরের বসুন্ধরা কলোনি বাসিন্দা মো. জামাল উদ্দিন ও ফরিদা ইয়াছমিন দম্পত্তির ছেলে। সে স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু

ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি, কারাগারে ইমামের মৃত্যু

বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কিশোর গ্যাং সদস্যরা শাহরিয়ার হাসান রিমনকে ধারালো ছুরি এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় রাতে আহত রিমনের মা ফরিদা ইয়াছমিন ২১ জনকে এজহারভুক্ত ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।

রিমনের  মা ফরিদা ইয়াছমিন জানান, রিমনের পিঠে, মাথায়সহ মোট ছয়টি ছুরির আঘাত করা হয়। তার অপারেশন ঢাকা মেডিকেল কলেজে করানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে। তার পিঠের আঘাতগুলো ফুসফুস পর্যন্ত চলে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, হামলাকারীরা ভেবেছিল রিমন মারা গেছে। যখন জানতে পারে সে বেঁচে আছে, তখন তারা ফের হামলা করতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত যায়। রিমনের অপরাধ দুই দল কিশোরের মাঝে চলমান দ্বন্দ্ব মিমাংসা করে দেওয়া। একপক্ষ মানলেও অপরপক্ষ মিমাংসার বিষয়টি মন থেকে মানতে পারেনি। তারাই আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।

রিমনের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিমনকে ধারালো ছুরি দিয়ে মোট ছয়টি আঘাত করা হয়েছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি রিমনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

ঢাকায় রিমনের সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদা সুলতানা ইতু জানান, রাতেই রিমনের সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। এরপর তার অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, রিমনের পিঠের আঘাতগুলো গুরুতর। ছুরির আঘাত প্রায় ফুসফুস পর্যন্ত চলে এসেছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে জেলা শহরের বার্লিংটন মোড়ে একদল কিশোর রিমনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বার্লিংটন এলাকাটি কিশোর গ্যাংয়ের আখড়া। এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, হরিনারায়ণপুর স্কুল, সরকারি মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা যাতায়াত করে। প্রতিদিন তাদের উত্ত্যক্ত করা হয়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। প্রশাসনেরও নজরদারি নেই।

এদিকে, রিমনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার প্রতিবাদে তার স্কুলের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, স্কুলের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে রিমনের উপর যারা হামলা করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এজহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় আমাদের আরো অনুসন্ধান চলছে। সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অপরাধীদের খুব দ্রুতই আইনের আওতায় আনতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। 
 

ঢাকা/সুজন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্যেই সংস্কার রয়েছে, অচিরেই নির্বাচন দিন : সোহাগ
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ