৫২ ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি অপহৃত নয়ন, মুক্তিপণ দাবি
Published: 18th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নয়ন চন্দ্র দাস (২৬) নামে এক নববিবাহিত যুবককে অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা যায়নি। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কারও কাছে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। বাজার থেকে প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে নয়নকে অপহরণ করা হয়। আজ মঙ্গলবার অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অপহরণকারীদের দাবি, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নয়নকে নিরাপদে ফেরত দেওয়া হবে। তবে তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সন্তানকে ফিরে পেতে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ জোগাড় করলেও অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫২ ঘণ্টা। নয়ন দাসের পরিবারের এখন সময় কাটছে অজানা শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যে। শুধু নয়নের পরিবারই নয়, প্রতিবেশীসহ আশপাশের অনেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বিষ্ণু দেব জানান, নয়ন প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টার দিকে দোকান খুলে পূজা করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে দুই ব্যক্তি বাজারে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাদের কোমরে ওয়াকিটকি জাতীয় কিছু একটা ছিল।
বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল দাস বলেন, নয়নকে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৩০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি।
নয়নের পাশের দোকানি অপূর্ব দেবনাথও অপহরণের ঘটনার সাক্ষী। এরপর থেকেই পুরো বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কগ্রস্ত। ব্যবসায়ী হরিমন রায় জানান, নয়নের অপহরণের পর থেকে অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখেছেন। কেউ আসলেও সকালে না এসে দুপুরের দিকে আসছেন।
অপহরণ হওয়া নয়ন দাসের মা রত্না রানী দাস বলেন, গত রোববার সকালে আমার ছেলে দোকানে যেতে বের হয়েছিল, তারপর থেকেই তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। রাতে কিছু লোক ফোন করে জানায়, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে। কেউ কিছু জানতে পারলে নয়নকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করেছি, কিন্তু অপহরণকারীদের কোনো ফোন পাইনি। আমার ছেলেটা বেঁচে আছে কি না, তাও জানি না।
নয়নের চাচা সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো তাকে উদ্ধার করা যায়নি। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি, দ্রুত নয়নের সন্ধান চাই।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
প্রসঙ্গত, নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক বাজার থেকে গত রোববার (১৬ মার্চ) সকালে নয়ন দাসকে অপহরণ করা হয়। তিনি রামু চন্দ্র দাসের ছেলে। মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণক র দ র অপহরণ র নয়ন দ স ব যবস য় নয়ন র আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে হিন্দুপাড়ায় হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে হিন্দুপাড়ায় হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নূর-এ তামিম বলেন, ‘প্রতিবাদের নাম করে, মাইকিং করে আন্দোলনকারী জড়ো করে গঙ্গাচড়া এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫ থেকে ১৭টি বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট করা হলো। এরপর আমরা দেখলাম, আক্রমণের পর ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাঁদের দীর্ঘদিনের বসতবাড়ি রেখে নিজেদের এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আর এই ঘটনাগুলো ঘটছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সামনে, যেগুলো আমরা বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। এই ঘটনা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগজনক নয় বরং সব সাধারণ মানুষের জন্য এটা উদ্বেগপূর্ণ।’
শিক্ষার্থী নূর-এ তামিম আরও বলেন, ‘এই ইন্টেরিমের আমলে আমাদের সবার প্রত্যাশা ছিল এমন একটি বাংলাদেশ হবে, যেটা ধর্মীয় সম্প্রীতির ও সামাজিক সম্প্রীতির। কিন্তু এই সরকারের আমলে সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না। আমাদের দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার নামে রাজনৈতিকভাবে মব সৃষ্টি করে এ রকম ঘটনা যদি ঘটতেই থাকে, তাহলে আমাদের বলতে হয়, এ দেশে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান ঘটেছে, যেটা কোনোভাবেই ভালো দিকে যাচ্ছে না।’