ঈদের আগে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের বোনাস ছাড়াও চলতি মাসের কমপক্ষে ১৫ দিনের বেতন দিতে হবে বলে কারখানার মালিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে সুযোগ থাকলে ঈদের দুই-তিন দিন আগে ছুটি দিতে কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।

বিজিএমইএর মহাসচিব মো. ফয়জুর রহমান আজ মঙ্গলবার সংগঠনের সদস্য কারখানার মালিকদের এক নোটিশে জানিয়েছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে শ্রম পরিস্থিতি এবং শিল্প খাতের শ্রমিকদের মজুরি, বোনাস ও ছুটিসংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনার জন্য ৬ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৫তম সভা হয়। মালিক, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঈদের আগে পোশাকশিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের কমপক্ষে ১৫ দিনের মজুরি দিতে হবে। ফলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে কারখানার মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান সংগঠনের মহাসচিব।

বিজিএমইএর মহাসচিব পৃথক আরেকটি নোটিশে জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে সড়ক, রেল ও লঞ্চযাত্রায় একই দিন বাড়তি যাত্রীর চাপ কমানোর জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে ধাপে ধাপে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ফলে পণ্য জাহাজীকরণ (শিপমেন্ট), ক্রয়াদেশ ও উৎপাদনের সঙ্গে সমন্বয় করে সুযোগ থাকলে ঈদের দুই-তিন দিন আগে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে। শেষ কর্মদিবসে শ্রমিকেরা যাতে পণ্যবোঝাই ট্রাকে যাতায়াত না করেন, অতিরিক্ত যাত্রী না হন, অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কিছু না খাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে শ্রমিকদের সচেতন করতে কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে কাজের চাপ কম থাকলে ঈদের শেষ কর্মদিবসের আগেই ছুটি দিতে কারখানার মালিকদের পরামর্শ দিয়েছেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের ছুটির আগে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের (শিপমেন্ট) চাপ থাকে। সে জন্য অধিকাংশ কারখানা শেষ কর্মদিবসে ছুটি দেয়। তবে কারও সুযোগ থাকলে আগেই শ্রমিকদের ছুটির দেওয়ার অনুরোধ করেছি। পাশাপাশি ছুটির আগে ঈদ বোনাস এবং চলতি মাসের মজুরি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে যতটুকু সম্ভব ততটুকু পরিশোধ করতে মালিকদের পরামর্শ দিয়েছি আমরা।’

ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমইবি) ডিজিটাল মানচিত্র অনুযায়ী, দেশে ৩ হাজার ৫৫৫টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ৩০ লাখ ৫৩ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এই তারিখ ধরেই পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই হিসাবে ২৯ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের পাঁচ দিনের ছুটি। অর্থাৎ ২৯, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিল থাকবে এই ছুটি। এর মধ্যে ঈদের দিন সাধারণ ছুটি। আর ঈদের আগের দুই দিন এবং পরের দুই দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, নিহত ৭১

পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলা নিয়ে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মাঝেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে আবারও অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছেন সন্ত্রাসীরা। 

রোববার গভীর রাতে ওই সীমান্তে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৭ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। এক দিন আগেই একই সীমান্তে কমপক্ষে ৫৪ সন্ত্রাসীকে হত্যার দাবি করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।

সোমবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। সূত্র: জিও নিউজ।  

এতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী গত ২৫ ও ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত নর্থ ওয়াজিরিস্তান জেলার হাসান খেলের পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সফল অভিযান পরিচালনা করেছে। এই সীমান্তে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী কমপক্ষে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখাওয়া প্রদেশের নর্থ ওয়াজিরিস্তান জেলার হাসান খেল সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে ওই সন্ত্রাসীরা নিহত হয়েছেন।

দেশটির সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর বলেছে, আগের অভিযানের ধারাবাহিকতায় রোববার রাতেও নর্থ ওয়াজিরিস্তান জেলার হাসান খেলের আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর আগের দুদিনের অভিযানে ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। এরপর রোববার ও সোমবারের অভিযানে নতুন করে আরও ১৭ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তানের আইএসপিআর বলেছে, গত দুই রাতের অভিযান পরিচালনার সময় আরও ১৭ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন; যারা ‘‘তাদের ভারতীয় প্রভুদের নির্দেশে কাজ করছিলেন।’’ 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। গত তিন দিনে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত সন্ত্রাসীদের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জনে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে, রোববার পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশের এই চেষ্টা এমন এক সময়ে ঘটেছে, যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে ভারত। এতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে, সন্ত্রাসীরা কাদের নির্দেশ পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের করছে। এই ধরনের পদক্ষেপ রাষ্ট্র ও এর নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। প্রতিবেশী দুই দেশের এই সীমান্তের বিশাল অংশ উন্মুক্ত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় প্রায় অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার সীমান্তে দিয়ে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৮ সন্ত্রাসী নিহত হন।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস স্কলারশিপে আবেদনের সময় বৃদ্ধি, আইএলটিএসে ৬.৫ অথবা টোয়েফলে ৮৪ হলে আবেদন
  • বাস্তবায়িত হোক শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ
  • ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করেছে ৬৮% কারখানা 
  • সুদানের এল-ফাশারে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ৪১ বেসামরিক
  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে চান?
  • পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টার আহ্বান
  • পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, ৩ দিনে নিহত ৭১
  • পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সংঘর্ষ, নিহত ৭১
  • ১৬ পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করল ভারত, বিবিসিকে কড়া বার্তা