ব্র্যাক ব্যাংক ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি পাবেন চবির ৩০০ নারী শিক্ষার্থী
Published: 19th, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ এবং কলা ও মানবিক অনুষদের ৩০০ জন নারী শিক্ষার্থীকে ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি দেবে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ১৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শিক্ষাবৃত্তি চালু করে ব্যাংকটি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মিলিনায়তনে এক চুক্তি-স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শিক্ষাবৃত্তির কার্যক্রম শুরু হয়। ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ব্যাংকটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব ট্রেজারি অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস মো.
অনুষ্ঠানে প্রফেসর কাদির ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “এই বৃত্তি কার্যক্রমটি আর্থিক সহায়তার চাইতেও বেশি কিছু। ব্র্যাক ব্যাংকের এই উদ্যোগ আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে; আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে, তাদের আরো বড় স্বপ্ন দেখতে শেখাবে এবং তাদের শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে সাফল্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”
ব্র্যাক ব্যাংকের এই উদ্যোগের বিষয়ে মো. শাহীন ইকবাল মন্তব্য করেন, “ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি যে, নারীশিক্ষায় বিনিয়োগ মানে দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ। ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তির মাধ্যমে আমরা শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান জেন্ডার-বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে কোনো শিক্ষার্থী যাতে পিছিয়ে না পড়ে, সেটিও নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কম। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এটি ৪০ শতাংশেরও কম। এই বৈষম্য অনুধাবন করে ব্র্যাক ব্যাংক শুধুমাত্র নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তার জন্য ‘অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি প্রোগ্রামটি চালু করে।
‘অপরাজেয় তারা’ হলো নারী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যাত্রায় ব্র্যাক ব্যাংকের ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর উদ্যোগ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এই শিক্ষাবৃত্তি চালু রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়াও, ২০১১ সাল থেকে প্রথম আলো ট্রাস্টের সাথে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে আসছে ব্র্যাক ব্যাংক। বর্তমানে এই শিক্ষাবৃত্তির সুবিধাভোগীর সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি।
একটি মূল্যবোধ-নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের সিএসআর উদ্যোগগুলোকে এমনভাবে কাজে লাগাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা আর্থিক এবং সামাজিক বাধা দূর করে সবার জন্য সুযোগ তৈরি করে দেবে, যাতে প্রত্যেকে নিজ সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে অর্থপূর্ণ জীবন যাপনের সুযোগ পান।
ঢাকা/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই শ ক ষ ব ত ত আর থ ক অপর জ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।