আব্দুল আলিম ও সাইফুল ইসলাম। দুইজনই দিনমজুরি করে সংসার চালান। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে তারাবি নামাজ শেষে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন দুই পরিবারের সদস্যরা। মধ্যরাতে হঠাৎ করেই আগুন লাগে আব্দুল আলিমের ঘরে। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে সাইফুল ইসলামের ঘরেও।

আগুনে পুড়ে যায় দুইজনের ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সবকিছুই। পুড়ে যায় তিনটি ছাগল। শুধু তাই নয়, বেড়াতে এসে দগ্ধ হন আব্দুল আলিমের খালা শাহিদা খাতুন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এলাকার মানুষ। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।

আরো পড়ুন:

ঘুমন্ত বিএনপি কর্মীর ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে আগুন, পুড়ে গেছে এক একর বনাঞ্চল

এদিকে, আগুনের সংবাদ পেয়ে বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দুই পরিবারের হাতে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। ইউএনওর এমন মানবিক আচরণে মুগ্ধ এলাকার মানুষ। ভূয়সি প্রংশসায় ভাসছেন ইউএনও।

তাৎক্ষণিক ইউএনওর সহযোগিতা পেয়ে কেঁদে ফেলেন আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, ‘চোরে চুরি করলেও কিছু রেখে যায়। আগুনে পুড়লে কিছুই থাকে না। কোথায় থাকব, কী খাব এমন চিন্তা যখন করছিলাম, তখন ইউএনও স্যার এসে পাশে দাঁড়ালেন। এর আগেও আমাদের এলাকায় অনেকের বাড়িতেই আগুন লেগেছে, কিন্তু কখনোই কোনো ইউএনওকে আসতে দেখিনি। আমরা ভাগ্যবান, আমাদের মতো গরিব মানুষের বাড়িতে স্যার (ইউএনও) এসে সহযোগিতা করে গেলেন।"

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‍“আমি শুধু ইউএনও-ই নই, একজন মানুষও। আমি ওই দুই পরিবারের ঘর পুড়ে যাওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি মানুষ হিসেবে তাদের বাড়িতে গিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাতক্ষণিক কিছু সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। আবেদন করতে বলেছি, আরও কিছু সহযোগিতা দেওয়ার জন্য।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন সহয গ ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী

অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।

গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।

আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগে

গতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।

ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’

সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।

আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার
  • পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী