মহাকাশফেরত সুনিতা ও বুচের শরীরে কী কী প্রভাব পড়তে পারে
Published: 20th, March 2025 GMT
মার্কিন নভোচারী সুনিতা উইলিয়াম ও বুচ উইলমোর। ৮ দিনের অভিযানে মহাকাশে গিয়েছিলেন তারা। তবে মহাকাশযানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৯ মাস সেখানে অবস্থান করতে বাধ্য হন তারা। গত মঙ্গলবার পৃথিবীতে ফিরেছেন। এই দীর্ঘ সময় সেখানে কীভাবে জীবনধারণ করেছেন তারা আর পৃথিবীতে ফেরার পর শারীরিক কেমন পরিবর্তন ঘটতে পারে তাদের- বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন কিছু তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানব শরীর সাধারণত পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে কাজ করে অভ্যস্ত। ফলে মহাকাশে ভরহীন অবস্থায় সময় কাটানো শেষে পৃথিবীতে ফেরার পর নভোচারীর শরীর পুরোপুরি সেরে উঠতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
মানবদেহ নিয়ে গবেষণা করেন সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডামিয়ান বেইলি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মানুষকে যেসব পরিবেশের সম্মুখীন হতে হয়েছে, তার মধ্যে মহাকাশের পরিবেশ সবচেয়ে কঠিন। এই চরম অবস্থা সামলানোর ক্ষেত্রে মানুষ অভ্যস্ত নয়। মহাকাশে প্রবেশ করলে মানুষের শরীরে পরিবর্তন আসে। প্রাথমিকভাবে সে অনুভূতিকে অসাধারণ মনে হয়।
২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে গিয়েছিলেন নভোচারী টিম পিক। তিনি বলেন, এটা ছুটির দিনের মতো। হৃৎপিণ্ড ঢিলেঢালাভাবে কাজ করলেই হবে। পেশি ও হাড়গুলো বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হয় না। অসাধারণ শূন্য-মাধ্যাকর্ষণের পরিবেশে মহাকাশকেন্দ্রের চারপাশে আপনি ভেসে বেড়াবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাকাশে মানুষের হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালিগুলোর তেমন একটা কাজ থাকে না। অলস অবস্থায় থাকতে থাকতে এগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। পুরোনো হাড় ভেঙে নতুন হাড় গঠনে ভূমিকা রাখা কোষগুলোর মধ্যে ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করতে গিয়ে এগুলোর ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে। হাড়গুলো দুর্বল ও বেশি ভঙ্গুর হয়ে যায়। প্রতি মাসে তাঁদের হাড় ও পেশির প্রায় ১ শতাংশ শুকিয়ে যায়। এতে বার্ধক্য ত্বরান্বিত হয়। পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ক্যাপসুল থেকে বের হয়ে এসে স্ট্রেচারে ওঠার মতো কাজ নভোচারীরা একা একা করতে পারেননি। তাদের অন্যের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে হয়েছে। আর এসব কারণে নভোচারীদের অনেক ভালো রকমের শারীরিক অবস্থা নিয়ে মহাকাশে যেতে হয়। এখন সুনিতা ও বুচকে তাদের শরীরের হারিয়ে যাওয়া কার্যক্ষমতা ফিরে পেতে জোরেশোরে শরীরচর্চা করতে হবে।
মহাকাশে যাওয়া প্রথম ব্রিটিশ নভোচারী হেলেন শারমান বলেন, তাদের পেশির ভর তৈরি করতে সম্ভবত কয়েক মাস সময় লাগবে। হাড়ের ভর ঠিক করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। তবে তা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় নাও ফিরতে পারে। শুধু পেশি আর হাড়ই নয়, মহাকাশে পুরো শরীরেই বদল আসতে পারে। মানুষের শরীরে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার ধরন বদলে যায়। শরীরের তরল পদার্থগুলোর ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসে। পৃথিবীর মতো পায়ের দিকে না নেমে মহাকাশে তরল পদার্থ বুক ও মুখের দিকে ওপরে উঠে যায়। মহাকাশ থেকে ফেরার পর মানুষের শরীরে প্রথম যে পরিবর্তনটি চোখে পড়ে তা হলো, মুখ ফুলে যাওয়া।
তিনি আরও বলেন, মহাকাশে মস্তিষ্কে পরিবর্তন আসতে পারে। অপটিক নার্ভ, রেটিনাসহ চোখে বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি চোখের আকারও বদলে যেতে পারে। মহাকাশযাত্রার ক্ষেত্রে নিউরো–অকুলার সিন্ড্রোম নামক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এতে চোখে ঝাপসা দেখাসহ অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার পর শরীর খাপ খাওয়াতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
টিম পিকস বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ঝিমুনি ভাব, শরীরের ভারসাম্য আনা এবং স্বাভাবিকভাবে হাঁটার শক্তি ফিরে পেতে দুই-তিন দিন সময় লেগে যেতে পারে। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার প্রথম দুই-তিনটা দিনকে অত্যন্ত সাজাপূর্ণ বলে মনে হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ র র পর ক জ কর অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে চার আসন বহালের দাবিতে নতুন কর্মসূচি
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। আগামী শুক্র ও শনিবার (১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর) গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং রবি ও সোমবার (২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর) জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অর্ধদিবস অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা এম এ সালাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এম এ সালাম বলেছেন, “বাগেরহাটের চারটি আসন অক্ষুণ্ন রাখার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, তবে জনগণের দাবি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
এর আগে আসন কমানোর প্রতিবাদে জেলা জুড়ে হরতাল, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে।
ঢাকা/শহিদুল/রফিক