রেকর্ড গতিতে গলছে হিমবাহ, কী বিপদ হতে পারে
Published: 21st, March 2025 GMT
বিশ্বের হিমবাহগুলো আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে গলে যাচ্ছে। গত তিন বছরে রেকর্ড পরিমাণে হিমবাহ গলতে দেখা গেছে। আজ শুক্রবার জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটির বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড গ্লেসিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের পরিচালক মাইকেল জেম্প বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত বিশ্বের হিমবাহগুলো থেকে ৯ হাজার গিগাটন পরিমাণ বরফ গলেছে। এ পরিমাণ বরফকে একসঙ্গে করলে জার্মানির আয়তনের সমান এবং ২৫ মিটার পুরুত্বের একটি বরফখণ্ড তৈরি করবে।
আর্কটিক থেকে আল্পস, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে তিব্বতীয় মালভূমি পর্যন্ত নাটকীয়ভাবে বরফ গলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরফ গলার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে এবং নির্ভরযোগ্য পানির উৎস কমে গিয়ে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক সমস্যা দেখা দেবে।
বিশ্বের প্রথম হিমবাহ দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ইউনেসকো। এতে বিশ্বজুড়ে হিমবাহগুলোর সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
জেম্প বলেছেন, গত ছয় বছরের মধ্যে পাঁচ বছরই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হিমবাহ গলার ঘটনা ঘটেছে। শুধু ২০২৪ সালেই হিমবাহের ভর ৪৫০ গিগাটন কমেছে।
পার্বত্য হিমবাহগুলো দ্রুত গলার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। এতে লাখ লাখ মানুষ ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকিতে পড়ছে।
পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ১১০ কোটি মানুষের ওপর হিমবাহ গলার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে।
গত বুধবার প্যারিসে ইউনেসকোর সদর দপ্তরের বাইরে রয়টার্সকে হিমবাহ বিশেষজ্ঞ এইদি সেভেস্ত্রে বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আমরা যে পরিবর্তন দেখেছি তা আক্ষরিক অর্থে হৃদয়বিদারক। নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে এসব ঘটনা আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক দ্রুত ঘটছে।’
সেভেস্ত্রে উগান্ডার রোয়েনজোরি মাউন্টেনস এলাকা এবং পূর্ব আফ্রিকার ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গোতে তাঁর সাম্প্রতিক সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এসব অঞ্চলে ২০৩০ সাল নাগাদ হিমবাহগুলো নাই হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউনেসকোর নতুন প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, হিমবাহ গলার কারণে পূর্ব আফ্রিকায় পানিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংঘাত বেড়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে এসব ঘটনার প্রভাব সামান্য হলেও বিশ্বজুড়ে হিমবাহ গলে যাওয়ার এ প্রবণতা ক্রমেই জটিল প্রভাব ফেলছে।
২০০০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পার্বত্য হিমবাহ গলার কারণে বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৮ মিলিমিটার বেড়েছে। অর্থাৎ বছরে প্রায় ১ মিলিমিটার করে বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড গ্লেসিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের তথ্য বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিলিমিটার বাড়লে তিন লাখ মানুষ বার্ষিক বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে।
আরও পড়ুনবিশ্বে উদ্বেগজনক গতিতে গলছে হিমবাহ, কী হতে পারে২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
‘দাগি’ সিনেমা দেখতে টাঙ্গাইলে অস্থায়ী হল তৈরি করছেন নিশো ভক্তরা
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নেই কোনো সিনেমা হল। তাই প্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো অভিনীত সিনেমা দেখার তীব্র আগ্রহ ও ভালোবাসায় আবারো অস্থায়ী সিনেমা হল তৈরি করছেন তার স্থানীয় ভক্তরা। সেখানে এবার প্রদর্শিত হবে নিশো অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘দাগি’। ভক্তদের ভালোবাসার টানে নিজ এলাকায় যাবেন আফরান নিশো।
শুক্রবার (২ মে) থেকে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের দোতলায় ৭ দিনব্যাপী প্রদর্শিত হবে আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রতিদিন ৪টি করে শো চলবে। প্রথম শো শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অস্থায়ী সিনেমা হল নির্মাণে কাজ করছেন একদল যুবক। জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোকে ভালোবেসে গত বছর ‘সুরঙ্গ’ সিনেমার জন্য অস্থায়ী হল নির্মাণ করেছিলেন তারা। এবারো সেই ভালোবাসা থেকেই ‘দাগি’ সিনেমা প্রদর্শনের জন্য নির্মাণ করছেন প্রেক্ষাগৃহ।
আরো পড়ুন:
প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা
নায়ক রুবেলের মৃত্যু গুজব: সোহেল রানার হুঁশিয়ারি
নিশো ভক্ত তন্ময় বলেন, “আফরান নিশো আমাদের এলাকার সন্তান। তার জন্য আমাদের অগাধ ভালোবাসা। তার অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’ দেখার জন্য এখানে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটা সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভূঞাপুরের মানুষ যেন নিশো ভাইয়ের সিনেমা দেখতে পারেন, তার জন্যই এই আয়োজন। আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি সিনেমাটি দেখার জন্য।”
বিশেষ চমক হলো— এই আয়োজনে অংশ নিতে নিজ এলাকাতেই যাবেন আফরান নিশো। প্রিয় নায়কের আগমন আর সিনেমা প্রদর্শনকে ঘিরে ইতোমধ্যে উৎসাহের জোয়ার বইছে ভূঞাপুরে।
ভক্তদের আয়োজনে নির্মিত অস্থায়ী এই সিনেমা হলটি তৈরি হচ্ছে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে। বিশাল স্ক্রিন ও উন্নত সাউন্ড সিস্টেমসহ আধুনিক সুবিধার এই আয়োজন স্থানীয়দের মাঝে এক ভিন্ন আবেগ সৃষ্টি করেছে।
আয়োজক কমিটির সদস্য হাদী চকদার বলেন, “ভূঞাপুরে স্থায়ী হল না থাকলেও আমরা চেয়েছি নিশো ভাইয়ের ‘দাগি’ সিনেমাটি সবাই মিলে একসঙ্গে দেখতে। তিনি আমাদের গর্ব, আমাদের এলাকার সন্তান। তাই এবারো আমরা তাকে দাওয়াত দিয়েছি এবং তিনি আসছেন। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি।”
ভক্তদের আয়োজনে একজন অভিনয়শিল্পীর সরাসরি অংশগ্রহণ, অস্থায়ী হলেও একটি হল নির্মাণ এবং সিনেমা দেখার এই উৎসব— ভূঞাপুরে যেন নতুন করে সিনেমাপ্রেমের আলো জ্বেলে দিচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরে ঈদকে কেন্দ্র করে নির্মিত সিনেমাগুলো নিয়েই অধিক আলোচনা ও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরে বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। শিহাব শাহীন পরিচালিত এ সিনেমায় নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা।
ঢাকা/কাওছার/শান্ত