জুমে যুক্ত হচ্ছে নতুন এআই ফিচার, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
Published: 21st, March 2025 GMT
নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ‘এআই কম্প্যানিয়ন’ চ্যাটবটে নতুন ফিচার যুক্ত করতে যাচ্ছে জনপ্রিয় ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ্লিকেশন জুম। নতুন এ উদ্যোগের আওতায় শিগগিরই চ্যাটবটটিতে ‘এজেন্টিক এআই’ ফিচার যুক্ত করা হবে। ব্যবহারকারীদের কাজের ধরন শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কাজ করে দেবে ফিচারটি। এর ফলে ব্যস্ত থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইনে বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন জুম ব্যবহারকারীরা।
জুমের তথ্যমতে, নতুন ফিচারটি জুম ওয়ার্কপ্লেসের ‘টাস্কস’ ট্যাবে পাওয়া যাবে। এর ফলে সহজেই ফিচারটি চালু করে অনলাইন বৈঠকের সময় নির্ধারণ, আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও ভিডিও ক্লিপ তৈরি করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। এ বিষয়ে জুমের প্রধান পণ্য কর্মকর্তা স্মিতা হাশিম বলেন, ‘এআইকে প্রতিটি পণ্য ও যোগাযোগের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যাতে এটি ব্যবহারকারীদের জন্য আরও কার্যকর ও সহায়ক হয়ে ওঠে। আমাদের এআই কম্প্যানিয়ন এখন প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে, যা সহজ ও কার্যকর অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।’
আরও পড়ুনজুম সভায় স্ক্রিন শেয়ার করবেন যেভাবে০৫ নভেম্বর ২০২৩এআই কম্প্যানিয়নের পাশাপাশি জুম ওয়ার্কপ্লেসে আরও নতুন ফিচার যুক্ত হচ্ছে, যার মধ্যে ভয়েস রেকর্ডার অন্যতম। ফিচারটি অনলাইন বৈঠকের তথ্য ধারণ করে লিখিত আকারে সংরক্ষণ করবে এবং মূল বিষয়বস্তু সংক্ষেপে উপস্থাপন করবে। এ ছাড়া ‘লাইভ নোটস’ নামের আরও একটি ফিচার যুক্ত হচ্ছে, যা জুম বৈঠক ও ফোনকলের রিয়েল টাইম সারসংক্ষেপ তৈরি করে দেবে।
এআই কম্প্যানিয়ন ফিচারটি আগামী মাসে চালু হবে। প্রতি মাসে ১২ ডলারের বিনিময়ে ব্যবহার করা যাবে ফিচারটি। বেশ কিছু অ্যাভাটারের টেমপ্লেট যুক্ত থাকায় ফিচারটি কাজে লাগিয়ে সহজেই নিজেদের প্রয়োজনমতো কাস্টম অ্যাভাটার তৈরি করা যাবে।
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর
সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।
তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।
রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।
সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।
তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান