সেতুর ৪০ শতাংশ কাজ করে ঠিকাদার লাপাত্তা
Published: 21st, March 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ-কাটাগাড়ী আঞ্চলিক সড়কের উত্তর ওয়াপদা বাঁধ-সংলগ্ন এলাকায় সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু অর্ধেকের কম কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাপাত্তা হয়ে গেছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী চারটি ইউনিয়নের হাজারও বাসিন্দা। যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় নাটোরের সিংড়া ও বগুড়ার শেরপুরের সঙ্গে তাড়াশের একাংশের যোগাযোগে বেগ পেতে হচ্ছে এলাকার মানুষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেতুর নির্মাণকাজ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ করার কথা ছিল। কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ। এরপর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর থেকে কয়েকবার কাজ শেষ করতে তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে। এতেও ভ্রুক্ষেপ নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ফলে প্রায় আড়াই মাস ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বৃষ্টির মৌসুম আসছে। সেতুর এক পাশে পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ রেখে সাময়িক চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হলে উজান থেকে পানি এলে বিস্তীর্ণ বোরো ফসলের হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যাবে। তখন নির্মাণকাজ করাও সম্ভব হবে না। এভাবে চললে আরও একটি শুষ্ক মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান বেত্রাশিন গ্রামের কলেজশিক্ষক মেহেরুল ইসলাম।
উপজেলা এলজিইডি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে তাড়াশ-কাটাগাড়ি জিসি সড়কের উত্তর ওয়াপদা বাঁধ-সংলগ্ন ৩৩২ মিটার চেইনেজ ও ২০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা। নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইথেন এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড অ্যান্ড ডন এন্টারপ্রাইজ (জেভি) কাজটি পায়। এ প্রতিষ্ঠান কাজটি না করে নাটোরের বাগাতিপাড়ার ঠিকাদার মো. ওয়াহিদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দেয়।
গত বছরের জানুয়ারি মাসে সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এত দিনে পাইলিংয়ের কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। সর্বশেষ আড়াই মাস ধরে ঠিকাদার ওয়াহিদুল ইসলাম কাজটি বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়ে যান। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ভারী বা মাঝারি যানবাহন এ সড়ক দিয়ে তাড়াশে ঢুকতে বা বের হতে পারছে না।
ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার সেরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু সাইদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অস্থায়ী সড়ক দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এর দু’পাশে বেশ উঁচু, মাঝে নিচু। তুলনামূলক সরু সড়কের ঢালুতে নামার সময় অটোভ্যানের ব্রেক কাজ করে না। উঁচুতে ওঠার সময় ভ্যান থেকে লোকজন নামিয়ে খালি গাড়ি টেনে তুলতে হয়।
এ সড়কে একসঙ্গে দুটি ভ্যান চালানো যায় না। সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় ভ্যান, অটোরিকশাসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহনের চালকরা অসুবিধায় আছেন বলে জানান কাটাগাড়ী গ্রামের অটোরিকশাচালক মো. কাওছার হোসেন। তিনি বলেন, এতে আয়েও টান পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল ফকিরের ভাষ্য, সাময়িক চলাচলে সড়কে বহু গাড়ি উল্টে গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। লোকজনের বিপদ দেখে দু’পাশে বাঁশ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জায়গাটি অরক্ষিত রেখে পালিয়েছে।
নির্মাণকাজের বিল পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ জন্য সেতুর নির্মাণকাজ ঠিক সময়ে শেষ করা যাচ্ছে না।
কাজ শেষ করতে এক মাসে ঠিকাদারকে দুটি তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, তাড়িতাড়ি নির্মাণকাজ শেষ করতে বললেও তিনি কাজ শুরু করছেন না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ শ ষ কর ল ইসল ম ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
সারা দেশে সাত দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৮৮
ঢাকাসহ সারা দেশে বিগত সাত দিনে অভিযান চালিয়ে ২৮৮ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় তাঁদের আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, ককটেলসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীনের ইউনিট এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, অবৈধ অস্ত্রধারী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদকাসক্তসহ ২৮৮ জনকে আটক করা হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৪টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৬টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ২টি ককটেল, ৩টি ম্যাগাজিন, মাদকদ্রব্য, বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র, চোরাই মালামাল ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাঁদের সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।