ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে চলবে ১৭ ফেরি ও ২২ লঞ্চ
Published: 22nd, March 2025 GMT
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বারখ্যাত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট। ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষকে প্রায় প্রতিবছর দুর্ভোগ পোহাতে হয় এখানে। আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ফেরি ও লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ নানা প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া। এ পথ দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ও হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। ঈদসহ নানা উৎসবে যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় নানা দুর্ভোগ। এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর ঝড়ের মৌসুমে হওয়ায় কিছুটা চিন্তার ভাঁজ আছে সংশ্লিষ্টদের কপালে। তাই ঈদ সামনে রেখে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষ বাড়তি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
জানা যায়, পদ্মা সেতু চালুর আগে ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন দৌলতদিয়া প্রান্ত দিয়ে ৫ থেকে ৭ হাজার যানবাহন পদ্মা নদী পারাপার হলেও সে সংখ্যা এখন কমে এসেছে অর্ধেকে। বর্তমানে দৌলতদিয়া প্রান্তের সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে সচল রয়েছে তিনটি (৩, ৪ ও ৭ নম্বর) ঘাট এবং পাশাপাশি লঞ্চ ঘাট।
বর্তমানে এই রুট দিয়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার ছোট-বড় যানবাহন নদী পারাপার হলেও ঈদে এই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়
কয়েক গুণ। স্বাভাবিক সময়ে এই নৌপথে ১২টি ফেরি ও ২০টি লঞ্চ চলাচল করে। আসন্ন ঈদে অতিরিক্ত যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে এবার এই নৌপথে চলাচল করবে ছোট-বড় ১৭টি ফেরি ও ২২টি লঞ্চ।
এদিকে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকাসহ সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, মলম পার্টি, যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। মৌসুমি টিকিট কাউন্টার ও অবৈধ যানবাহনেও থাকবে নজরদারি। এ ছাড়া ঘাট এলাকার সড়কে অতিরিক্ত বাতি স্থাপন করে আলোর স্বল্পতা দূর করা হবে।
দৌলতদিয়া ঘাট সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সরোয়ার হোসেন জানান, ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পর্যাপ্ত যানবাহন থাকবে। তবে ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে। আবহাওয়া খারাপ হলে যাত্রীরা সাধারণত লঞ্চে যাতায়াত করেন না। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেরি সচল রাখতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতু চালুর আগে ভোগান্তি থাকলেও দৌলতদিয়ায় এখন তা নেই। ঘাট কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে এবার ঈদে কোনো ভোগান্তি হবে না বলে আশা করছেন তারা। ছিনতাই, মলম পার্টিসহ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর এখন আর আগের মতো ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। তবে ঈদের সময় যাত্রী ও যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দিতে সব ফেরি ঠিকভাবে চালালে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবেন। কিন্তু এবার তিনটি ফেরিঘাটে চাপ সামলাতে পারবে না। কারণ একটি ফেরি আনলোড হয়,
আরেকটি এসে অপেক্ষা করে। এ অবস্থায় ঘাটে পন্টুন খালি না থাকলে সময়মতো যাত্রীদের আনা-নেওয়া করা যাবে না।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট ম্যানেজার আবুল হাশেম বলেন, ঈদে যাত্রী সুষ্ঠুভাবে পারাপারে তাদের এই রুটে ২২টি লঞ্চ চলাচল করবে। প্রতিটি লঞ্চের ফিটনেস ঠিক আছে। ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সতর্কতার মাধ্যমে লঞ্চ চলাচল করা হবে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ইতোমধ্যে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এবারের ঈদে অতীতের চেয়ে আরও ভালোভাবে মানুষ গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, আসন্ন ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে তারা ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। ঝড়ের মৌসুম হওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকলেও তা কাটিয়ে ওঠার জন্য তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ করতে বাড়িতে যেতে ও ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শরীফ আল রাজীব বলেন, ঈদে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ ও যানবাহন দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসা-যাওয়া করেন। সেদিক বিবেচনায় ঈদের আগে-পরে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন এবং যাত্রী হয়রানি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মলম পার্টি রোধে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ন র ব ঘ ন করত ঝড় র ম স ম প রস ত ত ব যবস থ দ লতদ য় ঈদয ত র ছ নত ই হওয় য়
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।