জুলাইয়ের নৃশংসতার প্রতিটি ঘটনা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার পিএইচডি ফেলো খন্দকার রাকিব। আজ সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই অভিমত দেন তিনি।

বাংলাদেশে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক বছর ধরে গবেষণা করেছেন খন্দকার রাকিব। তিনি বলেন, জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন বাংলায় অনূদিত হওয়ায় ভিকটিমরা (ভুক্তভোগীরা) তাঁদের ভাষায় নিপীড়নের এ ঘটনা পড়তে পারবেন।

জাতিসংঘ সীমিত পরিসরে তথ্যানুসন্ধান করেছে উল্লেখ করে গবেষক খন্দকার রাকিব বলেন, জুলাইয়ের নৃশংসতার প্রতিটি ঘটনা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত। আওয়ামী লীগ জুলাইয়ে যে নিপীড়ন চালিয়েছে, সেটাকে তারা বিদ্যমান আইনে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

জুলাইয়ে কিছু কিছু বিচারকের ভূমিকার সমালোনা করে খন্দকার রাকিব বলেন, সে সময় গুম, হত্যা, আহত করার পাশাপাশি ১১ হাজার ৭০০ জনকে ভুয়া মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের অনেককে রাত একটায় আদালত বসিয়ে জেলে পাঠিয়েছিলেন ওই বিচারকেরা। সেই বিচারকদের এখনো শনাক্ত করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘যাদের জেলে পাঠানো হয়েছিল, তাদের অনেকে ছিল অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং ৪৫ শতাংশের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না। ১৬ বছরের ছেলেকে বয়স বাড়িয়ে শাস্তিযোগ্য করে তোলা হয়েছিল। অনেক বিচারক বাচ্চাদের রাজাকারের বাচ্চা বলা থেকে শুরু করে নানাভাবে হিউমিলিয়েট (অবমাননা) করেছিলেন।’

এসব ঘটনায় জুডিশিয়ারি কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, জুডিশিয়ারি এসব বিচারকদের শনাক্ত করে একটা উদাহরণ তৈরি করতে পারত।

আলোচনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাইখ মাহদি বলেন, ‘আমাদের আইনে পলিটিক্যাল এনটিটি (রাজনৈতিক সত্তা) হিসেবে কাউকে নিষিদ্ধ করা যায় না। ইতিহাসে এ রকম একটি ঘটনা আছে সেটি হলো জার্মানিতে নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা। এরপর রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া ও যুগোস্লাভিয়ার গণহত্যায় কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার উদাহরণ নেই। ইনডিভিজ্যুয়ালের (ব্যক্তির) অপরাধের বিচার ট্রাইব্যুনাল করে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র মালিহা নামলাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পদ্ধতিই এমন ছিল যে সে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে টিকে থাকবে। সে দলের বিচার ছাড়া, ক্ষমা চাওয়া ছাড়া তারা আবার রাজনীতিতে ফিরে আসবে, সেটা জুলাইয়ের বিপ্লবীদের জন্য দুঃস্বপ্ন।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক হাসান ইনাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনের বাংলা সংস্করণের দাম রাখা হয়েছে ২০০ টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর তদন ত কর র জন ত ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘দাগি’ সিনেমা দেখতে টাঙ্গাইলে অস্থায়ী হল তৈরি করছেন নিশো ভক্তরা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নেই কোনো সিনেমা হল। তাই প্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো অভিনীত সিনেমা দেখার তীব্র আগ্রহ ও ভালোবাসায় আবারো অস্থায়ী সিনেমা হল তৈরি করছেন তার স্থানীয় ভক্তরা। সেখানে এবার প্রদর্শিত হবে নিশো অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘দাগি’। ভক্তদের ভালোবাসার টানে নিজ এলাকায় যাবেন আফরান নিশো।

শুক্রবার (২ মে) থেকে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের দোতলায় ৭ দিনব্যাপী প্রদর্শিত হবে আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রতিদিন ৪টি করে শো চলবে। প্রথম শো শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অস্থায়ী সিনেমা হল নির্মাণে কাজ করছেন একদল যুবক। জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোকে ভালোবেসে গত বছর ‘সুরঙ্গ’ সিনেমার জন্য অস্থায়ী হল নির্মাণ করেছিলেন তারা। এবারো সেই ভালোবাসা থেকেই ‘দাগি’ সিনেমা প্রদর্শনের জন্য নির্মাণ করছেন প্রেক্ষাগৃহ।

আরো পড়ুন:

প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা

নায়ক রুবেলের মৃত্যু গুজব: সোহেল রানার হুঁশিয়ারি

নিশো ভক্ত তন্ময় বলেন, “আফরান নিশো আমাদের এলাকার সন্তান। তার জন্য আমাদের অগাধ ভালোবাসা। তার অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’ দেখার জন্য এখানে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটা সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভূঞাপুরের মানুষ যেন নিশো ভাইয়ের সিনেমা দেখতে পারেন, তার জন্যই এই আয়োজন। আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি সিনেমাটি দেখার জন্য।”

বিশেষ চমক হলো— এই আয়োজনে অংশ নিতে নিজ এলাকাতেই যাবেন আফরান নিশো। প্রিয় নায়কের আগমন আর সিনেমা প্রদর্শনকে ঘিরে ইতোমধ্যে উৎসাহের জোয়ার বইছে ভূঞাপুরে।

ভক্তদের আয়োজনে নির্মিত অস্থায়ী এই সিনেমা হলটি তৈরি হচ্ছে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে। বিশাল স্ক্রিন ও উন্নত সাউন্ড সিস্টেমসহ আধুনিক সুবিধার এই আয়োজন স্থানীয়দের মাঝে এক ভিন্ন আবেগ সৃষ্টি করেছে।

আয়োজক কমিটির সদস্য হাদী চকদার বলেন, “ভূঞাপুরে স্থায়ী হল না থাকলেও আমরা চেয়েছি নিশো ভাইয়ের ‘দাগি’ সিনেমাটি সবাই মিলে একসঙ্গে দেখতে। তিনি আমাদের গর্ব, আমাদের এলাকার সন্তান। তাই এবারো আমরা তাকে দাওয়াত দিয়েছি এবং তিনি আসছেন। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি।”

ভক্তদের আয়োজনে একজন অভিনয়শিল্পীর সরাসরি অংশগ্রহণ, অস্থায়ী হলেও একটি হল নির্মাণ এবং সিনেমা দেখার এই উৎসব— ভূঞাপুরে যেন নতুন করে সিনেমাপ্রেমের আলো জ্বেলে দিচ্ছে।

গত কয়েক বছর ধরে ঈদকে কেন্দ্র করে নির্মিত সিনেমাগুলো নিয়েই অধিক আলোচনা ও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরে বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। শিহাব শাহীন পরিচালিত এ সিনেমায় নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা।

ঢাকা/কাওছার/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ