‘জুলাইয়ের নৃশংসতার প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত করা উচিত’
Published: 24th, March 2025 GMT
জুলাইয়ের নৃশংসতার প্রতিটি ঘটনা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার পিএইচডি ফেলো খন্দকার রাকিব। আজ সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই অভিমত দেন তিনি।
বাংলাদেশে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে কয়েক বছর ধরে গবেষণা করেছেন খন্দকার রাকিব। তিনি বলেন, জাতিসংঘের এ প্রতিবেদন বাংলায় অনূদিত হওয়ায় ভিকটিমরা (ভুক্তভোগীরা) তাঁদের ভাষায় নিপীড়নের এ ঘটনা পড়তে পারবেন।
জাতিসংঘ সীমিত পরিসরে তথ্যানুসন্ধান করেছে উল্লেখ করে গবেষক খন্দকার রাকিব বলেন, জুলাইয়ের নৃশংসতার প্রতিটি ঘটনা নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করা উচিত। আওয়ামী লীগ জুলাইয়ে যে নিপীড়ন চালিয়েছে, সেটাকে তারা বিদ্যমান আইনে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
জুলাইয়ে কিছু কিছু বিচারকের ভূমিকার সমালোনা করে খন্দকার রাকিব বলেন, সে সময় গুম, হত্যা, আহত করার পাশাপাশি ১১ হাজার ৭০০ জনকে ভুয়া মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের অনেককে রাত একটায় আদালত বসিয়ে জেলে পাঠিয়েছিলেন ওই বিচারকেরা। সেই বিচারকদের এখনো শনাক্ত করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘যাদের জেলে পাঠানো হয়েছিল, তাদের অনেকে ছিল অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং ৪৫ শতাংশের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না। ১৬ বছরের ছেলেকে বয়স বাড়িয়ে শাস্তিযোগ্য করে তোলা হয়েছিল। অনেক বিচারক বাচ্চাদের রাজাকারের বাচ্চা বলা থেকে শুরু করে নানাভাবে হিউমিলিয়েট (অবমাননা) করেছিলেন।’
এসব ঘটনায় জুডিশিয়ারি কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, জুডিশিয়ারি এসব বিচারকদের শনাক্ত করে একটা উদাহরণ তৈরি করতে পারত।
আলোচনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাইখ মাহদি বলেন, ‘আমাদের আইনে পলিটিক্যাল এনটিটি (রাজনৈতিক সত্তা) হিসেবে কাউকে নিষিদ্ধ করা যায় না। ইতিহাসে এ রকম একটি ঘটনা আছে সেটি হলো জার্মানিতে নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা। এরপর রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া ও যুগোস্লাভিয়ার গণহত্যায় কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার উদাহরণ নেই। ইনডিভিজ্যুয়ালের (ব্যক্তির) অপরাধের বিচার ট্রাইব্যুনাল করে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র মালিহা নামলাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পদ্ধতিই এমন ছিল যে সে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে টিকে থাকবে। সে দলের বিচার ছাড়া, ক্ষমা চাওয়া ছাড়া তারা আবার রাজনীতিতে ফিরে আসবে, সেটা জুলাইয়ের বিপ্লবীদের জন্য দুঃস্বপ্ন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক হাসান ইনাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনের বাংলা সংস্করণের দাম রাখা হয়েছে ২০০ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর তদন ত কর র জন ত ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।