হজ খুব ব্যয়বহুল ইবাদত। হজে প্রচণ্ড ভিড় হয় এবং সেখানে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। ফলে অনেকেই অভিযোগ করেন যে, সৌদি সরকার হজের অভিভাবক হিসেবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না। ফলে কোরআন ও ইসলামি শিক্ষা অনুসারে মুসলমানদের ধৈর্য ধারণ করার বিকল্প নাই। একই সঙ্গে হজ পালনের সময় আসা অনিবার্য চ্যালেঞ্জ ও কষ্ট সম্পর্কে অভিযোগ না করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।

কেন এই পরিবর্তন

 হজ এমন একটি ইবাদত, যা প্রত্যেক সক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জীবনে একবার করা ফরজ। এটা যেমন অনন্য ও আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা, একই সঙ্গে মানসিক, আবেগীয় ও শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জিং একটি ইবাদত। ফলে নানান দিকে বিবেচনা করে সৌদি আরব হজের নিয়মে নতুন কিছু পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। যদিও নতুন এই নিয়ম দেশের ভ্রমণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও কঠোরতা নিয়ে এসেছে, বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে। সেই সঙ্গে তারা ২০২৫ সালের হজের জন্য নতুন বুকিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করছে, যা আগামী জুনের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে। এসব পরিবর্তন প্রথমদিকে কিছুটা বিভ্রান্তিকর মনে হলেও, বাস্তবতা হলো—এগুলো শুধু যৌক্তিকই নয়, বরং ২০২৪ সালের ব্যাপক প্রাণহানির পর অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

 ২০২৪ সালের হজের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল তীব্র গরম, তবে অনুমতি ছাড়া বিপুলসংখ্যক হজযাত্রীর উপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছিল। মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, সৌদি সরকার এখন নতুন নীতিমালা কার্যকর করছে, যার অধীনে ১৪টি এশীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশের মুসলমানদের জন্য ভ্রমণের সময়সীমা এক বছর থেকে কমিয়ে ৩০ দিনে সীমিত করা হয়েছে, যাতে অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশাধিকারের পরিমাণ হ্রাস পায়।

আরও পড়ুনহজ করতে গিয়ে মক্কা মদিনায় হারিয়ে গেলে কী করবেন০৮ মে ২০২৪

নিরাপত্তা বেড়েছে, চ্যালেঞ্জ আছে

সৌদি ভিসা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, অতীতে বহু মানুষ একাধিক ভিসা ব্যবহার করে সৌদি আরবে প্রবেশ করতেন এবং পরে অবৈধভাবে হজ পালন করতেন। ফলস্বরূপ, এটি ব্যাপক ভিড় ও নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করত বলে ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে জানানো হয়।

এই বছর আরেকটি নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে, যেখানে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের হজে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ভিড় কমানোর পাশাপাশি শিশুদের এমন পরিবেশ থেকে দূরে রাখার জন্য যেখানে বিপুল জনসমাগমের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে নির্দিষ্ট বিধি মেনে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে হয়।

 পরিবর্তন কতটা যৌক্তিক

 ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা সাবা তারিক জানান, তার স্বামী ও উভয় পরিবারের বোনদের নিয়ে হজ সম্পন্ন করেন। তবে তারিক তার কিশোর সন্তানদের বাড়িতেই রেখে যান। তিনি বলেন, ‘হজ শিশুদের এবং বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত কঠিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে এক পরিবার ছিল, যেখানে দাদা-দাদি ও ৮-১০ বছর বয়সী শিশুরা ছিল। মুজদালিফা, প্রচণ্ড গরমের কারণে সেই পরিবারের দাদা মারা যান। বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য চরম গরম ছিল ভয়ানক কষ্টকর।’

 তবে সবাই এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকে না। অনেক বাবা-মা চাইলেও তাদের সন্তানদের রেখে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন না, আবার কেউ কেউ চান পরিবারসহ হজ পালন করতে।

 নিঃসন্দেহে এই নতুন নিয়মকানুন কিছুটা কষ্টকর। তবে হজ এমন একটি ইবাদত, যা কখনোই সহজ ছিল না। সৌদি সরকার ক্রমাগত হজের বিভিন্ন অংশের লজিস্টিকস উন্নত করার চেষ্টা করছে এবং নতুন নিয়ম চালু করছে, যাতে এটি আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হয়। একদিকে এটি মুসলিমদের জন্য একটি অনন্য, আধ্যাত্মিকভাবে পরিপূর্ণ, অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে এটি অত্যন্ত ক্লান্তিকর এবং চ্যালেঞ্জিং এক ধর্মীয় দায়িত্ব।

 সূত্র: রিলিজিওন নিউজ

আরও পড়ুনহজ ২০২৫: কোন প্যাকেজে কত খরচ৩০ অক্টোবর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র জন য পর ব র নত ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ৩২১ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-মার্চ) ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ডলার। সেই হিসেবে এ বছর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এমনকি চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে গত অর্থবছরের কাছাকাছি ঋণের সুদাসল পরিশোধ হয়ে গেছে।

বিদেশি ঋণ-অনুদান পরিস্থিতির ওপর গতকাল বুধবার প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিদেশি ঋণ বাবদ পরিশোধের মধ্যে আসলের পরিমাণ ২০১ কোটি ডলার। সুদ বাবদ ১২০ কোটি ডলার পরিশোধ হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ২৫৭ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে ৬৪ কোটি ডলার বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে।

ইআরডির একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আগ্রাসী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পরিণাম চিন্তা না করে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারের তারতম্য বাড়াসহ নানা কারণে এখন বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। 

চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে দেশে মোট প্রায় ৪৮১ কোটি ডলার সমপরিমাণ বিদেশি ঋণ-অনুদান এসেছে। এ সময়ে ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়েছে অর্থছাড়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান। এদিকে গত জুলাই-মার্চ সময়ে ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গতবারের একই সময়ে পাওয়া প্রতিশ্রুতির অর্ধেকের কম।

গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৭২৪ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল। জুলাই-মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি ১২২ কোটি ডলার ছাড় করেছে এডিবি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ১০৭ কোটি ডলার ও জাপান ৮৯ কোটি ডলার দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা
  • আইন সংশোধন করে কি ঠেকানো যাবে ইন্টারনেট বন্ধ
  • ম্যারিকোর ১ হাজার ৯৫০ শতাংশ চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অর্থনীতির আকারে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দশম
  • ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • সিটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা