মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে পুরোপুরি প্রস্তুত সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ইতোমধ্যে সৌধ মিনারসহ পুরো চত্বরের হাঁটার পথ, বেদি, স্থাপনা সেজেছে রঙ-তুলির আঁচড়ে। বাগানগুলোতে শোভা পাচ্ছে রঙ-বেরংয়ের বাহারি ফুল।

বুধবার (২৬ মার্চ) ৫৫তম মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করবে সারা দেশ। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পালন করা হবে নানা কর্মসূচি। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির যে বীর সন্তানেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে সমগ্র জাতি। 

এদিন সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষের ঢল নামবে স্মৃতিসৌধে।

স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন উপলক্ষে স্মৃতিসৌধ এলাকায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে স্মৃতিসৌধ চত্বরে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। ইটের পথ, শহীদ বেদি ও গণকবর ধোয়ামোছার পর সাদা রঙের শুভ্র আভায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা। বৃক্ষরাজির প্রাঙ্গণ আর সবুজ ঘাসের গালিচা কেটে-ছেঁটে নান্দনিক করে তোলার কাজও শেষ করেছেন গণপূর্তের কর্মচারীরা।

স্মৃতিসৌধ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান,  ২৬ মার্চ (বুধবার) স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ। ফুল, শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁরা। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের লক্ষে নানাভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ।

গত রবিবার স্মৃতিসৌধ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভার গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা। এদের মধ্যে কয়েকজন মিলে সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘাসের চারা রোপণ করছেন। স্মৃতিসৌধ চত্বর পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে, রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বেদিসংলগ্ন সিঁড়িগুলো। সবুজ ঘাসের গালিচা কেটেছেঁটে নান্দনিক করে তোলা হচ্ছে। পুরোনো ফুলের গাছগুলোকে পরিচর্যা করার পাশাপাশি রোপণ করা হয়েছে নানা জাতের ফুলের গাছ। ভবনের দেয়ালে ঝোলানো হয়েছে বর্ণিল আলোকবাতি। 

স্মৃতিসৌধ চত্বরে ফুলের চারা রোপণ করা আব্দুল মতিন বলেন, “স্মৃতিসৌধে শহীদদের কবর রয়েছে। এটি দেশের স্বাধীনতার স্মৃতি স্তম্ভ। এখানে কাজ করতে আমার কাছে ভালোই লাগে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে কাজ করতেছি।”

সবুজ ঘাসের গালিচা কেটেছেঁটে নান্দনিক করার কাজ করা রওশন মিয়া বলেন, “ঘাস কেটে, ফুলের চারা লাগিয়ে স্মৃতিসৌধ সুন্দর করতেছি। এখানে কাজ করতে গর্ব হয়, ভালো লাগে।”

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে পুরো স্মৃতিসৌধ চত্বর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার-পরিপাটি করা হয়েছে। এছাড়া পুরো চত্বরে ফুল দিয়ে সাজানো, রং তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আলোকসজ্জা, লেক সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা এ কার্যক্রমে শতাধিক কর্মী কাজ করেছেন । নিরাপত্তার লক্ষ্যে গত ১৬ মার্চ থেকে স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংরক্ষিত করা হয়েছে। ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্মৃতিসৌধ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।” 

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো.

শাহীনুর কবির বলেন, “মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের লক্ষে প্রায় ৪ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সাভার উপজেলার আমিন বাজার থেকে শুরু করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়ককে ১২ টা সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। সেক্টর অনুসারে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এই পুরো এলাকাটি নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। ২৬ মার্চ ভোর সাড়ে ৫ টা থেকে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে এই মহাসড়কে দিয়ে চলাচলকারী গাড়ি না ছাড়ার জন্য পরিবহন মালিকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে। সকাল সাড়ে ৭ টার পর মহাসড়কের এই অংশটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এই সময়ে পরিবহন চালকদের প্রতি বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ থাকবে।”

ঢাকা/সাব্বির/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২৬ ম র চ প রস ত ত গণপ র ত উপলক ষ ক জ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকালে ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।

গতকাল সোমবার এসবির এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটি পুলিশের সব বিভাগকে পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে এসবি। এসবির একটি সূত্র প্রথম আলোকে এই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠনগুলো ১ জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের সময়কাল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শক্তি অনলাইন-অফলাইনে প্রচারণা চালিয়ে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির কর্মসূচিতে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাতে পারে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন বিভাগকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে এসবি।

নির্দেশনাগুলো হলো ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা। ৮ আগস্ট পর্যন্ত নিয়মিত সন্দেহজনক ব্যক্তিসহ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন তল্লাশি করা। বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল অভিযান পরিচালনা করা। মোবাইল প্যাট্রোল জোরদার করা। গুজব রোধে সাইবার পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা।

এ ছাড়া কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসবিকে অবহিত করার কথাও বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
  • ২৯ জুলাই-৮ আগস্ট ‘ফ্যাসিবাদী শক্তির’ নৈরাজ্যের আশঙ্কায় এসবির সতর্কতা
  • ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট সময়কালে ফ্যাসিবাদী শক্তি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে, এসবির প্রতিবেদন