৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। গত নভেম্বরে কমিশনের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই খাতা দেখা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, এই পরীক্ষার খাতা দেখতে আর কত সময় নেবে পিএসসি।

জানতে চাইলে পিএসসির একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তৃতীয় পরীক্ষকের তালিকা করাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটা করতে একটু সময় লেগেছে। কারণ, কে দক্ষ আর কার গ্রহণযোগ্যতা আছে বেশি, সেটা নিরূপণ করতে হয়েছে। এখন খাতা দেখার বেশ অগ্রগতি আছে। দ্রুত এসব খাতা দেখার কাজ চলমান। তবে কবে নাগাদ শেষ হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

গত বছরের নভেম্বরে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পিএসসি জানায়, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলমান এবং দ্বিতীয় পরীক্ষক কর্তৃক মূল্যায়নের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে নতুন কমিশন সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের নিকট প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

পিএসসি জানায়, নবনিয়োগপ্রাপ্ত কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও আটজন সদস্য কমিশনের সভায় ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সন্দেহসংক্রান্ত সব বিষয় গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হয়। কমিশন উল্লিখিত পরীক্ষাগুলোর স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করে।

আরও পড়ুনবিসিআইসি নেবে ১০২ জন, আবেদন করুন দ্রুত১৯ ঘণ্টা আগে

২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি। গত বছরের ৬ জুন প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১২ হাজার ৭৮৯ জন। লিখিত পরীক্ষা এ বছরের ২৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে চলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আবেদনকারী ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। পরীক্ষা দেননি ৭৮ হাজার ৮০৩ জন। উপস্থিতির হার ৭৭ দশমিক ২৪।

আরও পড়ুনবিসিআইসিতে বড় নিয়োগ, পদ ৬৮৯২১ মার্চ ২০২৫

৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জন। ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ ক্যাডারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হবে চিকিৎসায়। সহকারী ও ডেন্টাল সার্জন মিলিয়ে ৫৩৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। চিকিৎসার পর সবচেয়ে বেশি শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পাবেন ৪৩৭ জন। এরপর পুলিশে ৮০, কাস্টমসে ৫৪ ও প্রশাসনে ২৭৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনচীনের সেরা ১০ স্কলারশিপ: টিউশন ফি মওকুফ-আবাসন-চিকিৎসার সঙ্গে মিলবে মাসিক ভাতাও২৬ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ ত য় পর ক পর ক ষ র প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ