নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫৪ কিলোমিটার সড়কে ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মিশুক, রিকশা ও সিএনজিচালিত যানবাহন। তবে যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ কঠোর ভূমিকায় আছে বলে জানায় জেলা পুলিশ। 

এদিকে, ঢাকা-মহাসড়কে ছয় লেন প্রকল্পের কাজের জন্য দূরপাল্লার যানবাহনের যাত্রীর ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকা মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনগুলোকে একরকম বাধ্য হয়ে মহাসড়কে চলাচল করতে দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এর মধ্যে নরসিংদীর ভেলানগর, ইটাখোলা, মরজাল, বারৈচা, মাধবদীসহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ডগুলোতে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মিশুক, রিকশা ও সিএনজিচালিত তিন চাকার যানবাহন। অটোরিকশাচালকরা মহাসড়ক বন্ধ করে যাত্রী ওঠা-নামা করছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ।

যাত্রীরা বলেন, মহাসড়কে এখন শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ অবৈধ অটোরিকশা। তাদের কোনোভাবে গতিরোধ করা যাচ্ছে না। 

আরিয়ান নামে এক যাত্রী জানান, তার ভাই-বোন মাধবদী শহরে থাকেন। তাদের নিতে এখানে এসেছেন। পথজুড়ে শুধু অটোরিকশা। ট্রাফিককে যেন তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে। 

আরমান নামে সিলেটগামী যাত্রী জানান, গুলিস্তান থেকে প্রথমে মাধবদী নেমেছেন। তারপর জরুরি কাজ সেরে এখন সিলেটের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। এখানে দাঁড়িয়ে অটোরিকশার যন্ত্রণায় পাগল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।

দূরপাল্লার কাউন্টার সার্ভিসের সুপারভাইজার রাকিবুল ইসলাম বলেন, “সকাল থেকেই যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি দেখছি। তবে মহাসড়কে অটোরিকশার কারণে আমাদের গাড়িগুলো গতিরোধ করে আসতে হয়। এতে যাত্রীদেরও ভোগান্তি হচ্ছে।”

জেলখানা মোড়ে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তোফায়েল আহমেদ বলেন, “আগের তুলনায় ট্রাফিক পুলিশের সার্ভিস দ্বিগুণ। রাত-দিন সময় দেওয়া হচ্ছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। সবাইকে আইনের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।”

পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান বলেছেন, “কর্মমুখী মানুষ যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি গিয়ে ঈদ করতে পারে, সেজন্য ট্রাফিক পুলিশকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সড়কে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলাব্যাপী নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৫৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৪৪ কিলোমিটার সড়কে ছয় লেন প্রকল্পের কাজ চলমান। এতে ভোগান্তি নেই বলে জানিয়েছেন নরসিংদীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

রেজা-ই-রাব্বি।

তিনি বলেন, “ঢাকা-থেকে পুরিন্দার পর পাঁচদোনা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার নতুন বাইপাস হচ্ছে। আর বাকি ৪৪ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্পে কাজ চলমান। এর মধ্যে ভেলানগর-ইটাখোলা, বাসাইল, শিবপুর, বেলাব ও রায়পুরার বিভিন্ন অংশে মহাসড়কে কাজ চলছে। ঈদ ঘিরে আমাদের ভ্রাম্যমাণ দল মাঠে কাজ করছে। ইতোমধ্যে সড়কের পাশ দখল করে রাখা ফুটপাতগুলো সড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব জায়গায় সড়কের সোলিংয়ে সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে।”

ঢাকা/হৃদয়/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ