বাঙালি বা বাংলাদেশের সমাজে গর্ভধারণ করা নারীকে আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানানোর ঘটনা সচরাচর চোখে পড়ে না। ‘ভয়েড অ্যান্ড ব্লিডিং’ চলচ্চিত্রটির প্রথম সংলাপ, ‘কনগ্রাচুলেশন ফর ইয়োর প্রেগন্যান্সি’। যেন অন্য কোনো সমাজের ছবি।
ভয়েড অ্যান্ড ব্লিডিং—১৬ মিনিটের এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এর পরিচালক ফাহমিদা জামান সুইডেনের স্টকহোম সিটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা নারী চলচ্চিত্র নির্মাতার সম্মান পেয়েছেন। রাশিয়ার মস্কো ইনডাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শব্দে সেরা পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও ভারতের কেরালা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে। এটি ফ্লোরার প্রথম চলচ্চিত্র।

কাহিনিটি পরিচিত গণ্ডির বাইরের। বলা যায় গণ্ডি পেরিয়ে। নারী সে উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্ত যে স্তরেরই হোক অবহেলা তার পায়ে-পায়ে। রাজধানীর গুলশানে স্বামীকে নিয়ে চাকচিক্যের মধ্যে থাকলেও শ্রেয়ার জীবন বাংলাদেশের যেকোনো শ্রেণির নারীর মতোই। গর্ভধারণ শ্রেয়ার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। স্বামীর সময় অল্প, ব্যস্ততা বেশি। মন খারাপ, শরীর খারাপ বা অন্য কোনো কারণে ফোন করলেই ওপার থেকে আওয়াজ আসে, সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ম্লানমুখে, শূন্যতার মধ্যে দিন কাটে।

জটিলতা আরও প্রকট হয়ে চোখে পড়ে শ্রেয়ার এক গোপন সম্পর্কের দৃশ্য। সামিরা নামের এক নারীর সঙ্গে বিয়ের আগেই তার সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও সে সম্পর্ক পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ইউরোপ-আমেরিকায় এই সম্পর্কের দৃশ্য দর্শকে উদ্বিগ্ন করে না। সাধারণ বাঙালি সমাজও অন্য পুরুষের সঙ্গে শ্রেয়ার সম্পর্ক জেনে কপালে চোখ তোলা হয়তো বন্ধ করেছে। তবে উচ্চবিত্ত বাঙালি সমাজে পরিচালকের দেখানো সম্পর্ক কতটা স্বাভাবিক হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে হয়তো।

গর্ভবতী শ্রেয়ার জার্নিটা বেশ জটিল। অবসরে কাছে থাকে পোষা বিড়াল। বড় আদরের বিড়ালটিও একসময় চোখের আড়াল হয়। বিড়ালটির ছবি দেখা যায় ম্যাগাজিনে। ক্যাট লাইফ—এমন দৃশ্য দেখিয়ে শেষ হয় চলচ্চিত্র। কথা বা সংলাপ খুবই কম।
স্বল্পদৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্র দেশের কোথাও এখনো দেখানো হয়নি। এপ্রিল বা মে মাসের কোনো এক সময় কিছুটা জাঁকজমক করে প্রথম প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে পরিচালকের।
ফাহমিদা জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার গর্ভধারণের ছয় মাসের সময় শুটিং হয়। কাহিনি আমার। আমি নিজে যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তার কিছুটা প্রতিফলন আছে এতে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা

মানজু রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক ব্যতিক্রমধর্মী খাবার আয়োজন, যেখানে দেশি স্বাদের সাথে ছিল আন্তর্জাতিক রান্নার কৌশল ও উপকরণ। আয়োজনে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রন্ধনশিল্পী ইনারা জামাল, যিনি ফুড স্টাডিজে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন, নিউইয়র্ক থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

ইনারা জামাল বলেন, ‘খাবার শুধু স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। আমি চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভিন্ন দেশের উপকরণ ও কৌশলের সঙ্গে মিশিয়ে বিশ্বদরবারে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে। সৃজনশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাবারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। একইসঙ্গে, তার লক্ষ্য বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গবেষণার আলোয় তুলে ধরা, যেন এই সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারে তিনি সবসময় প্রাধান্য দেন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান এবং টেকসই উপস্থাপনাকে।

এই আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে রন্ধনশিল্পী মালিহার বাহারি পরিবেশনা, যেখানে দেশি উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নানান স্বাদের সুস্বাদু খাবার।

আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং ভোজনরসিকদের সামনে এক নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পরিবেশনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জলবায়ু সংকট ন্যায়বিচার সংশ্লিষ্ট সংকটও বটে: প্রধান বিচারপতি
  • ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা
  • পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন