মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে জার্মান স্টার্টআপ
Published: 28th, March 2025 GMT
জার্মানির একটি স্টার্টআপ মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে, যা খেতে সুস্বাদু হবে। আরেক স্টার্টআপ একটি সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে, যেটি দিয়ে গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা যাবে। এই দুই স্টার্টআপের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে ইউরোপে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপটির নাম ‘গ্রিনহাব’। এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ইয়াভরস্কি জানান, তাঁদের লক্ষ্য বিশ্বের সবার জন্য তাজা খাবার নিশ্চিত করা।
বার্লিনের স্টার্টআপ ‘এসেনসিয়া ফুডস’ মাংসের বিকল্প তৈরি করছে। ‘সলিড-স্টেট ফার্মেন্টেশন’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে মাশরুমের শিকড় মাইসেলিয়াম থেকে এই বিকল্প মাংস তৈরি করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা হেন্ডরিক কায়ে বলেন, ‘আমরা বলছি, সবার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকা দরকার। সব পরিবার যেন এটা পেতে পারে, এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের মানুষও যেন পায়।’
এসেনসিয়া ফুডসের আরেক প্রতিষ্ঠাতা আর্জেন্টিনার ব্রুনো স্কোকোসা। বায়োফিজিকসে পিএইচডি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি একজন শেফও। মাশরুম দিয়ে মাংসের একটি ভালো বিকল্প তৈরি করতে চান স্কোকোসা। কারণ, বর্তমানে যে ভেগান বিকল্প পাওয়া যায়, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন।
স্কোকোসা বলেন, ‘উদ্ভিদভিত্তিক যেসব বিকল্প আছে, তার অনেকটির সমস্যা হচ্ছে। সেগুলোতে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, যেটা খেতে সুস্বাদু নয়। তাই ওই স্বাদে পরিবর্তন আনতে অনেক মসলা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমরা এমন কিছু ব্যবহার করছি না, যেটার স্বাদ পরিবর্তন করতে হবে।’
ক্লারা কোম্পানির একজন খাদ্যবিজ্ঞানী। তিনি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেমন এই ভেগান ড্যোনার কাবাব। সামান্য মসলা ছিটানোর পরই এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।
ক্লারা বলেন, এটি আসলে বহুমুখী। বিভিন্ন ধরনের পণ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সসেজ হিসেবে খাওয়া যায়। এ ছাড়া ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এমন সব খাবার, যেমন কিমা করা মাংস, কাবাবের স্ট্রিপ—যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন, মুরগির টুকরা ইত্যাদি হিসেবেও খাওয়া যায়।
গাছের স্বাস্থ্য রক্ষায় সফটওয়্যারজলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে লাইপজিগের স্টার্টআপ গ্রিনহাব। খরা ও অতি বৃষ্টির কারণে ঘরে জন্মানো সবজির কোনো সমস্যা হয় না। তবে গ্রিনহাব একটি সফটওয়্যার তৈরি করছে, যা দিয়ে এসব সবজির বৃদ্ধির ওপর নজর রাখা যায়।
গ্রিনহাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা কাই প্লাট জানান, সফটওয়্যারটা আসলে মালির মতো কাজ করে। এটা গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখে। পুষ্টির মাত্রার মতো পানির প্যারামিটার থেকে শুরু করে এটি গাছের সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করে থাকে।
তবে সফটওয়্যারটি এখনো অভিজ্ঞ মালির মতো হয়ে উঠতে পারেনি। সে কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে চায় গ্রিনহাব। তাই এখন গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন এমন সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যেমন আলো, পুষ্টি ও আর্দ্রতার সঠিক মাত্রা কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি।
গ্রিনহাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াভরস্কি বলেন, ‘এগুলো বেশ জটিল প্রক্রিয়া। কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে আসে। যেমন গাছ হয়তো ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনটা হলে কী করতে হবে, সেই সমাধান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।’
তারপরও জার্মানির দুটি বড় গবেষণা সংস্থা গ্রিনহাবের সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন উদ্ভিদের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা জানতে এটি ব্যবহার করতে চায় তারা। এসেনসিয়া ফুডসের মাংসের বিকল্পের প্রতিও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একটি জার্মান সুপারমার্কেট চেইন ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই কোম্পানিটি এখন উৎপাদন বৃদ্ধির পথ খুঁজছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর সফটওয় য র স র ব কল প ব কল প ত র স ট র টআপ র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
উইন্ডোজের দুটি ‘জিরো ডে’ নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করল মাইক্রোসফট
জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি মূলত সফটওয়্যারের দুর্বলতা। নিজেদের তৈরি সফটওয়্যারে ত্রুটি শনাক্ত হলে দ্রুত সমাধান করে নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্ত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্যাঁচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে এমনই দুটি জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়ার পর তড়িঘড়ি করে সেগুলোর সমাধান করে জুন আপডেট উন্মুক্ত করেছে মাইক্রোসফট।
মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, জুন আপডেটে দুটি জিরো ডে ত্রুটিসহ মোট ৬৬টি নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করা হয়েছে। প্রথম জিরো ডে ত্রুটিটি ছিল মাইক্রোসফট উইন্ডোজের ওয়েব ডিসট্রিবিউটেড অথরিং অ্যান্ড ভার্সন সেবায়। দ্বিতীয় জিরো ডে ত্রুটিটি ছিল উইন্ডোজের এসএমবি (সার্ভার মেসেজ ব্লক) ক্লায়েন্ট প্রযুক্তিতে। সিভিই-২০২৫-৩৩০৫৩ এবং সিভিই-২০২৫-৩৩০৭৩ নামের ত্রুটিগুলো কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একটি জিরো ডে ত্রুটি ইতিমধ্যে সাইবার হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে। আর তাই দ্রুত নিরাপত্তা হালনাগাদটি ব্যবহার করতে হবে।
মাইক্রোসফটের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ত্রুটিগুলোর মধ্যে ২৫টি রিমোট কোড এক্সিকিউশন, ১৩টি এলিভেশন অব প্রিভিলেজ, ১৭টি তথ্য ফাঁস, ৩টি নিরাপত্তা বাইপাস, ৬টি ডিনায়াল অব সার্ভিস এবং ২টি স্পুফিং ঘরানার ত্রুটি ছিল। আর তাই এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা এসব ত্রুটির কারণে সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট রিসার্চ জানিয়েছে, গত মার্চে তুরস্কের একটি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা করার সময় উইন্ডোজের জিরো ডে ঘরানার প্রথম ত্রুটিটি শনাক্ত করা হয়। বিষয়টি মাইক্রোসফটকে জানালে প্রতিষ্ঠানটি সেটিকে সিভিই-২০২৫-৩৩০৫৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এবং ১০ জুন নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্ত করেছে।
সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার