জার্মানির একটি স্টার্টআপ মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে, যা খেতে সুস্বাদু হবে। আরেক স্টার্টআপ একটি সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে, যেটি দিয়ে গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা যাবে। এই দুই স্টার্টআপের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে ইউরোপে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপটির নাম ‘গ্রিনহাব’। এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ইয়াভরস্কি জানান, তাঁদের লক্ষ্য বিশ্বের সবার জন্য তাজা খাবার নিশ্চিত করা।

বার্লিনের স্টার্টআপ ‘এসেনসিয়া ফুডস’ মাংসের বিকল্প তৈরি করছে। ‘সলিড-স্টেট ফার্মেন্টেশন’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে মাশরুমের শিকড় মাইসেলিয়াম থেকে এই বিকল্প মাংস তৈরি করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা হেন্ডরিক কায়ে বলেন, ‘আমরা বলছি, সবার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকা দরকার। সব পরিবার যেন এটা পেতে পারে, এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের মানুষও যেন পায়।’

এসেনসিয়া ফুডসের আরেক প্রতিষ্ঠাতা আর্জেন্টিনার ব্রুনো স্কোকোসা। বায়োফিজিকসে পিএইচডি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি একজন শেফও। মাশরুম দিয়ে মাংসের একটি ভালো বিকল্প তৈরি করতে চান স্কোকোসা। কারণ, বর্তমানে যে ভেগান বিকল্প পাওয়া যায়, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন।

স্কোকোসা বলেন, ‘উদ্ভিদভিত্তিক যেসব বিকল্প আছে, তার অনেকটির সমস্যা হচ্ছে। সেগুলোতে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, যেটা খেতে সুস্বাদু নয়। তাই ওই স্বাদে পরিবর্তন আনতে অনেক মসলা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমরা এমন কিছু ব্যবহার করছি না, যেটার স্বাদ পরিবর্তন করতে হবে।’

ক্লারা কোম্পানির একজন খাদ্যবিজ্ঞানী। তিনি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেমন এই ভেগান ড্যোনার কাবাব। সামান্য মসলা ছিটানোর পরই এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

ক্লারা বলেন, এটি আসলে বহুমুখী। বিভিন্ন ধরনের পণ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সসেজ হিসেবে খাওয়া যায়। এ ছাড়া ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এমন সব খাবার, যেমন কিমা করা মাংস, কাবাবের স্ট্রিপ—যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন, মুরগির টুকরা ইত্যাদি হিসেবেও খাওয়া যায়।

গাছের স্বাস্থ্য রক্ষায় সফটওয়্যার

জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে লাইপজিগের স্টার্টআপ গ্রিনহাব। খরা ও অতি বৃষ্টির কারণে ঘরে জন্মানো সবজির কোনো সমস্যা হয় না। তবে গ্রিনহাব একটি সফটওয়্যার তৈরি করছে, যা দিয়ে এসব সবজির বৃদ্ধির ওপর নজর রাখা যায়।

গ্রিনহাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা কাই প্লাট জানান, সফটওয়্যারটা আসলে মালির মতো কাজ করে। এটা গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখে। পুষ্টির মাত্রার মতো পানির প্যারামিটার থেকে শুরু করে এটি গাছের সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করে থাকে।

তবে সফটওয়্যারটি এখনো অভিজ্ঞ মালির মতো হয়ে উঠতে পারেনি। সে কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে চায় গ্রিনহাব। তাই এখন গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন এমন সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যেমন আলো, পুষ্টি ও আর্দ্রতার সঠিক মাত্রা কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি।

গ্রিনহাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াভরস্কি বলেন, ‘এগুলো বেশ জটিল প্রক্রিয়া। কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে আসে। যেমন গাছ হয়তো ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনটা হলে কী করতে হবে, সেই সমাধান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।’

তারপরও জার্মানির দুটি বড় গবেষণা সংস্থা গ্রিনহাবের সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন উদ্ভিদের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা জানতে এটি ব্যবহার করতে চায় তারা। এসেনসিয়া ফুডসের মাংসের বিকল্পের প্রতিও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একটি জার্মান সুপারমার্কেট চেইন ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই কোম্পানিটি এখন উৎপাদন বৃদ্ধির পথ খুঁজছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর সফটওয় য র স র ব কল প ব কল প ত র স ট র টআপ র জন য র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

লাইটবার খুলে পড়ার আশঙ্কায় টেসলার সাইবারট্রাকের ১০ শতাংশ গাড়ি প্রত্যাহার

আবারও বাজার থেকে সাইবারট্রাক ফিরিয়ে নিচ্ছে টেসলা। এবার এর কারণ সফটওয়্যার নয়, সরাসরি যান্ত্রিক ত্রুটি। যুক্তরাষ্ট্রে ৬ হাজার ১৯৭টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহারের বা রিকলের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনএইচটিএসএ) তথ্য অনুযায়ী, এসব গাড়ির সামনের লাইটবার খুলে পড়ে সড়কে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ মডেলের কিছু সাইবারট্রাকে লাইটবার বসানোর সময় ভুল ধরনের ‘সারফেস প্রাইমার’ ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে আঠালো সংযোগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সহজভাবে বললে, টেসলা কিছু গাড়িতে লাইটবার লাগাতে ভুল আঠা ব্যবহার করেছিল। যেসব গাড়িতে এই ত্রুটি রয়েছে, সেগুলোর লাইটবার পরীক্ষা করে দেখা হবে। প্রয়োজনে নতুনভাবে লাইটবার বসানো হবে। সবই গ্রাহকদের জন্য বিনা খরচে। প্রায় ৬ হাজার ২০০টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহার মানে টেসলার বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির প্রায় ১০ শতাংশই সমস্যাগ্রস্ত।

এর এক সপ্তাহ আগেই আরও একটি বড় ত্রুটির কারণে ৬৩ হাজার ৬১৯টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তখন দেখা যায়, গাড়ির সামনের পার্কিং লাইট অতিরিক্ত উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় তা সামনের দিক থেকে আসা গাড়ির চালকদের দৃষ্টিকে ব্যাহত করতে পারে। তবে সেই সমস্যা সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। টেসলার সাইবারট্রাক নিয়ে একের পর এক প্রত্যাহার এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এর অনেক সমস্যাই হার্ডওয়্যার–সংক্রান্ত, যেগুলো দূর থেকে সফটওয়্যার আপডেট দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়।

সূত্র: ম্যাশেবল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিটা প্রকল্প যথাযথ পরিমার্জনের আহ্বান
  • লাইটবার খুলে পড়ার আশঙ্কায় টেসলার সাইবারট্রাকের ১০ শতাংশ গাড়ি প্রত্যাহার