পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হয়েছে গত ২৬ মার্চ থেকে। এবার ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় ধাপে ধাপে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। বিশেষ করে বেসরকারি চাকরিজীবী যারা গতকাল অফিস শেষ করে রাজধানী ছাড়তে পারেননি তারা আজ সকাল থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। 

আজ শুক্রবার সায়েদাবাদ ও ধোলাইপাড় এবং যাত্রবাড়ী বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে যাত্রী উপস্থিতি স্বাভাবিক। তবে বেলা ১০টর পর থেকে যাত্রী উপস্থিতি কিছুটা বাড়তে থাকে। প্রিয়জনের সাথে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে পরিবার নিয়ে যাত্রীদের বাস কাউন্টারগুলোর সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। রোজা রেখে প্রচণ্ড গরমে অনেককে এ সময় অস্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। 

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ‘রয়েল’ ও ‘স্টার লাইন’ কাউন্টারের সামনে দেখা গেছে, ফেনী-কুমিল্লাগামী যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন। যারা টিকিট পাননি তারা দাঁড়িয়ে আছেন কাউন্টারের সামনে। তবে কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, আজ এবং আগামীকালের কোনো টিকিট নেই। যারা অগ্রীম টিকিট সংগ্রহ করে রেখেছিলেন তারাই শুধু যেতে পারবেন। তবে যাত্রীদের সুবিধার্থে দুপুুর থেকে কয়েকটি স্পেশাল বাস চলবে বলে এ সময় কাউন্টার থেকে জানানো হয়। 

অন্যদিকে বরিশাল, খুলনাগামী যাত্রীদেরও কাউন্টারে অপেক্ষা করতে দেখা গেছ। ফেনিতে পরিবার নিয়ে ঈদ করতে যাচ্ছেন মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ‘‘আমি  ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। গতকাল অফিস শেষ করে পরিবার নিয়ে আসতে পারিনি, তাই আজকে আসলাম। অন্য সময়ের চেয়ে আজ দুইশ টাকা বেশি দিয়ে টিকিট কেটেছি।’’

‘সাকুরা’ পরিবহনে পরিবার নিয়ে বরিশাল যাচ্ছেন আবু বাশার। তিনি বলেন, ‘‘সামনে ভীড় হতে পারে, তাই আমরা আজ চলে যাচ্ছি। ঈদের সময় অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি ভাড়া দিতে হয়। কী করার আছে? যেতে হবে তাই মেনে নিচ্ছি।’’

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বরিশালগামী ‘এনা’ পরিবহনের  বাস চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘যাত্রীর স্বাভাবিক চাপ রয়েছে। অগ্রীম টিকিট কাটা যাত্রী আসা মাত্রই নির্দিষ্ট সময়ে গাড়িগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।’’

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ট্রাফিক উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজাদ রহমান বলেন, ‘‘ঈদ উপলক্ষে যাত্রীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন, সে বিষয়ে  নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যানজট মুক্ত রাখতে ট্রাফিকের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালক দ্বারা যেন পরিবহন চালানো না হয় সে ব্যাপারে মালিক ও শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র‍্যাবের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে।
 

এএএম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র ন শ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ