ঈদযাত্রায় চাপ বেড়েছে আকাশপথেও, টিকিটের দাম দ্বিগুণ
Published: 28th, March 2025 GMT
ভিড় এড়াতে ঈদযাত্রায় অনেকের পছন্দ আকাশপথ। সময় বাঁচাতে অনেকেই তাই যাতায়াত করেন উড়োজাহাজে। তবে অন্যান্য সময়ে যেমন-তেমন, ঈদ এলে স্বল্পমূল্যে টিকিট যেন সোনার হরিণ হয়ে যায়। যেমন, ঢাকা–সৈয়দপুর আকাশ রুটে বিমান ভাড়া হচ্ছে ৪ হাজার ৮০০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে সেই টিকিট এখন দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি করছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স।
শুক্রবার সরেজমিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল ঘুরে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য।
ঢাকা থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ ৮টি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে সরকারি বিমান সংস্থার পাশাপাশি ৩টি বেসরকারি এয়ারলাইন্স। রুটগুলো হচ্ছে, ঢাকা–সৈয়দপুর, যশোর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল।
ঈদ উপলক্ষে আকাশ পথে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন কিছু যাত্রীরা জানান, সড়ক পথে যানজটসহ নানা ভোগান্তি নিত্যদিনের চিত্র। ঈদে এর মাত্রা আরও বেশি থাকে। তাই ঈদ উপলক্ষে খরচ একটু বেশি হলেও আকাশ পথেই শান্তি। এতে করে নিরাপদে স্বল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় বলেও জানান তারা।
সূত্র জানায়, দিনেদিনে আকাশপথের চাহিদা বাড়ছে যাত্রীদের মাঝে। ঈদকে কেন্দ্র করে এই চাহিদা আরও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত ঈদে সড়কপথে ভোগান্তির শেষ থাকে না। তাই অনেকেই ভোগান্তি এড়াতে আকাশপথকে বেছে নিচ্ছেন। এয়ারলাইন্সগুলো চাহিদার কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত ফ্লাইট যুক্ত করছে বিমানসহ বেসরকারি ২–১টি এয়ারলাইন্স।
এয়ারলাইন্সগুলোর তথ্যমতে, ঈদকে কেন্দ্র করে সৈয়দপুর, যশোর এবং ঈদের পরে কক্সবাজার রুটে টিকিটের চাহিদা বেশি। ইতোমধ্যে এসব রুটের প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে ঈদযাত্রায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ায় কিছু কিছু রুটে অন্যান্য দিনের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে এয়ারলাইন্সের টিকিট।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধির কারণে বিমানের টিকিটের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে, দেশের সড়ক ও রেল যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতির ফলে অনেকেই আকাশপথের পরিবর্তে সড়ক ও রেলপথ বেছে নিচ্ছেন। যমুনা রেলসেতু ও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় বরিশালসহ কয়েকটি রুটে ফ্লাইট সংখ্যা কমেছে। এসব কারণেই অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীসংখ্যা কিছুটা কমেছে। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে ঈদের লম্বা ছুটিকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ রুটে ১৩টি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা বোসরা ইসলাম সমকালকে জানান, ২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-সৈয়দপুর এবং ঢাকা-বরিশাল রুটে এসব ফ্লাইট পরিচালিত হবে। যাত্রীদের চাহিদার ভিত্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৩টি বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছে।
বেসরকারি এয়ার অ্যাস্ট্রার জনসংযোগ শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ঈদ উপলক্ষে সৈয়দপুর ও কক্সবাজার রুটে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত ফ্লাইট।
বেসরকারি নভোএয়ারের এক কর্মকর্তা জানান, যাত্রীদের চাহিদা বাড়লেও অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে না তারা।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.
তিনি বলেন, রমজানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ছুটি ছিল। এ ছাড়া ঈদেও এবার লম্বা ছুটি। যমুনা রেলসেতু ও সড়ক যোগাযোগ উন্নতির কারণে অনেক যাত্রী সড়কপথ বেছে নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ উপলক ষ কর মকর ত ব যবস থ ব সরক র বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের একেকটি ২০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে চলতি বছর ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে সেটি কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টন করা হয়। সেই তুলনায় এবার অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অনুমোদনপত্রে বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি করা যাবে না। অনুমতিপত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। সরকার প্রয়োজনে যেকোনো সময় এই রপ্তানির অনুমতি বাতিল করতে পারবে।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো খুলনার আরিফ সি ফুডস, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ, লোকজ ফ্যাশান ও মাশফি অ্যান্ড ব্রাদার্স, চট্টগ্রামের জেএস এন্টারপ্রাইস ও আনরাজ ফিশ প্রোডাক্টস, যশোরের লাকী এন্টারপ্রাইজ, এমইউ সি ফুডস, লাকী ট্রেডিং, রহমান ইমপেক্স ফিস এক্সপোর্ট, মোহাতাব অ্যান্ড সন্স, জনতা ফিস, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও কেবি এন্টারপ্রাইজ, ঢাকার ভিজিল্যান্ড এক্সপ্রেস, স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, মাজেস্টিক এন্টারপ্রাইজ ও বিডিএস করপোরেশন, বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এ আর এন্টারপ্রাইজ ও তানিসা এন্টারপ্রাইজ, পাবনার নোমান এন্টারপ্রাইজ, রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, সেভেন স্টার ফিস প্রসেসিং কোং, ন্যাশনাল অ্যাগ্রো ফিশারিজ, আরফি ট্রেডিং করপোরেশন, জারিফ ট্রেডিং করপোরেশন, জারিন এন্টারপ্রাইজ, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল ও সততা ফিস, ভোলার রাফিদ এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার মা এন্টারপ্রাইজ ও সুমন ট্রেডার্স।