ইশরাক যদি মেয়র হয়, আমাকেও এমপি ঘোষণা করা হোক: হিরো আলম
Published: 29th, March 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্রোরেশনে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেওয়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম তাকেও এমপি ঘোষণা করা দাবি করছেন। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম), বগুড়া-৬ (সদর) ও ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে হিরো আলম নিজেকে বিজয়ী ঘোষণার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হিরো আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ দাবি জানান।
হিরো আলম মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, 'আমি বগুড়ায় এবং ঢাকায় এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে ভোট কারচুপির মধ্যে দিয়ে পরাজিত করা হয়। আমি এখন দাবি করছি আমার এমপি পদ ফিরিয়ে দিতে।'
জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, এখন এমপি পদে ঘোষণা করে কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি শুধু চাই আমাকে এমপি ঘোষণা করা হোক। আমি একদিনের জন্য হলেও এমপি হতে চাই।'
এদিকে আলোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'যেহেতু ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। হিরো আলমকে ঢাকা ১৭, বগুড়া ৪ ও ৬ আসনের এমপি পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক, আমি তো অনেক নির্যাতিত হয়েছি।'
পরে আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'আওয়ামী লীগের আমলে অনেকেই বনে-জঙ্গলে ঘুরেছেন। সে সময় আমি নির্বাচন করেছি। ইশরাক যদি মেয়র হয়, তাহলে আমাকে একদিনের জন্য হলেও এমপি দিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, '২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ এবং ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের হারিয়ে বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন কমিশনকে চাপ দিয়ে ফলাফল ছিনতাই করে শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থীদের অবৈধভাবে বিজয়ী ঘোষণা করে। ফল ছিনতাইয়ের প্রতিবাদ জানিয়ে ইসিতে লিখিত অভিযোগ করেও ন্যায়বিচার পাইনি। উল্টো প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করতে গিয়ে হামলার শিকার হতে হয়েছে।'
হিরো আলম বলেন, 'ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বিএনপি নেতা ইশরাকের ফল ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিল। আদালতের নির্দেশে তাকে পাঁচ বছর পর বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে আমাকে এমপি ঘোষণা করতে বাধা কোথায়।'
হিরো আলম ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একতারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট গ্রহণের দিন তার ওপর হামলা হয়। পরে তিনি ভোট বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ছাড়া ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আশরাফুল হোসেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে বগুড়া-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান বিজয়ী হন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ র আলম ইশর ক হ স ন এমপ ২০২৩ স ল আসন র আওয় ম ইশর ক ও এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা