ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয় যেসব কারণে
Published: 29th, March 2025 GMT
৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে মিয়ানমার। শুক্রবার এ ভূমিকম্পের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯৪ জনে, আহত ১ হাজার ৬৭০ জন। ভূমিকম্প এতটাই শক্তিশালী ছিল যে শত শত মাইল দূরে থাইল্যান্ডেও তা জোরালোভাবে অনুভূত হয়েছে এবং দেশটির রাজধানী ব্যাংককে ভবন ধসে পড়েছে।
গত ৭ জানুয়ারি ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে হাজারো ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে যায় তিব্বতে, শতাধিক মানুষের মৃত্যুও হয়। তবে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একই মাত্রার ভূমিকম্পে কোনো প্রাণহানি হয়নি, অবকাঠামোগতও তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির মাত্রা কেন বাড়ে সেই প্রশ্ন তৈরি হতেই পারে।
বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েকটি মানদণ্ড বের করেছেন যেগুলোর কারণে ভূমিকম্পের ফলে ক্ষতি কম বা বেশি হয়।
কম্পনের মাত্রা ও স্থায়ীত্বকাল
ভূমিকম্প মাপার প্রথাগত পদ্ধতি রিখটার স্কেল। তবে এখন মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল বা এমডব্লিউ নামে আরেকটি পদ্ধতিতেও ভূমিকম্প মাপা হচ্ছে। রিখটারে স্কেলকে মনে করা হচ্ছে সেকেলে এবং এটার কাজ অতটা নির্ভুলও নয়। তবে যে পদ্ধতিতেই মাপা হোক না কেন, কম্পনের মাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভূমিকম্পের মাত্রা বোঝাতে যে সংখ্যাটি দেওয়া হয়, তা দিয়ে ফল্ট লাইন কতটুকু সরেছে এবং যে গতি এই সরানোর পেছনে কাজ করেছে সেটি নির্দেশ করে।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ট আলাদা আলাদা বিট বা প্লেট টেকটোনিক দিয়ে তৈরি হয়েছে, যা নিচের নরম পদার্থের ওপরে ভাসছে। যেসব স্থানে একটি প্লেট এসে আরেকটি প্লেটের কাছাকাছি মিশেছে বা ধাক্কা দিচ্ছে বা ফাটলের তৈরি হয়েছে, সেটাকে বলা হয় ফল্ট লাইন।
মাটির নিচে দুই দশমিক পাঁচ বা তার কম কম্পন হলে সাধারণত তা অনুভূত হয় না, তবে এটা যন্ত্রে ধরা পড়ে। ৫ মাত্রার বেশি কম্পন মানুষ বুঝতে পারে এবং এতে সামান্য ক্ষয়ক্ষতিও হতে পারে।
৭ মাত্রার ওপরের ভূমিকম্পকে বড় কম্পন হিসেবে ধরা হয়। আর ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্পকে বিবেচনা করা হয় বড় দুর্বিপাক হিসেবে এবং এটির ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।
আবার কতক্ষণ ধরে কম্পন হচ্ছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। যত বেশি সময় ধরে কম্পন চলবে, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও তার সঙ্গে বাড়তে পারে।
ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত সংক্রান্ত বিষয় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট সিসমিক নেটওয়ার্ক বলছে, কম মাত্রার ভূমিকম্প কেবল কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়। আর মাঝারি থেকে বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট ধরেও কম্পন চলতে পারে। যেমনটা হয়েছিল ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ভূমিকম্পের সময়।
২০০৪ সালে ২৬শে ডিসেম্বর সুমাত্রা ও আন্দামানের কাছে ভারত মহাসাগরে নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর ফলে সৃষ্ট একের পর এক প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ১৪টি দেশে প্রাণ হারান প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান ইন্দোনেশিয়ায়।
গভীরতা
শুধু কম্পনের মাত্রা নয়, মাটির নিচে কোথায় কম্পনটা হলো সেই জায়গাটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মরোক্কোর পশ্চিমাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়, সেটার কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্টের ১৮ কিলোমিটার নিচে। এভারেস্ট চূঁড়া যত উঁচু তার চেয়েও বেশি ছিল এই দূরত্ব। কিন্তু ভূতাত্ত্বিক মানদণ্ডে এটা খুব বেশি গভীর নয়। দুই হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয় সেখানে।
ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের ভূতত্ত্ববিদ ড.
প্রায় কাছাকাছি সময়ে ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার নর্থ মালাকু প্রদেশে ছয় দশমিক দুই মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়, এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৬৮ কিলোমিটার গভীরে। সেখানে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
মরোক্কোয় ভূমিকম্প হয়েছিল রাত ১১টা ১১ মিনিটে। ঘুমন্ত বাসিন্দাদের নিয়ে অনেক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়। তবে ভূতাত্ত্বিকরা একটা কথা বলেন- ‘ভূমিকম্প নয়, মানুষের প্রাণহানির জন্য দায়ী ভবনগুলো’, যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভবন ধসেই মানুষের মৃত্যু হয়। তবে রাতের তুলনায় দিনে ভূমিকম্পে ক্ষতি কম হয় বলেও মনে করা হয়।
ভবনের অবস্থা
ভূমিকম্প সহনশীল ঘরবাড়ি তৈরি করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মাত্রার কম্পন সহ্য করতে পারে এমন ভবন নির্মাণ করতে হয়। জাপানি স্থপতিরাই এটা সম্ভব করে দেখিয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অফ টোকিয়োর সহযোগী অধ্যাপক ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার জুন সাতো বলছিলেন, কোনো অবকাঠামো যদি ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্টি শক্তির পুরোটা শোষণ করতে পারে তখন সেটা ধসে পড়ে না।
বিষয়টা এমন, ভবন বা অবকাঠামোকে এমন একটা ভেতের ওপর দাঁড় করানো হয় যেটা ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট শক বা কম্পন সহ্য করতে পারে। ভিতটা বা ভেতের ওই অংশটা ৩০ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার পুরু রাবারের ব্লক দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে এরকম ভিত তৈরিতে বেশ ভালোরকম খরচ হয়, ফলে ভবনের নির্মাণব্যয় অনেকটাই বেড়ে যায়।
মরোক্কোর যেখানে ভূমিকম্পের আঘাতে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছিল, সেখানে বেশিরভাগ ঘর ছিল পুড়িয়ে বা রোদে শুনানো ইটের তৈরি।
২০২৩ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি তুরস্কে সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্প হয় এবং বলা হচ্ছিলো, নীতিমালা মেনে নির্মিত না হওয়ার কারণেই তখন অসংখ্য ভবন ধরে পড়েছিল।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জরুরি পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডেভিড আলেক্সান্ডার বলেছেন, ভূমিকম্পটা শক্তিশালী ছিল, তবে সঠিকভাবে নির্মিত ভবন ধসিয়ে ফেলার মতো অত বিধ্বংসী ক্ষমতার ছিল না। বরং অনেক এলাকাতেই কম্পন সর্বোচ্চ মাতার চেয়ে কম ছিল। ফলে আমরা বলতেই পারি, ধরে পড়া হাজার হাজার ভবনের কোনোটিই সঠিক নীতিমালা মেনে নির্মিত হয়নি।
জনসংখ্যার ঘনত্ব
২০২১ সালের জুলাইয়ে আলাস্কা উপত্যকায় ৮ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল এবং এটা খুবই সম্ভব যে ওই ঘটনার স্মৃতি অনেকেরই মনে নেই। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে এটাকে রাখা হয়েছে ৭ নম্বরে।
ওই ভূমিকম্পে কেউ মারা যায়নি, কোনো ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। এর কারণ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল জনবসতি থেকে অনেক দূরে।
সেই তুলনায় ২০১০ সালের জানুয়ারিতে হাইতিতে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে আড়াই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু ও অন্তত তিন লাখ মানুষ আহত হন। আশ্রয় হারান ১৫ লাখের বেশি মানুষ। দেশটির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ২৭ হাজার জনের ওপরে এবং ভূমিকম্পের মূল ধাক্কাটাই লেগেছিল ওই শহরে।
মাটির ধরন
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের ওপরের মাটির প্রকৃতি কী বা মাটি কতটা শক্ত তার ওপরও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ভর করে। ইউনাইটেড স্টেটস জিয়োলজিক্যাল সার্ভে বা ইউএসজিএসের মতে, ভূপৃষ্টে বা এর কাছাকাছি স্তরে কাঁদামাটি থাকলে শক্তিশালী কম্পন সহ্য করতে পারে না সেটি। এ ক্ষেত্রে কম্পন শুরু করে মাটির ওপরের স্তুরটি তরল পদার্থের মতো টালমাটাল আচরণ শুরু করে এবং ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। ১৯৬৪ সালে জাপানের নিগাতয় ভূমিকম্পে ঠিক এমনটাই ঘটেছিল।
এদিকে ২০২৩ সালে তুরস্কের যেখানটায় ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় তার মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে এরজিন শহরে কোনো আঁচড়ও পড়েনি। সেখানে কোনো প্রাণহানি বা ভবনধস হয়নি। অথচ আশপাশের প্রায় সব শহর ধুলিসাৎ হয়ে যায়।
ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, শক্ত ও পাথুড়ে ভূপৃষ্টের কারণেই এরজিন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়।
জরুরি উদ্ধার তৎপরতা
উদ্ধার তৎপরতা যত দ্রুত শুরু হয়, ততই বেশি সংখ্যক মানুষকে বাঁচানো সম্ভব হয়। পূর্বপ্রস্তুতি এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে।
জাপানের স্কুলগুলোয় বছরে দুইবার অনুশীলন করানো হয় যে ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে। বাড়িতে থাকলে, বাইরে বা গাড়িতে থাকা অবস্থায় ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে তা শেখানো হয়।
তাইওয়ান জরুরি উদ্ধার তৎপরতার প্রস্তুতি পরখ করতে দেশজুড়ে অনুশীলনের উদ্যোগ নেয়।
তবে যেসব দেশ ভূমিকম্পপ্রবণ নয়, সেসব দেশে এরকম উদ্যোগ চোখে পড়ার ঘটনা বিরল।
দুর্গ কোনো দেশ কত দ্রুত সাহায্য পাচ্ছে সেটাই বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তুরস্কে ভূমিকম্পের দশ দিন পরও ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত মানুষ উদ্ধার করা হয়। আহত বা আটকে পড়া মানুষদের এতো বেশিদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা যথেষ্ট কম।
রাস্তাঘাট কত দ্রুত যান চলাচলের উপযোগী করা যায় এবং উদ্ধারের সরঞ্জাম কত দ্রুত জোগাড় করা সম্ভব তাও ক্ষয়ক্ষতির মাত্রায় প্রভাব ফেলে।
সেকেন্ডারি ইফেক্ট
ভবন ধসে পড়াই ভূমিকম্পের পর প্রাণহানির একমাত্র কারণ নয়। ভূমিকম্পের পর উপকূলীয় এলাকায় সুনামির শঙ্কা থাকে এবং সেটটায়ও অগনিত প্রাণহানি হতে পারে। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে নয় দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের পর শক্তিশালী সুনামি সৃষ্টি হয়, যার আঘাতে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঢেউ এতই শক্তিশালী ছিল যে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল ছাপিয়ে আফ্রিকার উপকূলেও প্রাণহানি ঘটে।
পাহাড়ি এলাকায় ভূমিকম্পের পর ভূমিধস ঘটার শঙ্কা রয়েছে যার ফলে বাড়িধর যেমন ধ্বংস হয়, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে উদ্ধারকাজও বাধাগ্রস্ত হয়। ২০১৫ সালে নেপালে ভূমিকম্পে প্রায় নয় হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়। ভূতাত্ত্বিকরা জানান, সেখানে তখন তিন হাজারেরও বেশি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছিল।
১৯০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয় ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ড স্থায়ী ভূমিকম্পে শহরের বেশিরভাগ পানির ও গ্যাসের পাইপলাইন ভেঙে গিয়েছিল। লিক হওয়া গ্যাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে আগুন লেগে যায় এবং পানির অভাব আগুন নেভানো কঠিন হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সেখানে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প ম ত র র ভ ম কম প ভ ম কম প র ক য় ভ ম কম প ভ ম কম প হ ২০২৩ স ল র ওপর সবচ য় ভবন ধ ভবন র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে সাহিত্য আড্ডার স্থানসহ নানা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। এ সময় সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসরের সাহিত্য আড্ডার স্থাপনাসহ পার্কের ভেতরে এবং বাইরে গড়ে উঠা ভ্রাম্যমাণ দোকান, বিজয়ী পিঠা বাড়িসহ সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আজ বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠ সংলগ্ন জয়নুল উদ্যান পার্কে এই অভিযান চালানো হয়।
এ অভিযানের এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম তদারকি করেন। এ সময় পার্কের সৌন্দর্য রক্ষা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান নগরবাসী। তবে এ উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষোভ ও অসেন্তাষ প্রকাশ করেছেন কবি সাহিত্যিকরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই স্থানটিতে দেশের খ্যাতনামা এবং নবীণ কবি সাহিত্যকদের নিয়ে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসর নামে সাহিত্য আড্ডা। এতে কবিতা পাঠের পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে চলে আলোচনা ও মতবিনিময়।
স্থানীয়রা জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে পার্কটি তার স্বরূপ ফিরে পাবে। এতে আমার মত অন্য দর্শনার্থীরা প্রকৃতির নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে পারবে।
নতুন বাজার এলাকার শাহজাহান কবির বলেন, একাধিকবার পার্কেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও প্রভাবশালী মহলের মদদে ফের তৈরি হয় অবৈধ স্থাপনা। কিন্তু দর্শনার্থীরা চায় পার্কের নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ। তবে এ উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষোভ ও অসেন্তাষ প্রকাশ করেছেন কবি সাহিত্যিকরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই স্থানটিতে দেশের খ্যাতনামা এবং নবীণ কবি সাহিত্যকদের নিয়ে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসর নামে সাহিত্য আড্ডা। এতে কবিতা পাঠের পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে চলে আলোচনা ও মতবিনিময়।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, মূলত জেলা প্রশাসনের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য জয়নুল উদ্যোনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি এবং প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলা। তাছাড়া পার্কের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে অসামসাজিক কার্যকলাপ চলার অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে।