Prothomalo:
2025-05-01@00:00:02 GMT

অনলাইনে মিলবে ঈদের খাবার

Published: 29th, March 2025 GMT

মোগল বাদশাহদের প্রিয় ‘শির খোরমা’র প্রচলন পুরান ঢাকায় এখনো আছে। ভিন্ন রকমের সে খাবার নিয়ে যদি আগ্রহ না–ও থাকে, তবে ঈদের দিন রসনাবিলাসের বাসনা সবার থাকে। কালিজিরা চালের পোলাও, দেশি মুরগির ঝোল, কয়েক টুকরা বেগুনভাজা আর মিষ্টান্ন হলেও হতো, কিন্তু মানুষের সামর্থ্য, প্রয়োজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন খাবার। তবে নাগরিক জটিলতায় মানুষের সময় ও শ্রমের সংকটও বাড়ছে।

গরম চুলা থেকে কষানো মাংসের ঘ্রাণ ছুটে আসতেই হবে, সেই মাথা কুটে মরা রসনাবিলাস আর সেঁটে নেই ঈদের আয়োজনে। সেই প্রভাবই দেখা যাচ্ছে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনলাইনের বিভিন্ন খাবারের পেজে। তৈরি খাবার বিক্রি করা উদ্যোক্তারা ঈদের জন্য দিচ্ছেন বিভিন্ন রকমের অফার। রয়েছে ঈদ প্যাকেজ, কম্বো প্যাকেজ, স্পেশাল অফার, উপহার বাক্স অথবা বিশেষায়িত (কাস্টমাইজড) অর্ডার।

হাতে তৈরি খাবারের জন্য সুনাম কুড়ানো বিক্রেতাদের অধিকাংশ নারী, ক্রেতাদেরও অধিকাংশ নারী। ঈদের দিনের জন্য অনলাইনে খাবার কেনার সুযোগ যে কতখানি প্রয়োজন, তার উদাহরণ ধানমন্ডি ১৪ নম্বরের বাসিন্দা আবদুল লতিফ খানের জীবন বাস্তবতা। স্ত্রী প্রয়াত, একমাত্র সন্তান বিদেশে। আবদুল লতিফ খান ঈদের দিনের জন্য খাবারের অর্ডার করেছেন একটি নির্ভরযোগ্য খাবারের পেজে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কথা প্রসঙ্গে বললেন, ‘এই ব্যবস্থাটা খুবই জরুরি। আমার কথাই ধরুন, একার জন্য এত কিছু ম্যানেজ করা যেত? কয়েকজনের খাবার অর্ডার করে রেখেছি। ঈদের সকালে পৌঁছে যাবে দরজায়।’

খাবার ঈদের সকালে পৌঁছালেও খাবারের অর্ডার দেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঘরে তৈরি খাবারের বিক্রেতারা। তাঁদের প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। সম্প্রতি লালমাটিয়ায় শুরু হওয়া ‘বিস্ট্রো অন দ্য গো’ এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এখানকার প্রধান শাহানা হুদা রঞ্জনা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলাম সেমাই, কাবাব থেকে শুরু করে গরুর মাংসের মতো সব বৈঠকি খাবার ঈদে করে দিতে পারব। এর পর থেকে অর্ডার আসছে। একই খাবার নিজেরাও খাই বলে মানের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন চলে না।’ এখানকার খাবারের জন্য অর্ডার দিয়ে রেখেছেন দিল্লি থেকে দেশে ঈদ করতে আসা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মকর্তা। খাবার যাবে ঢাকার বাইরে সিঙ্গাপুরেও। তবে বিস্ট্রো অন দ্য গো তাদের সব খাবার ডেলিভারি শেষ করবে ৩০ তারিখের মধ্যে।

অনলাইনে খাবার বিক্রির প্রথম দিকের একটি এনস কিচেনে অর্ডার নেওয়া শেষ হয়েছে ২৮ মার্চ রাতেই। এখান থেকে সর্বনিম্ন দুজনের জন্য খাবার অর্ডার করতে হবে। তারা এনেছে কয়েক রকমের ঈদ প্যাকেজ। ধানমন্ডির আবদুল লতিফ খান এনস কিচেন থেকে ঈদের জন্য সব রকম আইটেমের খাবার নিচ্ছেন।

দুই বছর বয়সী ‘মজার খাবার’–এর প্রধান রাজিয়া আফরিন জানান, তাঁর এখানে চাঁদরাত পর্যন্ত খাবার অর্ডার করা যাবে। আর ‘খাবারবিলাস’–এর আফরোজা আক্তার জানান, গত বছর তিনি মাত্র চারজন নিয়ে ১০০ জনের বেশি মানুষের খাবার পাঠিয়েছেন ঈদে। এবার আরও বাড়বে সংখ্যা। 

অনলাইনে ঈদের খাবারের ক্রেতা মগবাজারের বাসিন্দা গৃহিণী ফাহমিন আহমেদ। তিনি এনস কিচেনে অর্ডার করেছেন নবাবি সেমাইসহ কয়েকটি আইটেম। এই ভোক্তা বলেন, সবকিছু একা করে ওঠা সম্ভব হয় না; কিন্তু খেতে সবাই পছন্দ করেন। মূল খাবারের পাশাপাশি এমন কিছু খাবার বাইরে থেকে আনলে বাসার মুরব্বিরাও পছন্দ করেন। নগরের সময় ও শ্রমের এই চেনা-অচেনা সংকটের পাশাপাশি আছে মানবিক দিকও।

শান্তিবাগ মসজিদের পাশের গলিতে থাকেন আফজাল হোসেন নামের এক প্রবীণ দম্পতি। তাঁদের সিডনিপ্রবাসী একমাত্র মেয়ে চেয়েছেন ঈদের দিনে মা-বাবার জন্য বিশেষ কিছু করতে। এই খাবারগুলো ঈদের সকালে পৌঁছে যাবে তাঁর মা-বাবার কাছে। বিশেষ দিনটিতে সেই খাবারের বাক্সে সন্তানের হাতের স্পর্শ না পেলেও হৃদয়ের উত্তাপের কমতি পাবেন না একা হয়ে যাওয়া মা-বাবা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন

ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। 

মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ