Prothomalo:
2025-11-03@07:36:31 GMT

অনলাইনে মিলবে ঈদের খাবার

Published: 29th, March 2025 GMT

মোগল বাদশাহদের প্রিয় ‘শির খোরমা’র প্রচলন পুরান ঢাকায় এখনো আছে। ভিন্ন রকমের সে খাবার নিয়ে যদি আগ্রহ না–ও থাকে, তবে ঈদের দিন রসনাবিলাসের বাসনা সবার থাকে। কালিজিরা চালের পোলাও, দেশি মুরগির ঝোল, কয়েক টুকরা বেগুনভাজা আর মিষ্টান্ন হলেও হতো, কিন্তু মানুষের সামর্থ্য, প্রয়োজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন খাবার। তবে নাগরিক জটিলতায় মানুষের সময় ও শ্রমের সংকটও বাড়ছে।

গরম চুলা থেকে কষানো মাংসের ঘ্রাণ ছুটে আসতেই হবে, সেই মাথা কুটে মরা রসনাবিলাস আর সেঁটে নেই ঈদের আয়োজনে। সেই প্রভাবই দেখা যাচ্ছে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনলাইনের বিভিন্ন খাবারের পেজে। তৈরি খাবার বিক্রি করা উদ্যোক্তারা ঈদের জন্য দিচ্ছেন বিভিন্ন রকমের অফার। রয়েছে ঈদ প্যাকেজ, কম্বো প্যাকেজ, স্পেশাল অফার, উপহার বাক্স অথবা বিশেষায়িত (কাস্টমাইজড) অর্ডার।

হাতে তৈরি খাবারের জন্য সুনাম কুড়ানো বিক্রেতাদের অধিকাংশ নারী, ক্রেতাদেরও অধিকাংশ নারী। ঈদের দিনের জন্য অনলাইনে খাবার কেনার সুযোগ যে কতখানি প্রয়োজন, তার উদাহরণ ধানমন্ডি ১৪ নম্বরের বাসিন্দা আবদুল লতিফ খানের জীবন বাস্তবতা। স্ত্রী প্রয়াত, একমাত্র সন্তান বিদেশে। আবদুল লতিফ খান ঈদের দিনের জন্য খাবারের অর্ডার করেছেন একটি নির্ভরযোগ্য খাবারের পেজে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কথা প্রসঙ্গে বললেন, ‘এই ব্যবস্থাটা খুবই জরুরি। আমার কথাই ধরুন, একার জন্য এত কিছু ম্যানেজ করা যেত? কয়েকজনের খাবার অর্ডার করে রেখেছি। ঈদের সকালে পৌঁছে যাবে দরজায়।’

খাবার ঈদের সকালে পৌঁছালেও খাবারের অর্ডার দেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঘরে তৈরি খাবারের বিক্রেতারা। তাঁদের প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। সম্প্রতি লালমাটিয়ায় শুরু হওয়া ‘বিস্ট্রো অন দ্য গো’ এরই মধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এখানকার প্রধান শাহানা হুদা রঞ্জনা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলাম সেমাই, কাবাব থেকে শুরু করে গরুর মাংসের মতো সব বৈঠকি খাবার ঈদে করে দিতে পারব। এর পর থেকে অর্ডার আসছে। একই খাবার নিজেরাও খাই বলে মানের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন চলে না।’ এখানকার খাবারের জন্য অর্ডার দিয়ে রেখেছেন দিল্লি থেকে দেশে ঈদ করতে আসা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মকর্তা। খাবার যাবে ঢাকার বাইরে সিঙ্গাপুরেও। তবে বিস্ট্রো অন দ্য গো তাদের সব খাবার ডেলিভারি শেষ করবে ৩০ তারিখের মধ্যে।

অনলাইনে খাবার বিক্রির প্রথম দিকের একটি এনস কিচেনে অর্ডার নেওয়া শেষ হয়েছে ২৮ মার্চ রাতেই। এখান থেকে সর্বনিম্ন দুজনের জন্য খাবার অর্ডার করতে হবে। তারা এনেছে কয়েক রকমের ঈদ প্যাকেজ। ধানমন্ডির আবদুল লতিফ খান এনস কিচেন থেকে ঈদের জন্য সব রকম আইটেমের খাবার নিচ্ছেন।

দুই বছর বয়সী ‘মজার খাবার’–এর প্রধান রাজিয়া আফরিন জানান, তাঁর এখানে চাঁদরাত পর্যন্ত খাবার অর্ডার করা যাবে। আর ‘খাবারবিলাস’–এর আফরোজা আক্তার জানান, গত বছর তিনি মাত্র চারজন নিয়ে ১০০ জনের বেশি মানুষের খাবার পাঠিয়েছেন ঈদে। এবার আরও বাড়বে সংখ্যা। 

অনলাইনে ঈদের খাবারের ক্রেতা মগবাজারের বাসিন্দা গৃহিণী ফাহমিন আহমেদ। তিনি এনস কিচেনে অর্ডার করেছেন নবাবি সেমাইসহ কয়েকটি আইটেম। এই ভোক্তা বলেন, সবকিছু একা করে ওঠা সম্ভব হয় না; কিন্তু খেতে সবাই পছন্দ করেন। মূল খাবারের পাশাপাশি এমন কিছু খাবার বাইরে থেকে আনলে বাসার মুরব্বিরাও পছন্দ করেন। নগরের সময় ও শ্রমের এই চেনা-অচেনা সংকটের পাশাপাশি আছে মানবিক দিকও।

শান্তিবাগ মসজিদের পাশের গলিতে থাকেন আফজাল হোসেন নামের এক প্রবীণ দম্পতি। তাঁদের সিডনিপ্রবাসী একমাত্র মেয়ে চেয়েছেন ঈদের দিনে মা-বাবার জন্য বিশেষ কিছু করতে। এই খাবারগুলো ঈদের সকালে পৌঁছে যাবে তাঁর মা-বাবার কাছে। বিশেষ দিনটিতে সেই খাবারের বাক্সে সন্তানের হাতের স্পর্শ না পেলেও হৃদয়ের উত্তাপের কমতি পাবেন না একা হয়ে যাওয়া মা-বাবা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র দ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ