ঈদ আনন্দ পরিবার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভাগ করে নিতে ব্যস্ত শহর ছেড়ে গ্রামে পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। তারকাদের কেউ কেউ বিদেশে উড়ে গিয়েছেন। চলুন জেনে নিই, কোন তারকা কোথায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
সাদিয়া ইসলাম মৌ
ঈদের ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করছেন জনপ্রিয় মডেল-নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ। বছরজুড়ে ব্যস্ত থাকায় ঈদের সময়ে একটু অবসর পান। সেভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। মৌ বলেন, “ঈদের ছুটিতে ঢাকায় আছি। এই ঈদে আমার অভিনীত দুটি নাটক প্রচার হওয়ার কথা। আশা করি, দর্শকরা ভালো কিছু দেখতে পাবেন। আমার মেয়ে দেশের বাইরে পড়াশোনা করছে। ঈদের দিন ওকে মিস করছি।”
জয়া আহসান
টানা শুটিং করেছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটির মুডে আছেন। ঢাকার বাসায়ই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন। জয়া আহসান বলেন, “বাসায় সবাই মিলে আমার অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘জিম্মি’ দেখব। ঈদে প্রতিটা বাড়িতে যা রান্না হয়, আমাদের বাসাতেও সেটা রান্না হয়। তবে ঈদের দিন আমার বাসার আশপাশের বাচ্চাদের মাংস-ভাত খাওয়াব। এটা আমি তাদের জন্য নিজে হাতে রান্না করি। ঈদের দিনটা ওরা খাবে না আমি খাব, এটা ভাবতেই পারি না।”
আরো পড়ুন:
ঈদের আগে উড়াল দিলেন ফারিণ
হুইলচেয়ারে বসে কেন প্রিমিয়ারে মোশাররফ করিম?
আজমেরী হক বাঁধন
ঈদুল ফিতর ঢাকায় উদযাপন করছেন আজমেরী হক বাঁধন। এ অভিনেত্রী বলেন, “ঢাকায় মা-বাবা, মেয়ে ও পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছি। ছোটবেলায় ঈদের জন্য বড়সড় পরিকল্পনা করতাম। এখন মেয়ে পরিকল্পনা করে, এটা ভালো লাগে। ঈদে যারা গ্রামে গিয়েছেন, তাদের ঈদ বেশি আনন্দের হোক এটাই প্রত্যাশা করি।”
জাকিয়া বারী মম
রাজধানী ঢাকায় কাটছে লাক্স তারকা অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর ঈদুল ফিতর। তার মা, ভাই ও ভাবি হজে গিয়েছেন। ফলে, তাদেরকে মিস করছেন। মম বলেন, “মা-ভাই-ভাবি ফিরে এলেই মূলত আমার ঈদ শুরু হবে। তাই আপাতত বড় কোনো পরিকল্পনা করিনি।”
পরীমণি
দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। তার ঈদের আনন্দ দুই সন্তানকে ঘিরেই। এই চিত্রনায়িকা বলেন, “আমার সব আনন্দের মূলে ওরা দুজন। ঈদের আনন্দও ওদের নিয়েই। ঈদের ছুটিতে ঢাকাতেই আছি। সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে যেতে পারি। তবে নানাকে মিস করছি। আমার নানাভাইয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।”
তাসনিয়া ফারিণ
ঈদুল ফিতরের আগে যুক্তরাজ্যে উড়ে গিয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। তার স্বামী শেখ রেজওয়ান যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বসবাস করেন। স্বামীর সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিতে দূরদেশে উড়ে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তবে যাওয়ার আগে স্বামীর জন্য লাগেজ ভর্তি জিনিসপত্র নিয়েছেন এই শিল্পী।
তানজিম সাইয়ারা তটিনী
এ সময়ের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী তটিনী। অন্য তারকাদের মতো ঈদুল ফিতর ঢাকায় উদযাপন করছেন না। বরং নিজ বাড়ি বরিশালে গিয়েছেন; যেখানে তার শৈশব কেটেছে। এই অভিনেত্রী বলেন, “বরিশালে আমার অনেক স্মৃতি। ব্যস্ততার কারণে কয়েকবছর যাওয়া হয়নি। এবার আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম ঈদের ছুটিতে বরিশাল যাব, কয়েকটি দিন কাটাব। বরিশাল আমার প্রিয় শহর। এখানে আমার নানাবাড়ি-দাদাবাড়ি।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র ঈদ র ছ ট ত ন করছ ন বর শ ল র জন য আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার
দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি হয় চট্টগ্রামে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর দিয়ে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি হওয়ার পর সেগুলো বিভিন্ন লাইটার জাহাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন ঘাট হয়ে গুদামজাত হয়। এরপর সেখান থেকে যায় বিভিন্ন বাজারে। লাইটার জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের সঙ্গে জড়িত শত শত শ্রমিক দিন রাত পরিশ্রম করেন। তারপরও কষ্টে চলে তাদের সংসার।
চট্টগ্রাম মহানগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় ১৭টি ঘাটে আমদানি পণ্য খালাস হয়। আর এসব খালাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় ৪ হাজার ঘাট শ্রমিক। এই শ্রমিকরা পালাক্রমে কাজ করেন ঘাটে। দিন-রাত হাড় ভাঙা খাটুনির পরও দিন যায় কষ্টে। সময়ের সঙ্গে তাদের শ্রমের মূল্য বাড়লেও তা বর্তমান বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।
চট্টগ্রাম গুদাম ও ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আবদুল খালেক রাইজিংবিডিকে বলেন, “প্রতি বছর মে দিবসে অনেকেই আমাদের স্মরণ করেন। কিন্তু বছর জুড়ে আমাদের অবহেলা আর বঞ্ছনার জীবন। সারা দিন কাজ করে ঘাট শ্রমিকরা ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেয়ে থাকে। কিন্তু এর বিনিময়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ভারী বস্তা বহন করে শ্রম দিতে হয়। কখনো কখনো এই পারিশ্রমিকও জোটে না। আবার সব শ্রমিকের প্রতিদিন কাজও জোটে না।”
ঘাট শ্রমিক আবদুল মতিন জানান, বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঘাটে আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, গম, সার, চিনি, সাদা মটর, পাথর, কয়লা, ফ্লাইঅ্যাশ, বল ক্লে, লাইম স্টোন, জিপসাম, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী পণ্য। এসব পণ্য মাদার ভেসের থেকে লাইটার জাহাজে খালাসের পর মাঝিরঘাটের বিভিন্ন গুদামে আনা হয়। সেখান থেকে শ্রমিকরা খালাস করে বিভিন্ন ট্রাকে লোড করেন, আবার ট্রাক থেকে বিভিন্ন গুদামে মজুদের জন্য আনলোড করেন। প্রতিদিন একজন শ্রমিক একশ’ দেড়শো বস্তা পর্যন্ত পণ্য বহন করেন। ভোর ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্রমিকরা ভারী পণ্য বহনের এসব কাজ করেন। এতে তাদের দৈনিক মজুরি মিলে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা।
মনিরুল মোল্লা নামে আরেক শ্রমিক রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা দিনে হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি পেলেও সংসার চালাতে কষ্ট হয়। বস্তা বহন অতি পরিশ্রমের কাজ। এ জন্য আমাদের অনেক খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। প্রতিদিন একজন শ্রমিকের ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ করতে হয় খাওয়ার পেছনে। এতে দিনের আয়ের অর্ধেক চলে যায়। বাকি অর্ধেক টাকা দিয়ে ৫-৬ জন সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। পরিবার সন্তানদের জন্য মাসে এক দুই বার মাছ মাংস খাওয়া সম্ভব হয় না।”
আবদুল সবুর নামের অপর একজন ঘাট শ্রমিক রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের শ্রমে-ঘামে দেশের আমদানি রপ্তানি বড় কার্যক্রম চলে চট্টগ্রামে। কিন্তু আমাদের জীবন চলে অনেক কষ্টে। অসুস্থ হলে কাজ জোটে না, খাবার জোটে না। এভাবেই চলছে আমাদের জীবন।”
ঘাট শ্রমিক ফরিদুল মোস্তফা বলেন, “৪ সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ৬ সদস্যের পরিবার। প্রতিদিন যা আয় করি তার অর্ধেক চলে যায় ব্যক্তিগত খরচে। বাকি অর্ধেক দিয়ে পুরো সংসার চালাতে হয়। জিনিসপত্রের যা দাম অর্ধেক আয় দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিন বেলা খাওয়াও কষ্ট।”
সফি মোল্লা নামের অপর এক শ্রমিক বলেন, “ভারী কাজ প্রতিদিন করা সম্ভব হয় না। সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া কাজ করতে গিয়ে অনেক শ্রমিক আহত হন। অনেকেই কর্মক্ষমতা হারায়। কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নাই। এছাড়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে অনেক সময় ঘাট বন্ধ থাকে। তখন কাজ থাকে না। এতে আমাদের অভাবের শেষ থাকে না।”
ঢাকা/ইভা