মাস্কের অর্থ ব্যয়ের পরও উইসকনসিনে হারলেন ট্রাম্প-সমর্থিত বিচারপতি
Published: 2nd, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ভোটাররা তাঁদের অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের জন্য একজন নতুন বিচারপতি বেছে নিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোট দিয়েছেন। এর নির্বাচনী প্রচারে এত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচনে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনে ৯ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। প্রার্থী, স্থানীয় দল ও বাইরের বিভিন্ন গ্রুপ এই অর্থ ব্যয় করছে। এদের মধ্যে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্কও আছেন।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইলন মাস্ক এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন রাজনৈতিক গ্রুপগুলো উইসকনসিনে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি নির্বাচনের প্রচারে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের বেশি ব্যয় করেছে।
উদারপন্থীদের পক্ষে কাউন্টি বিচারক সুসান ক্রফোর্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। রক্ষণশীলদের পক্ষে লড়েছেন অঙ্গরাজ্যের সাবেক রিপাবলিকান অ্যাটর্নি জেনারেল ব্র্যাড শিমেল। তিনিও কাউন্টি বিচারক।
উইসকনসিনের শীর্ষ আদালতে বিচারপতিদের মধ্যে বর্তমানে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন উদারপন্থীরা। তবে একজন উদারপন্থী বিচারক অবসর গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।
ট্রাম্প রক্ষণশীল প্রার্থী শিমেলকে সমর্থন দিয়েছেন। অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন।
গতকাল স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাধিকার ও ভোটের নিয়মকানুন কেমন হবে, তা নিয়ে উইকনসিনের শীর্ষ আদালত থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
অঙ্গরাজ্যটি ভবিষ্যতেও ভোটের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধের ময়দান হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১ শতাংশের কম পয়েন্ট ব্যবধানে উইসকনসিনে জিতেছিলেন ট্রাম্প। আর কোনো অঙ্গরাজ্যে জয়-পরাজয়ের ব্যবধান এতটা কম ছিল না।
এ ছাড়া, উইসকনসিনে গর্ভপাতের অধিকারের আইনি বৈধতা থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্তও অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত নেবেন। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে দেশব্যাপী নারীদের গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নেন। সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের সম্মিলিত দর-কষাকষির সুযোগ থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্তও আসতে পারে। রিপাবলিকান–সমর্থিত এক আইনে এই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল উইসকনসিনের ভোটার গ্যারি ক্রিস্টেনসন বলেছিলেন, তিনি শিমেলকে সমর্থন করবেন।
অবসরে যাওয়া এই ব্যক্তি আরও বলেন, যদি একজন উদারপন্থী সেখানে যান, তবে তাঁরা ট্রাম্পের সরকারি ব্যয় হ্রাসের উদ্যোগকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।
আরও পড়ুনঅক্টোবরের প্রথমার্ধে ট্রাম্পের প্রচারে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার দিয়েছেন মাস্ক২৫ অক্টোবর ২০২৪২৬ বছরের তরুণ ভোটার ওয়েস্ট রবার্টস ক্রফোর্ডকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ওই সব লোকজন যাঁরা ইলন মাস্ক অথবা অন্য ধনকুবেরদের সমর্থন করেন, তাঁদের চেয়ে সাধারণ মানুষকে সমর্থন জানানো অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পের পক্ষে ২৫ কোটি ডলারের বেশি ব্যয় করেছিলেন মাস্ক।
গতকালের ভোটের আগে মাস্ক স্বেচ্ছাসেবকদের শিমেলের পক্ষে একজন ভোটার নিয়ে আসার বিনিময়ে ২০ ডলার করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আর গতকাল ভোটের দিন তিনি ভোটারদের শিমেলের ছবি ধরে ‘থাম্বস আপ’ করে আছেন এমন যে কারও ছবি অনলাইনে পোস্ট করার বিনিময়ে ১০০ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
ডেমোক্র্যাটরা নির্বাচনী প্রচারে মাস্কের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন। ক্রফোর্ডের সমর্থকেরা জোর দিয়ে বলেছেন, নিশ্চয়ই ভোটের ফলাফলের সঙ্গে মাস্কের ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব চ রপত সমর থ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়াটি সচিব কমিটির মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের খসড়া তৈরি করেছে।
খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিশনের চেয়ারপারসন হবেন। সদস্য থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ; গ্রেড-২ পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা; পুলিশ একাডেমির একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ; আইন, অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের একজন কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক; ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন মানবাধিকারকর্মী।
আরও পড়ুনপুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে স্বাধীন কমিশন অপরিহার্য৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন।কমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। সদস্যরা যোগদানের দিন থেকে চার বছর নিজ নিজ পদে থাকবেন। মেয়াদ শেষে কোনো সদস্য আবার নিয়োগের যোগ্য হবেন না।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে—এই কমিশন যেকোনো কর্তৃপক্ষ বা সত্তাকে কোনো নির্দেশ দিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সত্তা অনধিক তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। তবে কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা হলে সে ক্ষেত্রে নির্দেশ বা সুপারিশ পাওয়ার অনধিক তিন মাসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যে নির্দেশ বা সুপারিশ পাঠাবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ বা সুপারিশ কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে জানাতে হবে।
আরও পড়ুনকোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি৯ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।এই কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে। খসড়া অধ্যাদেশে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির মনোনীত একজন সরকারদলীয় এবং একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বাছাই কমিটিতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম হওয়া ও বাছাই কমিটির বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
আরও পড়ুন‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা১৭ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ খসড়ায় কমিশন প্রতিষ্ঠা, কার্যালয়, সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ, কমিশনের সদস্য হওয়ার জন্য কারা অযোগ্য, সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ, পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন, পুলিশপ্রধান নিয়োগ, আইন-বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনমাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক’: আইজিপি১৭ ঘণ্টা আগে