ঢাকার কেরানীগঞ্জে ইডেন ফোম কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে কারখানায় আগুন লাগে। আগুনে কারখানার তিনটি মেশিন, বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল, ফোনসহ সরঞ্জাম পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ঈদের ছুটিতে কারখানা বন্ধ থাকায় হতাহত হয়নি।

মালিক পক্ষের দাবি, আগুনে কারখানার প্রায় ৪০-৪৫ লাখ, বাড়ির মালিকের ২০ লাখ এবং পাশের আরেকটি সাউন্ড সিস্টেমের দোকান পুড়ে যাওয়ায় আরো ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না বলে জানিয়েছেন কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার কাজল মিয়া।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরে হঠাৎ কারখানায় ধোঁয়া দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী ফায়ার সার্ভসে খবর দেয়। কারখানায় তালাবদ্ধ থাকায় এলাকাবাসী আগুন নেভাতে পারেনি। পরে কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটিসহ তিনটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সাউন্ড সিস্টেম দোকানের মালিক রমজান জানান, বহু কষ্টে ধারদেনা করে ব্যবসা বড় করেছেন। নিমিষেই সব শেষ। তিনি ফোম কারখানার মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

কারখানার মালিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল। লোকজন না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। আগুনে আমার ৪০-৪৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’’

কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার কাজল মিয়া জানান, এই কারখানার অনুমোদন ছিল না। বার বার সতর্ক করার পরও তারা কারখানা স্থানান্তর করেনি। তিনি ধারণা করেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

ঢাকা/শিপন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ