প্রচারে এগিয়ে জামায়াত, দুটি আসনে তৎপর বিএনপি
Published: 6th, April 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও খুলনায় ঈদকে কেন্দ্র করে জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে আগাম প্রচারে ব্যস্ত থেকেছেন জামায়াত নেতারা। রমজানজুড়ে ও ঈদে প্রতিটি আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা সক্রিয় ছিলেন।
বিএনপি নেতারা ব্যস্ত ছিলেন মূলত খুলনা-৩ ও ৪ আসনকে কেন্দ্র করে। কয়েকটি আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঈদে এলাকায় যাননি। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির তৎপরতাও তেমন চোখে পড়েনি। দলটির সংগঠকরা ওয়ার্ড পর্যায়ে কিছু পরিচিতি সভা করেছেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনে ৫৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তাদের বেশির ভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগের। জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দলের নেতারাও প্রার্থী হন। তাদের কেউই এখন মাঠে নেই। ওই নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা এখন সক্রিয়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি খুলনার ৬টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করে জামায়াত। পুরো রমজান মাস ও ঈদের সময় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা এলাকায় তৎপর ছিলেন। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা না আসায় বিএনপির সব নেতা এলাকায় সক্রিয় ছিলেন না। খুলনা-২ ও ৬ আসনে বিএনপির বর্তমান কমিটির কাউকে নির্বাচন নিয়ে জনসংযোগ করতে দেখা যায়নি। এলাকায় তাদের পক্ষে ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার-ফেস্টুনও ছিল না। ঈদের পর দিন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমেদের পক্ষে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা হয়। অন্য প্রার্থীদের তৎপরতা ছিল কম।
হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত খুলনা-১ আসনে বিগত সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতারা জয়ী হন। এ আসনে অতীতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমির এজাজ খান তৎপর রয়েছেন।
নানা বিতর্কে আহ্বায়ক পদ হারিয়ে তিনি কিছুটা চাপে থাকলেও ঈদকেন্দ্রিক নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় ছিলেন। আসনটিতে নতুন করে তৎপর হয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল। এ আসনে বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির শেখ আবু ইউসুফকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। তিনি এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। এদিকে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পাল্লি ডেভিড রাজু প্রার্থী হবেন শোনা গেলেও ঈদে তিনি এলাকায় যাননি। নির্বাচনী এলাকায় তাঁর পক্ষে তৎপরতাও চোখে পড়েনি।
খুলনা-২ আসনে অতীতে নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। পদ হারিয়ে তিনিও চাপে রয়েছেন। রমজান ও ঈদের সময় নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় ছিলেন তিনি। এ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি আলী আসগার লবী রমজানে ইফতার এবং ঈদে পোশাক ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। ঈদে তিনি এলাকায় যাননি। আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অন্য কাউকে প্রচার চালাতে দেখা যায়নি। কারও শুভেচ্ছা পোস্টার কিংবা ফেস্টুন চোখে পড়েনি।
তবে জনসংযোগে এগিয়ে রয়েছেন জামায়াতের প্রার্থী শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতে ঈদ শুভেচ্ছার ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে। ঈদের দিন ও পরদিন বিভিন্ন মসজিদে তাঁর পক্ষে ঈদ শুভেচ্ছার লিফলেট বিতরণ করা হয়। এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন তিনি।
খুলনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের প্রার্থিতা অনেকটা চূড়ান্ত বলে মনে করেন নেতারা। রোজা ও ঈদে এলাকায় সক্রিয় ছিলেন বকুল। তাঁর পক্ষে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা ইফতার, খাদ্যসামগ্রী ও পোশাক বিতরণ করেছেন। ঈদের আগ থেকে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে ব্যস্ত সময় কেটেছে তাঁর। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মহানগর আমির মাহফুজুর রহমান। তিনিও গণসংযোগ, মতবিনিময়, পথসভার মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন।
খুলনা-৪ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলালকে একক প্রার্থী হিসেবে দেখছেন নেতাকর্মীরা। রমজানের শুরু থেকে তাঁর পক্ষে ইফতারি বিতরণ, উপজেলা ও ইউনিয়নে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। ওমরাহ পালনে এবারের ঈদে তিনি সৌদি আরবে ছিলেন। গত ৩ এপ্রিল দেশে ফিরে এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা কবিরুল ইসলাম এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তাঁর পক্ষে এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টার, ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে।
খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার অনেক আগে থেকে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আসনটিতে প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছেন জেলা যুবদলের সভাপতি ইবাদুল হক রুবায়েত। তিনি এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
খুলনা-৬ আসনে বিএনপির একক কোনো প্রার্থীর তৎপরতা নেই। আসনটিতে প্রচারণায় এগিয়ে জামায়াতের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এলাকায় অন্য কারও পোস্টার-ফেস্টুন চোখে পড়েনি। সম্প্রতি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম কাগজী সক্রিয় হয়েছেন।
খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, নির্বাচনে তৎপরতার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এজন্য দলগতভাবে তাদের কোনো তৎপরতা নেই। যারা প্রচার চালাচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে তা করছেন।
খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইমরান হোসাইন বলেন, দলের সিদ্ধান্তেই নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। সব আসনেই কর্মীরা তাদের পক্ষে কাজ করছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক আহম্মেদ হামিম রাহাত বলেন, খুলনায় এনসিপির কমিটি হয়নি। কেন্দ্রের নির্দেশে তারা বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ঈদ শ ভ চ ছ র ব এনপ র স ল ইসল ম জনস য গ আসনট ত কর ছ ন এ আসন রমজ ন ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
বইছে নির্বাচনী হাওয়া, প্রচার–প্রচারণায় সরগরম শহর–গ্রাম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রচার–প্রচারণায় নেত্রকোনার পাঁচটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সব কটি আসনে ইতিমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রার্থী দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে এলাকায় নানাভাবে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও সক্রিয় রয়েছেন প্রচার-প্রচারণায়।
দলীয় নেতা–কর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা আর ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে চলেছেন। বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে থাকলেও তাঁদের ভোটারদের কাছে টানতে চেষ্টা করছে বড় দুটি দলই। অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি এখনো নিষ্ক্রিয়। বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে (সিপিবি) মাঝেমধ্যে কিছু কর্মসূচি করতে দেখা যায়।
নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর)
সীমান্তবর্তী এলাকার আসনটি সমতল, পাহাড় ও আংশিক হাওর এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। এর আগেও দুবার সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। অপেক্ষাকৃত তরুণ এই প্রার্থী গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকার মানুষকে চিকিৎসা সহায়তাসহ নানা জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কায়সার কামাল বলেন, ‘আমি জনগণের জন্য রাজনীতি করি। তাই জনকল্যাণমূলক কাজ করার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া এলাকার রাজনৈতিক পরিবেশ সুন্দর রাখার ব্যাপারেও আমি সব সময় সজাগ থাকি। আশা করি ভোটাররা এসব বিষয় নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।’
এখানে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা শাখার আমির আবুল হাসিম। তিনিও সভা-সমাবেশ এবং গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। এখানে সিপিবি থেকে প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দিবালোক সিংহ। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য খাইরুল বাশার ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে গোলাম রব্বানীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনীতি শুরু করা গোলাম রব্বানী ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হন। ২০০৬ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে পুনরায় জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। এবার তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।
নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা)
জেলা সদরের আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা কমিটির সভাপতি মো. আনোয়ারুল হক। এর আগেও বিএনপির মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আশরাফ উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ টি এম আবদুল বারীসহ অন্তত পাঁচজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
বিএনপি প্রার্থী ঘোষণার পর অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আনোয়ারুল হকের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করলেও এ টি এম আবদুল বারী এখনো নিজ মনোনয়নের অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটি প্রাথমিক মনোনয়ন, তাই চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
মো. আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আমি মনোনয়নের আগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয়। শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, চিকিৎসক হিসেবেও মানুষের পাশে থেকেছি। দলের দুঃসময়ে আহ্বায়কের দায়িত্বে থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছি। নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা আমার পক্ষে নিয়মিত মিছিল-সমাবেশ করে যাচ্ছেন।’
এখানে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের প্রার্থী এনামুল হক। তিনি জেলা জামায়াতের সাবেক আমির। জেলা জামায়াতের বর্তমান আমির ছাদেক আহমাদ হারিছ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী অহিংস ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী দল। জেলার পাঁচটি আসনেই গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। কাজেই জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
এ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান। গণ অধিকার পরিষদ থেকে কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, ইসলামী আন্দোলন থেকে আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রুহীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া)
আসনটিতে বিএনপি প্রার্থী করেছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম হিলালীকে। সাবেক ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম হিলালী আগেও একাধিকবার বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘দলের দুর্দিনে আমি জেলা কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন ছাড়াও নিজ নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থেকেছি। আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা খুশিমনে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম ছাড়াও এখানে বিএনপির মনোয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন।
আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী জেলা কমিটির শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য খায়রুল কবির নিয়োগী। এ ছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে আটপাড়া উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মাদ শামছুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে জাকির হোসেন সুলতানকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এনসিপির মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যবসায়ী ইফতেখার হোসেন সিদ্দিকী (শামীম)।
নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি)
হাওরবেষ্টিত তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আসনটি থেকে তিনি তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২০০৭ সাল থেকে তিনি কারাবন্দী ছিলেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত জানুয়ারিতে তিনি কারামুক্ত হন। এরপর এলাকায় ফিরে নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, ‘আমি সব সময় উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অতীতে এলাকার উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। ভবিষ্যতেও করব। এ ছাড়া শিশু-কিশোরদের ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ গঠন, সুশিক্ষা, বিশ্বাস ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখব।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক আল হেলাল তালুকদারও নিয়মিত গণসংযোগ চালাচ্ছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে মদন উপজেলার আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখলেছুর রহমান মনোনয়ন পেয়েছেন। সিপিবি থেকে প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রের প্রেসিডিয়াম সদস্য জলি তালুকদার।
নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা)
আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের পূর্বধলা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবু তাহের তালুকদার। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এখানে নেতা–কর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছেন। উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল আলম তালুকদার বলেন, আবু তাহের তালুকদার একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। তাঁর পক্ষে দলের নেতা-কর্মীরা এককাট্টা।
আবু তাহের তালুকদার বলেন, ‘আমি ফ্যাসিস্ট আমলেও দলের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকেছি। মামলা-হামলা, গুলি, ভাঙচুর ও হয়রানির শিকার হয়েছি। এ কারণে দলের নেতা-কর্মীরা আমার মনোনয়নে খুশি হয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’
আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরাও বসে নেই। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে তাঁরাও তৎপর। এখানে জামায়াতের প্রার্থী জেলা কমিটির সহকারী সেক্রেটারি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাসুম মোস্তফা। জামায়াত তাঁকে নিয়ে আশাবাদী। আসনটিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন থেকে প্রার্থী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সদস্য মুফতি হাবিবুল্লাহ খানকে।