জিতলেই রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকার সুযোগ। কিন্তু এমন ম্যাচে আটকে গেল বার্সেলোনা। গতকাল রাতে লা লিগায় নিজেদের মাঠে রিয়াল বেতিসের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে বার্সা। লিগ শিরোপার লড়াইয়ে রিয়াল ও বার্সার মধ্যে পার্থক্য এখন ৪ পয়েন্টের, যা বাকি আট ম্যাচের মধ্যে কমে আসা খুবই সম্ভব।

তাহলে কি ২০২৪-২৫ লা লিগা শিরোপার নিষ্পত্তি এল ক্লাসিকোই করে দেবে? এবারের লিগে রিয়াল-বার্সার একটি ম্যাচ এখনো বাকি। বার্সার জন্য ভালো দিক হচ্ছে, ম্যাচটি তাদেরই মাঠে। ১১ মে অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচে রিয়ালও মাঠে নামবে শিরোপা ধরে রাখার বড় প্রচেষ্টা নিয়েই।

গত রাতে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল রিয়ালেরও। তবে ঘরের মাঠে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যাওয়ায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের (৩০ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট)। তবে কয়েক ঘণ্টা পরই কার্লো আনচেলত্তির দলকে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেয় বেতিস। ৭ মিনিটে গাভি বার্সাকে এগিয়ে দিলেও ১৭ মিনিটে নাথান হেডে গোল করে যে সমতা আনেন, গোলকিপার আদ্রিয়ানের দৃঢ়তায় সেটি ধরে রেখেই তারা ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে (বার্সা ৩০ ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট)।

বার্সেলোনা ম্যাচে আক্রমণের ধার ও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করেও যে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। সেটি নিয়ে অবশ্য বড় খেদ নেই কোচ হানসি ফ্লিকের, ‘এক ম্যাচ কম খেলে এক পয়েন্টে এগিয়ে আছি (এই মুহূর্তে সমানসংখ্যক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে)। এটা ভালোই। প্রথমার্ধে বেশ কটি ভুল করেছি, আবার সুযোগও তৈরি করেছি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভালো খেলেছি। ফলটা ভালো করার চেষ্টা করেছি তখন।’

বার্সেলোনাকে এখন লিগ জেতার জন্য শেষ ৮ ম্যাচকেও ‘দ্বিতীয়ার্ধ’ হিসেবেই দেখতে হবে। বার্সা, রিয়াল দুই দলই ম্যাচ খেলেছে ৩০টি করে। যে ৮টি করে ম্যাচ বাকি দুই দলের, তাতে চারটি হোমে, চারটি অ্যাওয়ে। এর মধ্যে বার্সার প্রথম তিনটি অ্যাওয়ে প্রতিপক্ষ সহজ-লেগানেস, এস্পানিওল ও ভায়াদোলিদ। তিনটি দলই এই মুহূর্তে ১৫ নম্বরের পরে অবস্থান করছে। তবে ফ্লিকের দলের আসল চ্যালেঞ্জ হবে লিগের শেষ ম্যাচে। সেটি খেলতে হবে পয়েন্ট তালিকার চারে থাকা অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে গিয়ে। যে কারণে লিগের ৩৫তম ম্যাচে রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচের ফল বড় প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে।

রিয়ালও নিশ্চিতভাবে চোখ রাখবে এল ক্লাসিকোর দিকেই। সে ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিতে পারলে বার্সেলোনা অন্য কোনো ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ালেই কার্লো আনচেলত্তির দলের সামনে ট্রফি জয়ের সুযোগ এসে যাবে। বার্সেলোনা বাদে রিয়ালের যে তিনটি অ্যাওয়ে বাকি, সবই ১০ নম্বরের পরে থাকা দলের বিপক্ষে-আলাভেস, হেতাফে ও সেভিয়া।
লিগে রিয়ালের পরের ম্যাচ আলাভেসের মাঠে ১৩ এপ্রিল। তার আগে লেগানেসের মাঠে খেলতে যাবে বার্সেলোনা।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ