এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রধান শিক্ষকের পরামর্শ
Published: 7th, April 2025 GMT
প্রিয় এসএসসি পরীক্ষার্থী, তোমাদের জীবনে এটি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষার ফলাফল জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে। তাই এ পরীক্ষার প্রস্তুতি গুরুত্ব সহকারে নেবে।
পাঠ্যবই খুব ভালো করে পড়তে হবে। প্রতিটি বিষয়ের মূল বিষয়বস্তু যদি ভালো করে বুঝে নাও, জেনে নাও, তবে ভালো নম্বর পাবেই। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখে পড়বে এবং প্রস্তুতি নেবে। সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি অংশে পরীক্ষা হবে। সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি অংশে ভালো করতে হলে বিষয়টি অবশ্যই ভালোভাবে জানতে হবে। একটা কথা মনে রেখো, যা পড়েছ, তা-ই ভালো করে রিভিশন দাও। তবেই ভালো করতে পারবে। মনে আত্মবিশ্বাস রেখো।
* পরীক্ষার আগে
ইতোমধ্যে তোমরা প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা শেষ করেছ। প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যবইয়ের নির্ধারিত সিলেবাস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখবে। প্রতিটি বিষয়ের প্রতি সমান গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিটি বিষয়ে ভালো পরীক্ষা হলেই সামগ্রিক ফল ভালো হবে। নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখে পড়তে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে।
*সব বিষয়ের গুরুত্ব সমান
সব বিষয়ের ওপর সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক- এই তিনটি বিভাগের প্রতিটিরই আলাদা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যসূচির সঠিক ও পরিষ্কার ধারণা রাখা দরকার। ভাসা ভাসা ধারণা দিয়ে ভালো উত্তর লেখা যায় না। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর নিচে আন্ডারলাইন দিয়ে রাখলে রিভিশন দিতে সুবিধে হয়। মনেও থাকে বেশি।
*স্বাস্থ্য ঠিক রাখা
তোমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারা রাত জেগে পড়ার দরকার নেই। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়াও জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। সময়মতো খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। নির্দিষ্ট রুটিনমাফিক পড়াশোনা করলেই চলবে। অহেতুক দুশ্চিন্তা করা ঠিক হবে না। সব সময় প্রাণবন্ত থাকবে।
*পরীক্ষার আগের দিন করণীয়
তোমাদের নিশ্চয় জানা আছে, পরীক্ষার আগের দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমাদের হাতে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে। এগুলোর কিছু ফটোকপি করে রাখবে। প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড কখনো লেমিনেটিং করবে না। পরীক্ষার দিন কী কী সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করে রাখবে। যেমন প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মূল কপি, জ্যামিতি বক্স, তিন-চারটি কলম, পেনসিল, রাবার, ক্যালকুলেটর, লম্বা স্কেল, হাতঘড়ি ইত্যাদি পরীক্ষার উপকরণ প্রস্তুত করে রাখতে হবে। যেন পরের দিন এই নিয়ে ভাবতে না হয়। সব উপকরণ একটি স্বচ্ছ ফাইলে ভরে রাখবে। যে কলম দিয়ে দ্রুত লেখা যায় এমন কলমই ব্যবহার করবে। গণিত পরীক্ষার দিন তিন-চারটি পেনসিল আগে থেকেই মসৃণ করে রাখবে। নতুন শার্পনার ব্যবহার করবে। পরীক্ষার আগের দিন কোনো অবস্থাতেই বেশি রাত জাগবে না।
*পরীক্ষার দিন
পরীক্ষার প্রথম দিন কমপক্ষে সকাল ৯.
*পরীক্ষার আসনে বসে
পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে স্বাভাবিকভাবেই নির্দিষ্ট আসনে বসবে। নির্দিষ্ট সময়ে বহুনির্বাচনি পরীক্ষার জন্য ওএমআর শিট ও রচনামূলক পরীক্ষার উত্তরপত্র হাতে পাবে। উভয় উত্তরপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি লিখে অবশ্যই মিলিয়ে নিতে হবে। মিলিয়ে নেওয়ার পর খালি ঘরে যে ডিজিটটি লেখা হয়েছে তার নিচের সঠিক বৃত্তটি সাবধানতার সঙ্গে ভরাট করবে। কোনোরূপ তাড়াহুড়া করা ঠিক হবে না। সকল বৃত্ত অবশ্যই কালো বল পয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিক নিয়মে ভরাট করবে। কোনো কারণে বৃত্ত ভরাটে ভুল হয়ে গেলে দুশ্চিন্তা না করে সঠিক বৃত্তটি ভরাট করে দেবে। এ ক্ষেত্রে একই কলামে দুটি বৃত্ত ভরাট থাকবে। এতে কোনো সমস্যা হবে না। মনে রাখবে সঠিক ডিজিটের বৃত্তটি অবশ্যই ভরাট থাকতে হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই রচনামূলক উত্তরপত্রের প্রতিটি পৃষ্ঠার বামে এবং ওপরে মার্জিন করে নেবে। প্রতিদিন হাজিরা শিটে নির্দিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষার তারিখের পাশা নির্দিষ্ট স্থানে স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষরের ঘরে নিজের পূর্ণ নাম লিখলে ভালো হয়। প্রতিদিনের স্বাক্ষর একই রকম হতে হবে।
*পরীক্ষা শুরু হলে
প্রথমেই বহুনির্বাচনি প্রশ্ন হাতে পাবে। প্রশ্ন পাওয়ার পরপরই নির্দিষ্ট ঘরে সেট কোড লিখবে এবং ভরাট করবে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করবে, যাতে কোনোরূপ ভুল না হয়। বহুনির্বাচনি প্রশ্নে ৪টি উত্তর খুব কাছাকাছি থাকে। তাই বুঝে উত্তর করতে হবে। এ ছাড়া যেহেতু বিভিন্ন বিষয়ে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ১৫টি। কিন্তু প্রশ্ন থাকবে ২৫/৩০টি এবং সময় ২০ মিনিট। তাই প্রশ্ন বাছাই করতে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবে না।
সৃজনশীল প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর সব কটি প্রশ্ন ভালোভাবে পড়ে নেবে। যে প্রশ্নটি তোমার কাছে সহজ মনে হবে সেটির উত্তর আগে দেবে। প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য সম্পূর্ণ সময়কে পরিকল্পিতভাবে ভাগ করে নেবে।
*রিভিশন জরুরি
উত্তর লেখার পর রিভিশনের জন্য কিছু সময় হাতে রাখবে। রিভিশনের মাধ্যমে অনেক ভুলত্রুটি দূর হতে পারে। গণিতের ক্ষেত্রে রিভিশন অধিক জরুরি। এতে অনেক ভুলত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে অনেক নম্বর প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। অন্যান্য বিষয়েও রিভিশন দেওয়াটা নিশ্চিত করতে হবে।
*ওভার রাইটিং এড়াতে হবে
পরীক্ষার খাতায় কোনোরূপ উপরিলিখন বা ওভার রাইটিং করবে না। কোনো লেখা ভুল হলে এক টানে কেটে দেবে। বারবার কেটে সৌন্দর্যহানি ঘটাবে না। ওভার রাইটিংয়ে অনেক সময় পরীক্ষক বিরক্ত হতে পারেন। গণিতের ক্ষেত্রে ওভার রাইটিং করলে পরীক্ষকের সঠিক সংখ্যাটি বুঝতে অসুবিধে হয়। তাই ভুল সংখ্যাটি এক টানে কেটে দিয়ে সঠিক সংখ্যাটি পাশে লিখে দেবে। কখনো একাধিকবার কেটে সৌন্দর্য নষ্ট করবে না।
* পরীক্ষা শেষে
পরীক্ষা শেষ হলে প্রশ্ন নিয়ে বিশ্লেষণ করার দরকার নেই। কার কয়টি বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর সঠিক হয়েছে, কার কয়টি হয়নি- এসব নিয়ে একদমই মাথা ঘামাবেনা। কোন অঙ্কের উত্তর কত, কার কী কোথায় ভুল হয়েছে- এসব আলোচনা না করা ভালো। কারণ, এসব আলোচনার কারণে কখনো কখনো তোমার মন খারাপ হয়ে যেতে পারে, যার প্রভাব পরবর্তী পরীক্ষায় পড়তে পারে। তাই পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের হয়ে সোজা বাসায় চলে আসবে। হাত-মুখ ধোবে, খাওয়া-দাওয়া করবে এবং বিশ্রাম নেবে। তারপর পরবর্তী পরীক্ষার বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করবে।
প্রধান শিক্ষক,গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাইস্কুল,ঢাকা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ত র জন য প রব শ ট করব প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত এসএসসি প্রোগ্রামের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় ২০২৬-২০২৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভর্তির যোগ্যতা জেএসসি পাস হতে হবে। জেএসসি ছাড়াদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
ভর্তির দরকারি তারিখ—১. অনলাইনে ভর্তি এবং আবেদনের তারিখ শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৬।
২. অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের সনদবিহীন ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬।
৩. ওরিয়েন্টেশন ও টিউটোরিয়াল ক্লাস শুরু : ১৫ মে ২০২৬।
ভর্তির যোগ্যতা—১. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণ হতে হবে। (ভর্তির তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।
২. সরাসরি অনলাইন ভর্তির জন্য: osapsnew.bou.ac.bd
ভর্তির যোগ্যতা(জেএসসি ছাড়া) —১. যেসব শিক্ষার্থীর জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের সনদপত্র নেই তারাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, এ ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ন্যূনতম ১৪ বছর (৩১/১২/২০২৫ তারিখে)।
২. এসব আবেদনকারীকে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য বাউবি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. এ জন্য ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ফরম ফি বাবদ ৩০০ টাকা দিতে হবে।
৪. ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবণ্টন, তারিখ ও পরীক্ষা কেন্দ্র এবং প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি’র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে। (অনলাইনে আবেদনের তারিখ ০২/১১/২০২৫ থেকে ৩১/০১/২০২৬)।
প্রয়োজনীয় কাগজ যা লাগবে—১. দুই কপি ছবি।
২. জেএসসি বা জেডিসি বা অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় পাস বা উত্তীর্ণের সনদ।
৩. জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি।
ভর্তি ও অন্যান্য ফি—অনলাইন আবেদন ফি: ১০০ টাকা,
রেজিস্ট্রেশন ফি : ১০০ টাকা,
কোর্স ফি (প্রতি কোর্স ৫২৫ টাকা): ৩৬৭৫ টাকা,
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আবশ্যিক) ব্যবহারিক ফি: ১০০ টাকা,
একাডেমিক ক্যালেন্ডার ফি:৫ টাকা,
ডিজিটাল আইডি কার্ড ফি: ২০০ টাকা,
পরীক্ষা ফি (প্রতি কোর্স ৫০ টাকা) : ৩৫০ টাকা,
প্রথম বর্ষ নম্বরপত্র ফি : ৭০ টাকা,
মোট আবেদন ফি: ৪৬৯৬ টাকা।
বিজ্ঞান শাখার জন্য দুটি ব্যবহারিক কোর্সের জন্য অতিরিক্ত ২০০ টাকা জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. অষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাসের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নাম, পিতা ও মাতার নাম এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি প্রদত্ত সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী একই রকম হতে হবে।
২. জেএসসি বা জেডিসি পাসের ক্ষেত্রে জেএসসি বা জেডিসি সনদ অনুযায়ী হতে হবে। ২০২০ সাল কিংবা তার পরবর্তীতে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পাশ সনদে বা প্রমাণকে বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে। সনদবিহীনদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে।
৩. তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা কোর্স ফির শতকরা ৬০ ভাগ ছাড় পাবেন।
# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট